ঋতুপর্ণ ঘোষের খুব কাছের মানুষ ছিলের অভিনেত্রী, পরিচালিকা অপর্ণা সেন। তাই তো অপর্ণার বড় মেয়ে ডোনার বিয়েতে বরের বাড়িতে তত্ত্ব পাঠানোর জন্য যেসব ডালা সাজানো হয়েছিল, তার প্রতিটার জন্য আলাদা করে ছড়া লিখে দিয়েছিলেন ঋতুপর্ণ ঘোষ। পরিচালকের জন্মদিনে এখানে তাঁর লেখা সেই সব ছড়ার কয়েকটি তুলে ধরা হলো।
১. তুঁতে রঙের বেনারসি, সাদা রঙের পাড়ে
সোনার বরন কল্কা করা—অপূর্ব বাহারে!
তিন কোনা এক রুমাল আছে, শাড়ির ভাঁজে রাখা
সাদা সুতির রুমাল, তার এক কোণে ফুল আঁকা
২. বাদলা কাজের শিফন শাড়ি, পিচ ফলের রং
ব্লাউজ আছে পাড়বসানো—ভিন্ন রকম ঢং।
সাদা রুমালটিতে কেমন গোলাপি রঙের কাজ।
সব মিলিয়ে দারুণ হবে নতুন কনের সাজ।
৩. তুঁতে রঙের রাজকোট, তার গোলাপ রঙের পাড়,
রং মেলানো ব্লাউজ সাথে, কেমন চমৎকার!
টিপের পাতা সাজিয়ে দিলাম তুঁতে শাড়ির ভাঁজে,
সারা জীবন করবে আলো দুটি ভুরুর মাঝে।
৪. ঘিয়েরঙা ঢাকাই শাড়ি, লালরঙা তার পাড়।
জরির ছোঁয়ায় সাজটি যেন লক্ষ্মীপ্রতিমার।
টুকটুকে লাল ব্লাউজ আছে, রং মিলিয়ে কেমন!
লক্ষ্মী সাথে আপনি এলেন মা লক্ষ্মীর বাহন।
৫. বেগুনি রঙের রেশম শাড়ি, সম্বলপুর থেকে
টুকটুকে লাল রং রয়েছে, আঁচল পাড়ে ঢেকে
ব্লাউজ আছে, সঙ্গে আছে চুড়ির গোছা
ষোলো রং মিলিয়ে পরবে বলে সঙ্গে দেওয়া হলো।
৬. টুকটুকে রং চিকন শাড়ি পরবে মোদের মেয়ে
গোলাপি রং ফুলে ফুলে থাকবে শরীর ছেয়ে।
সেই রঙেরই চোলি, মেয়ের রূপ করে ঝলমল
কাঠের সিঁদুরকৌটো দিলাম, কপালে জ্বলজ্বল।
৭. নকশা করা তোয়ালেটা পাতা ডালার মাঝে
চুকরি ভরা প্রসাধনী লাগবে কনের সাজে।
নিরা রিচি, ক্রোয়ি, তাদের জগৎজোড়া নাম
এসব ভেবে সাজিয়ে কনের সঙ্গে পাঠালাম।
৮. জোব্বা পরা ফ্যাশন এখন, কাফতান তার নাম
আগাগোড়া আরশি ঢাকা তিনটে পাঠালাম
দুখানি তার কলমকারি রংবাহারি কাজে।
অন্যটিতে আয়না দেওয়া, সাদা—বুকের মাঝে।