চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির এবারের নির্বাচন ঘিরে গঠিত আপিল বোর্ড চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান ও সদস্য মোহাম্মদ হোসেন এফডিসির বাগানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছিলেন। তাঁরা এবারের শিল্পী সমিতির নির্বাচন ঘিরে সৃষ্ট জটিলতা নিয়ে প্রাপ্ত তথ্য–উপাত্ত বিশ্লেষণ শেষে নতুন করে সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন। অনিয়মের অভিযোগে জায়েদ খানের প্রার্থিতা বাতিল করে সোহান জানালেন, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিপুণই হলেন চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক। এ সময় পাশেই বসে ছিলেন নিপুণ। বিজয়ী ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কেঁদে ফেলেন নিপুণ। বলেন, সত্যের জয় হয়েছে।
গত ২৮ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত শিল্পী সমিতির নির্বাচনের দিন দুপুর থেকেই সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী নিপুণ আরেক সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী জায়েদ খানের বিরুদ্ধে অনিয়ম আর ভোট কেনার অভিযোগ করেন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুন এসব অভিযোগ আমলে না নিয়ে জায়েদ খানকে জয়ী ঘোষণা করেন। সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীর জয় মেনে না নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করে জায়েদের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ তুলে ধরেন নিপুণ। এরপর এবারের শিল্পী সমিতির নির্বাচনের অনিয়মের তথ্য–উপাত্ত পৌঁছে যায় আপিল বোর্ড হয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ে। মন্ত্রণালয় বিষয়টি আপিল বোর্ডের মাধ্যমে সমাধানের পরামর্শ দেয়। আজ শনিবার সন্ধ্যায় আপিল বোর্ড দুই পক্ষকে ডেকেছিল। নিপুণ আপিল বোর্ডের ডাকে সাড়া দিলেও জায়েদ খান হাজির হননি। অভিযোগ ‘প্রমাণ’ হওয়ায় জায়েদ খানের সম্পাদক পদ বাতিল ঘোষণা করে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে বিজয়ী ঘোষণা করা হলো নিপুণকে। একই অভিযোগে আপিল বোর্ড সদস্য পদপ্রার্থী চুন্নুর প্রার্থিতা বাতিল করে নাদির খানকে নির্বাচিত ঘোষণা করেছে।
আপিল বোর্ডের সভা শেষে সোহানুর রহমান সোহান বলেন, নির্বাচন কমিশনার পীরজাদা শহীদুল হারুণ পক্ষপাতদুষ্ট। সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী জায়েদ খান ও সদস্য পদপ্রার্থী চুন্নু তাঁদের ভোট দেওয়ার জন্য নগদ অর্থ প্রদান করেছেন। এ ছাড়া বেশ কয়েকজন সদস্য তাঁদের টাকা প্রদানের বিষয়টি মৌখিকভাবে স্বীকার করেছেন। অভিযোগ তদন্ত করে প্রমাণ পাওয়ায় তাঁদের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছে। অপর ১৬৩ ভোট পাওয়া সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী নিপুণ আক্তারকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত ঘোষণা করা হলো।
ঘোষণার পর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় কান্নাজড়িত কণ্ঠে নিপুণ আক্তার বলেন, ‘সত্যের জয় হয়েছে। আমার কাছে অনেক প্রমাণ ছিল। আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছি। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন। যেন শিল্পীদের পাশে থেকে কাজ করতে পারি।’
গত বুধবার আপিল বোর্ডের চেয়ারম্যান সোহানুর রহমান সোহান নিপুণের অভিযোগ আমলে নিয়ে দিকনির্দেশনা চেয়ে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর চিঠি দিয়েছিলেন। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, নির্বাচনে আপিল বোর্ড চূড়ান্ত ক্ষমতাপ্রাপ্ত, বর্ণিত প্রার্থী দুজনের বিষয়ে প্রাপ্ত অভিযোগগুলো আমলে নিয়ে নির্বাচনী আচরণবিধি মতে ব্যবস্থা গ্রহণ করে নিবন্ধনকারী কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে।