বিকেলে শপথ, থাকছেন না জায়েদ–মিশা প্যানেলের অনেকে

মিশা–জায়েদ পরিষদ
ছবি: সংগৃহীত

গতকাল শনিবারের ঘোষণা অনুযায়ী আজ রোববার বিকেল ৫টায় শপথ নেওয়ার কথা নির্বাচিত বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নেতাদের। এফডিসির জহির রায়হান মিলনায়তনে সেভাবেই সব আয়োজন চলছে। শোনা যাচ্ছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা হারুন বাদে শপথে উপস্থিত থাকবেন দুজন নির্বাচন কমিশনার ও আপিল বিভাগের সদস্যরা। এত সব আয়োজনের শপথ অনুষ্ঠানে থাকছেন না মিশা-জায়েদ প্যানেলের অনেকেই।

মিশা-জায়েদ প্যানেলের কেউ কেউ জানেনই না আজ শপথ অনুষ্ঠান। কেউ আবার এভাবে তাড়াহুড়ো করে শপথ আয়োজনকে ভিন্নভাবে দেখছেন। দুজন অভিনয়শিল্পী শপথে অংশ না নিলেও শুভকামনা জানিয়েছেন ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ পরিষদকে। জায়েদ-মিশা প্যানেলের সহসভাপতি রুবেল, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক জয় চৌধুরী ও কার্যনির্বাহী সদস্য অঞ্জনা, আলীরাজ, নাম প্রকাশ না করা একজন নির্বাচিত অভিনয়শিল্পী ও আপিল বিভাগের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

সহসভাপতি পদে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন চিত্রনায়ক রুবেল

সহসভাপতি পদে বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হয়েছেন চিত্রনায়ক রুবেল। তাঁর কাছে আজকের শপথ আশ্চর্যজনক মনে হয়েছে। কীভাবে একজন সাধারণ সম্পাদক বিজয়ী হলেন, কখন, কীভাবে, হঠাৎ করেই শপথের আয়োজন—এসব নিয়ে কিছুই জানেন না তিনি। এ অভিনেতা বলেন, ‘আমি একজন নির্বাচিত সহসভাপতি। একজন সাংবাদিকের কাছে মাত্র শুনলাম আজ শপথ। আমি কি অভিনেতা হিসেবে এতটাই ফেলনা? আমাকে কেউ জানানোর প্রয়োজন মনে করল না, যাই না–যাই সেটা পরের ব্যাপার। আমি এসব কাদা ছোড়াছুড়ির মধ্যে নেই। আমি শপথে যাচ্ছি না।’

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ কার্যনির্বাহী সংসদের কার্যকরী সদস্য পদে নির্বাচিত অভিনেত্রী অঞ্জনা বলেন, ‘আমার একার বলার কিছু নেই। আমাদের প্যানেলের সিদ্ধান্তেই আমরা থাকব। তবে আজ আমি যাচ্ছি না। আমাদের সিদ্ধান্তের একটা ব্যাপার আছে। এত বছর ধরে আমরা একসঙ্গে আছি, এখন নতুন করে অনেক কিছু হচ্ছে, শিল্পী সমিতির সঙ্গে সব সময় আছি। আমরা সময় নিয়েই সবাইকে পরে সিদ্ধান্ত জানাব।’ আপনাদের প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল ও নিপুণকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সাধারণ সম্পাদক ঘোষণা করা হয়েছে, এটাকে কীভাবে দেখছেন? এমন প্রশ্নে অঞ্জনা বলেন, ‘এই নিয়ে আমার একার কোনো মন্তব্য নেই। আমরা মিটিং করে সর্ব সিদ্ধান্তক্রমে জানাব। তবে আমার বিপরীত প্যানেলের যাঁরা নির্বাচিত হয়েছেন, সবার জন্য শুভকামনা রইল। ইন্ডাস্ট্রির ভালোর জন্য আমরা সবাই এক। এটি একটি পরিবার। এ পরিবারের ভালোর জন্য যা করতে হয়, আমরা করব।’

চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ কার্যনির্বাহী সংসদের কার্যকরী সদস্য পদে নির্বাচিত অভিনেত্রী অঞ্জনা

একটি ব্যক্তিগত কাজে আটকা পড়েছেন কার্যকরী সদস্য পদে নির্বাচিত আলীরাজ। আজ শপথ অনুষ্ঠানে আসার জন্য তাঁকে সভাপতি ইলিয়াস কাঞ্চন ফোন দিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যক্তিগত কাজ থাকায় তিনি যেতে পারছেন না। আজ শপথ না নিলেও পরে শপথ নেবেন কি না, এমন প্রশ্নে আলীরাজ বলেন, ‘আমাদের শপথ পড়ান সমিতির সভাপতি সাহেব। যেকোনো দিন তাঁর কাছ থেকে শপথ নিয়ে নেব।’ আপনি একাই শপথ নেবেন, নাকি প্যানেল থেকে এ ব্যাপারে কারও সঙ্গে কথা হয়েছে? ‘আমি একটি প্যানেলে ছিলাম। তাঁদের সঙ্গেই আমাকে থাকতে হবে। আলাদা করে কিছু করা উচিত হবে না। আর এভাবে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করাকে আমার কাছে বোধগম্য মনে হচ্ছে না। কীভাবে কী হলো, কিছুই বুঝলাম না। সময় আছে, দেখা যাক কী হয়।’—বলেন আলীরাজ
শুটিংয়ে এফডিসিতেই রয়েছেন জয় চৌধুরী। তিনি মিশা-জায়েদ প্যানেলের আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক পদে জয়ী। তিনি বলেন, ‘আমি যাচ্ছি না। আমার সিনিয়ররা যে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই আমি মেনে নেব। এতটুকু জানি, আমাদের প্যানেল থেকে কেউই শপথে যাচ্ছেন না। শুনেছি, সিনিয়ররা সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক ও অন্যান্য বিষয়ে কথা বলবেন। এর আগে এসব প্রসঙ্গে আমি কিছুই বলতে পারছি না।’ নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন নির্বাচিত অভিনেতা বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক পদে জয়ী জায়েদ খানকে এভাবে বাদ দিয়ে আরেকজনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষণার বিষয়টি গোলমেলে মনে হচ্ছে। আমি এই ঝামেলার মধ্যে যেতে চাই না।’

সংবাদ সম্মেলনে সোহানুর রহমান সোহান, নিপুণ ও অন্যরা

গতকাল আপিল বিভাগের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান সংবাদ সম্মেলনে জানান, জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। একই সঙ্গে শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক পদে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিপুণকে নির্বাচিত ঘোষণা করেন। তখনই তিনি জানান, আজ বিকেল ৫টায় শপথ অনুষ্ঠান। আপিল বিভাগের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান বলেন, ‘আজ শপথ অনুষ্ঠান। বিকেল ৫টায় শপথ পড়ানো শুরু হবে। আমাদের নির্বাচনের দুজন কমিশনার ও আপিল বিভাগের সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন। কে শপথ পড়াবেন, এটা এখনই জানাতে চাইছি না।’ জায়েদ মিশা প্যানেলের কয়েকজন অভিনেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তাঁরা নির্বাচনের শপথ অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন না। এ ব্যাপারে আপনাদের কোনো মন্তব্য আছে? প্রথম আলোর এমন প্রশ্নে সোহান বলেন, ‘শোনা কথায় আমি কান দিতে চাই না। কেউ না থাকলে না থাকবে। তবে আমার বিশ্বাস, ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণদের মতো তাঁরাও সবাই শপথে আসবেন।’