পশ্চিমবঙ্গে ভারতের সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনে ২০১৯ সালে উত্তর চব্বিশ পরগনার বসিরহাট লোকসভা আসনে জিতেছিলেন তৃণমূল প্রার্থী ও কলকাতার অভিনেত্রী নুসরাত জাহান। কিন্তু জয়ের পর থেকে মানুষ তাঁকে এলাকায় না পেয়ে ক্ষুব্ধ। এই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটেছে। সোমবার ভোরে এলাকার অনেক জায়গায় নিখোঁজ সাংসদ নুসরাত জাহানের সন্ধান চেয়ে পোস্টারে লেখা হয়েছে, ‘বসিরহাটের এমপি নুসরত জাহান নিখোঁজ: সন্ধান চাই।’ পোস্টারের নিচে কোথাও লেখা তৃণমূল কংগ্রেস, কোনটায় প্রতারিত জনগণ, আবার কোনোটায় লেখা এলাকার জনগণ।
গতকাল সকালে বসিরহাট লোকসভা কেন্দ্রের চাঁপাতলা পঞ্চায়েত এলাকার সর্বত্র এ পোস্টার দেখা যায়। তৃণমূলের নেতা–কর্মীরা পোস্টারগুলো দেখামাত্র ছিঁড়ে ফেলেছেন। এলাকাবাসী গতকাল বলেছেন, সাংসদ হওয়ার পর তাঁরা নুসরাত জাহানকে একবারও দেখেননি। তাই তাঁরা মনে করছেন, নুসরাত জাহান কোথায়ও হারিয়ে গেছেন। সন্ধান পাওয়ার জন্য এলাকার একশ্রেণির মানুষ এই পোস্টার লাগিয়েছেন। গ্রামের লোকজন এ কথাও বলছেন, পোস্টারের কথাগুলো অক্ষরে অক্ষরে সঠিক। সাংসদ হওয়ার পর নুসরাত এলাকায় আসেননি। এলাকার মানুষ তাঁকে দেখেননি, চেনেনও না। তাই এলাকার অনেকেই পোস্টরটির সমর্থন করছেন।
এই পোস্টার নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি এলাকার বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি পলাশ সরকার। তিনি বলেছেন, ‘সাংসদ এখন টিকটক আর সিনেমার পর্দায় রয়েছেন। এবার তিনি অন্তরাল থেকে বেরিয়ে এসে মানুষের জন্য কাজ করুন। আসলে তৃণমূলের এই সাংসদের অস্তিত্ব হারিয়ে গেছে।’ এলাকার সিপিএম নেতা ইমতিয়াজ হোসেন বলেছেন, ‘জনগণ নুসরাত জাহানকে ভোট দিয়ে প্রতারিত হয়েছেন। তিনি এলাকার কোনো উন্নয়ন করেননি। তাঁকে এলাকার মানুষ দেখতেই পায়নি। এরই প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ ব্যক্তিরা এই পোস্টার লাগিয়েছে। আর প্রকারান্তরে সাংসদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিচ্ছেন।’
চাঁপাতলা পঞ্চায়েতের প্রধান হুমায়ুন রেজা চৌধুরী বলেছেন, ‘২০০৯ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত এই কেন্দ্রের সাংসদ ছিলেন তৃণমূলের হাজি নুরুল ইসলাম। তাঁর আমলে এই এলাকায় উন্নয়ন হয়েছে। এলাকার মানুষ সাংসদের সঙ্গে মিলে এলাকার উন্নয়নে জন্য কাজ করেছেন। কিন্তু বর্তমান সাংসদ এলাকার উন্নয়নের জন্য সেভাবে কোনো কাজ করেননি, এগিয়েও আসেননি। ফলে মানুষের মধ্যে সাংসদকে নিয়ে ক্ষোভ বেড়েছে।’ তবু তিনি বলেছেন, ‘এসব পোস্টার লাগানোর পেছনে রয়েছে বিরোধীদের হাত।’