‘রক অ্যান্ড রিদম ৪.০: রেজারেকশন অব ব্ল্যাক’ কনসার্টে পুরোনো লাইনআপে হাজির হয়েছিল ব্ল্যাক
‘রক অ্যান্ড রিদম ৪.০: রেজারেকশন অব ব্ল্যাক’ কনসার্টে পুরোনো লাইনআপে হাজির হয়েছিল ব্ল্যাক

এডভেন্টরের ‘রেজারেকশন অব ব্ল্যাক’ কনসার্টে অব্যবস্থাপনা, দর্শকদের ক্ষোভ

গাঁটের পয়সা খরচ করে কনসার্টে গিয়ে ভোগান্তি নিয়ে ফিরেছেন বহু দর্শক। গতকাল শুক্রবার রাতে ঢাকার আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার এক্সপো জোনে ‘রক অ্যান্ড রিদম ৪.০: রেজারেকশন অব ব্ল্যাক’ কনসার্ট আয়োজন করেছেন এডভেন্টর কমিউনিকেশনস।

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, টিকিট ছাড়াই শত শত দর্শক ভেন্যুতে ঢুকে পড়েন। এতে নিরাপত্তা ছিল ঢিলেঢালা। ধারণক্ষমতার বেশি দর্শক ঢুকে পড়ায় নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছিল।

‘প্রচণ্ড ভিড়, ঠেলাঠেলি, দেখার কেউ নেই। কোনো ভলান্টিয়ার নেই। কোনো লাইন নেই। ধাক্কাধাক্কি, গুঁতাগুঁতি, লাঠির বাড়ির হুমকি, মেয়েদের অসহায়ত্ব, একটু পরপর এদিক থেকে ওদিকে পিলোপাসিংয়ের মতো ঠেলাঠেলি।’ কনসার্টের অভিজ্ঞতা ফেসবুকে লিখেছেন গিটারিস্ট এহসান রহমান।

জিয়ার ভাষ্যে, ‘এডভেন্টর কমিউনিকেশনস স্টেজ, সাউন্ড, স্ক্রিন মানেজমেন্ট, ফুড, এন্ট্রি, সেইফটি সিকিউরিটি, ভিআইপি টিকিট, প্রায় সব ক্ষেত্রেই যা যা করেছে, তা এক কথায় “প্রতারণা”। নিজেদের গুডউইল তৈরির সম্ভাবনাটা অঙ্কুরে নিজেরাই নষ্ট করল ওরা।’

আয়েশা ফেরদৌস নামের এক দর্শক ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আপনারা যদি ফ্রিতেই দর্শকদের ভেন্যুতে ঢোকার সুযোগ দেন তাহলে আমরা টিকিট কিনলাম কেন?’ লামিয়া ইসলাম নামের আরেক দর্শক লিখেছেন, ‘ভিড়ের কারণে ভেতরে টিকতে পারিনি। ফলে কনসার্ট শেষ হওয়ার আগেই বাধ্য হয়ে বের হয়ে গেছি।’

ধারণক্ষমতার বেশি দর্শক ঢুকে পড়ায় নিরাপত্তা নিয়েও শঙ্কা তৈরি হয়েছিল

অব্যবস্থাপনার অভিযোগ তুলে কনসার্টের আয়োজন প্রতিষ্ঠান এডভেন্টর কমিউনিকেশনসকে বয়কটের ডাক দিয়েছেন অনেকে। আরেক দর্শক সামিউল আলম লিখেছেন, ‘আমি খুব বেশি কিছু বলব না। আজকের এই হাইভোল্টেজ কনসার্টে কী হয়েছে, কমবেশি সবাই বলেছেন। শুধু এইটাই বলব যে একজন সংগীতপ্রেমী হিসেবে এডভেন্টরের ইভেন্ট এড়িয়ে যাওয়া কিংবা বয়কট করা উচিত। আমি আর কোনো দিন তাঁদের কনসার্টে যাব না।’

‘বাংলাদেশে হয়তো এগুলো নিয়ে সঠিক আইনগত কাঠামো নেই। কিন্তু টিকিট বিক্রি করে পরে গেট ওপেন করে দেওয়ার জন্য প্রতারণার মামলার মুখে পড়ার কথা ছিল আয়োজকদের, যাঁরা টিকিট কাটলেন, আয়োজকেরা সবাইকে আক্ষরিক অর্থেই ঠকাইলেন।’, ফেসবুকে লিখেছেন আরেক দর্শক।

কনসার্টের ভেন্যুতে মারামারির ঘটনার ভিডিও এসেছে প্রথম আলোর কাছে। ধারণক্ষমতার বেশি দর্শকের চাপে অনেকের দম বন্ধ হওয়ার মতো পরিস্থতি তৈরি হয়েছিল বলেও অভিযোগ করেছেন।

আয়োজকেরা কী বলছেন

দর্শকদের অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে এডভেন্টর কমিউনিকেশনসের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে প্রথম আলো। আজ শনিবার দুপুরে পাঠানো এক বিবৃতিতে প্রতিষ্ঠানটি লিখেছে, ‘বিকাল ৫টার পর একসঙ্গে প্রায় ১ হাজার টিকিটবিহীন তরুণ আমাদের সিকিউরিটি চেকিং গেটে হামলা করেন। পর্যাপ্ত পরিমাণ সিকিউরিটি থাকা সত্ত্বেও এত পরিমাণ মানুষ একসঙ্গে গেটে হামলা করায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।’

এডভেন্টর কমিউনিকেশনস লিখেছে, ‘আমরা পুলিশ, এলিট ফোর্স, এবং আমাদের কর্মীদের দ্বারা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করি। এতে আমাদের অনেক কর্মী বাজেভাবে আহত হন। যাঁরা আমাদের কনসার্টে টিকিট কেটে অংশগ্রহণ করেছিলেন, তাঁদের কাছে আমরা দুঃখ প্রকাশ করছি।’