হিন্দি ভাষায় তৈরি ‘দ্য ডায়েরি অব ওয়েস্ট বেঙ্গল’ ছবি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে। ছবিটি গতকাল শুক্রবার পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা বাদে দেশব্যাপী মুক্তি পেয়েছে। এটি নির্মাণ করেছেন বলিউডের নির্মাতা সনোজ কুমার মিশ্র।
এমনিতে আর জি কর হাসপাতালে নারী চিকিৎসক ধর্ষণ-হত্যাকাণ্ড নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ এখন উত্তাল। সেখানে এই রাজ্য–সম্পর্কিত একটি চলচ্চিত্র নিয়ে তীব্র বিরোধিতার মুখে পড়েছেন ছবির নির্মাতারা। অভিযোগ, ছবিটি পশ্চিমবঙ্গকে হেয় করেছে।
তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র ও মিডিয়া কমিটির সদস্য কুণাল ঘোষ এ ছবি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলেছেন, ‘ছবিটি যেভাবে পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে কুৎসা রটাচ্ছে, তাতে টালিউড সেই কুৎসা খণ্ডনে এগিয়ে আসছে না কেন? কেন এই রাজ্যকে অপমান করে ছবিটি নির্মাণ করল?’ পাল্টা কুণাল ঘোষ দাবি করেছেন, টালিউডের এমন কোনো নির্মাতা নেই, যাঁরা এর পাল্টা ছবি নির্মাণ করতে পারেন?
কুণাল ঘোষ তাঁর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, ‘নিজেদের প্রয়োজনে কিছু শিল্পী মুখ্যমন্ত্রী মমতার পাশে থাকেন। ছবি তোলেন। কিন্তু শাসক দলের দুঃসময়ে তাঁরা বেপাত্তা! কুণাল প্রশ্ন তোলেন, ‘ডায়েরি অব ওয়েস্ট বেঙ্গল’–এর পাল্টা ছবি হবে না কেন? কুণাল পরোক্ষভাবে তাঁদের দলের সমর্থক নির্মাতাদের ‘সুবিধাবাদী’ বলতেও কুণ্ঠিত হননি।
এই কুণালের তিরে আরও বিদ্ধ হয়েছেন গায়ক অরিজিৎ সিংও। অরিজিৎ সিংয়ের আর জি করের ঘটনার আলোকে তৈরি গান নিয়ে কুণাল প্রশ্ন তুলে বলেছেন, মহারাষ্ট্র, উত্তর প্রদেশ ও দিল্লির ঘটনার পর কেন হিন্দিতে গান বাঁধা হয় না?
যদিও কুণালের এসব দাবির পর পরিচালক হরনাথ চক্রবর্তী জবাব দিয়ে বলেছেন, ২০০১ সালে মমতাকে নিয়ে তো তিনি ‘প্রতিবাদ’ ছবি তৈরি করেছেন। সিঙ্গুরের নন্দীগ্রাম আন্দোলনের সময় ‘তুলকালাম’ ছবি তৈরি করেছেন। নেহাল দত্ত নির্মাণ করেছেন ‘বাঘিনী’। তাই এ নিয়ে প্রশ্ন কেন? এই ছবি কতটুকু প্রভাব ফেলবে পশ্চিমবঙ্গে? এখানে তো এই ছবি মুক্তিই পায়নি।
এর আগে বিবেক অগ্নিহোত্রীর ‘দ্য কাশ্মীর ফাইলস’ বা সুদীপ্ত সেনের ‘দ্য কেরালা স্টোরি’ কতটুকু প্রভাব ফেলেছে? আর কুণাল ঘোষের এই বক্তব্যের পর টালিউডের শিল্পীদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
কুণাল ঘোষ মনে করেছেন, তাঁদের দলের এত শিল্পী, পরিচালক, প্রযোজক পশ্চিমবঙ্গ নিয়ে ছবি বানাবেন, মমতাকে নিয়ে ছবি বানাবেন, বায়োপিক তৈরি করবেন, কার্যত সেভাবে এখন আর কেউ এগিয়ে আসছেন না, বরং আর জি কর–কাণ্ড নিয়ে তৃণমূল ঘরানার শিল্পী, পরিচালকেরা বরং মুখে কুলুপ এঁটে আছেন, নয়তো তীব্র আন্দোলনের মুখে অধিকাংশই মমতার সমর্থনে মুখ খুলতে পারছেন না।