চট্টগ্রাম, সিলেট এবং খুলনার স্থানীয় ভাষায় গাওয়া গান ‘মুড়ির টিন’ দিয়ে শুরু হলো কোক স্টুডিও বাংলার দ্বিতীয় মৌসুম। গতকাল দেশের ছয়টি স্থানে বিশেষ স্ক্রিনিংয়ের মাধ্যমে নতুন মৌসুমের প্রথম গানটি প্রকাশ করে তারা।
বিশেষ প্রদর্শনীর একটি হয় রাজধানীর রবীন্দ্রসরোবরে। অনুষ্ঠান শুরুর অনেক আগে থেকেই রবীন্দ্রসরোবর লোকে লোকারণ্য। কোক স্টুডিও যে তরুণদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, তরুণ–তরুণীদের এই ঢল দেখেই তা বোঝা গেছে। প্রথম মৌসুমের ১১টি গানের ম্যাশআপের সঙ্গে নাচের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। উপস্থিত ছিলেন কোক স্টুডিও বাংলার সংগীত প্রযোজক শায়ান চৌধুরী অর্ণব ও সংগীতশিল্পী প্রীতম হাসান। এ ছাড়া ঢাকার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রামের সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং (সিআরবি) এলাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস, খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এবং সিলেটের হজরত শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (সাস্ট) উদ্বোধনী প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।
১২টি গান দিয়ে সাজানো হয়েছে দ্বিতীয় মৌসুম। বছরজুড়ে বিভিন্ন সময়ে গানগুলো প্রকাশ করা হবে। প্রথম মৌসুমে প্রতিটি গানেই দুজন শিল্পী ছিলেন। কিন্তু এই মৌসুমের একেকটি গান করবেন একাধিক শিল্পী। প্রথম গানেই কণ্ঠ দিয়েছেন তিন শিল্পী পল্লব, তৌফিক আহমেদ ও রিয়াদ হাসান। কোক স্টুডিও বাংলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এবং বাংলাদেশের মানুষের সব আঞ্চলিক ভাষাকে সম্মান জানানোর উদ্দেশ্যে ফেব্রুয়ারি মাসে এই গান প্রচার করা হচ্ছে। এই মৌসুমে দর্শক-শ্রোতাদের বৈচিত্র্যময় নতুন সব গান উপহার দেওয়াই কোক স্টুডিও বাংলার লক্ষ্য।
লোকাল বাসের আরেক নাম ‘মুড়ির টিন’। প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর এই গানে উঠে এসেছে জ্যামে আটকে পড়া তরুণদের গল্প। অর্ণব বলেন, ‘“মুড়ির টিন” খুব মজাদার ও প্রাণবন্ত গান। এমন একটি গান দিয়েই আমরা দ্বিতীয় মৌসুম শুরু করতে চেয়েছি।
তরুণ, প্রতিভাবান এসব শিল্পীর সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা ছিল চমৎকার। আশা করি দর্শক–শ্রোতা গানটি পছন্দ করবেন এবং বছরজুড়ে আমাদের সঙ্গেই থাকবেন।’
গানটির চট্টগ্রাম অংশের শিল্পী রিয়াদ হাসান বলেন, ‘কোক স্টুডিও বাংলায় অংশ নেওয়া আমার জন্য একটা স্বপ্নের মতো। আশা করি গানটি অনেক দিন ধরে মানুষের মুখে মুখে থাকবে।’ খুলনা অংশের শিল্পী তৌফিক আহমেদ বলেন, নতুন মৌসুম শুরুর করার জন্য ‘মুড়ির টিন’–এর মতো চমৎকার গান আর হয় না। সিলেট অংশের শিল্পী পল্লব বলেন, ‘কোক স্টুডিওর মতো বড় একটি প্লাটফর্মে সিলেট ও সিলেটি ভাষাকে সবার সামনে তুলে ধরার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। এই গানের সুর সবার মনে দোলা দিয়ে যাবে বলে আশা করি।’
গত বছর ‘একলা চলো’ গান দিয়ে পথচলা শুরু করে কোক স্টুডিও বাংলা। আর দ্বিতীয় গান ‘নাসেক নাসেক’ দিয়ে সাড়া ফেলে দেয় তারা, পুরো দেশে জনপ্রিয়তা পায় কোক স্টুডিও বাংলা। বছরজুড়ে বিভিন্ন গানের সঙ্গে বৈচিত্র্যময় সুর ও বাদ্যযন্ত্রের ফিউশনে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে তারা। গত মৌসুমের সবচেয়ে জনপ্রিয় গান ছিল নিগার সুমী আর জালালী সেটের ‘ভবের পাগল’। গানটি ইউটিউবে দুই কোটিবারের বেশি শোনা হয়েছিল।