ঋতুপর্ণ ঘোষের সিনেমা দিয়ে নতুন করে পাওয়া যায় অভিনেত্রী রাইমা সেনকে। এরপর কৌশিক গাঙ্গুলি, অতনু ঘোষ, সৃজিত মুখার্জি, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়সহ পশ্চিমবঙ্গের প্রায় সব প্রথম সারির পরিচালকের সিনেমাতেই অভিনয় করেন তিনি। ২০১২ থেকে ২০১৬ পর্যন্ত অনেকগুলো বাংলা সিনেমায় দেখা যায় তাঁকে। এরপর ধীর ধীরে অভিনয় কমিয়ে দেন। এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, নিজেকে নতুনভাবে হাজির করতেই এ বিরতি। রাইমার এই বিরতি যে ছিল হিন্দি সিনেমা ও সিরিজে কাজের জন্য, সেটা বোঝা যায় পরে। গত কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি হিন্দি সিনেমা ও সিরিজে কাজ করেছেন তিনি। কিছুদিন আগে নেটফ্লিক্সের ‘মাই’ সিরিজে এক ধূসর চরিত্রে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। সম্প্রতি মারাঠি ছবির আঙিনায় পা রেখেছেন রাইমা। প্রস্তুতি নিচ্ছেন তামিল ছবিতে কাজ করারও। এ ছাড়া একাধিক হিন্দি প্রকল্প ঝুলিতে আছে।
ক্যারিয়ারের এই ‘দ্বিতীয় অধ্যায়’ উপভোগ করলেও একটা সময় ‘সেন’ পদবির জন্য কতটা সমালোচিত হতে হয়েছে, সেটা ভোলেননি রাইমা। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে অভিনেত্রী জানিয়েছেন সেটাই। রাইমা মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের নাতনি ও অভিনেত্রী মুনমুন সেনের মেয়ে। আর এই সেন পদবির জন্য তাঁকে বারবার শুনতে হয়েছে ‘স্বজনপ্রীতি’ নিয়ে প্রশ্ন। এ প্রসঙ্গে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে রাইমা বলেন, ‘তারকা সন্তান হওয়ায় আমার প্রতি মানুষের প্রচুর আশা ছিল। এমনকি অনেকে আমাকে জাজ করতে শুরু করেছিল। আমাকে নিয়ে সমালোচনা, উপহাসও করত। অনেকে মনে করত, আমাকে সবকিছু জানতে হবে। একজন তারকা সন্তানের শুরুটা অত্যন্ত কঠিন। চলচ্চিত্র পরিবারের বাইরের কেউ যখন অভিনয় শুরু করে, তখন তার ওপর কোনো বোঝা থাকে না। কিন্তু একজন তারকার সন্তান যখন ক্যারিয়ার শুরু করে, তখন তাকে নানাভাবে বিচার করা হয়। দিদিমা সুচিত্রা সেন এক বিশাল লেগ্যাসি রেখে গেছেন। আমার সঞ্জয় লীলা বানসালির ছবির দিয়ে অভিষেক হয়নি। তাই শুরুতে এটা ভাঙা কঠিন ছিল।’
১৯৯৯ সালে শাবানা আজমির সঙ্গে ‘গডমাদার’ ছবির মাধ্যমে অভিষেক হয় রাইমার। অভিষেক ছবির প্রসঙ্গে এই তারকা কন্যা বলেন, ‘ওই সিনেমা আমার অভিষেকের জন্য সঠিক ছবি ছিল না। পরে বেশ কিছু শৈল্পিক ঘরানার ছবিতে অভিনয় করেছিলাম। প্রচুর স্ক্রিন টেস্ট ও অডিশন দিয়েছি। একাধিকবার আমাকে ছবি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’
তবে এসব আশীর্বাদ হিসেবেই দেখেন অভিনেত্রী, ‘অনেক সংগ্রাম ও কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। যখন পেছনে ফিরে তাকাই, তখন মনে হয়, এই সবকিছু আমার জন্য আশীর্বাদ ছিল। কারণ, এসব থেকে অনেক কিছু শিখেছি। অভিনেতা হিসেবে আমার কোনো তথাকথিত প্রশিক্ষণ ছিল না। আমার জীবনের বাস্তব অভিজ্ঞতা থেকেই শিখেছি।’