ঢাকার হাতিরঝিলের অ্যাম্ফিথিয়েটারে ‘গণজোয়ার’ কনসার্টের ঘোষণা দিয়েছিল আয়োজক প্রতিষ্ঠান ম্যাভিক্স গ্লোবাল। অনুষ্ঠানের আগে ভেন্যু পরিবর্তনের কথা জানায় আয়োজক প্রতিষ্ঠান। জানা যায়, হাতিরঝিলের অ্যাম্ফিথিয়েটার নয়, কনসার্টটি হবে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর মিলনায়তনে। এতে পারফর্ম করার কথা ছিল ব্যান্ড নেমেসিস, ক্রিপটিক ফেইট, অ্যাভয়েড রাফা, বে অব বেঙ্গল, কাকতাল, কনক্লুশনসহ আরও অনেকে। কিন্তু অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হলে পণ্ড হয় আয়োজন। এক ফেসবুক পোস্টে এমনটাই জানিয়েছেন ব্যান্ড নেমেসিসের জোহাদ রোজা চৌধুরী।
নেমেসিস ব্যান্ড প্রতিষ্ঠার ২৫ বছর পার করছে। দেশ-বিদেশের অনেক মঞ্চে গান পরিবেশন করেছে ব্যান্ডটি। কিন্তু গতকাল শুক্রবার যে ঘটনার মুখোমুখি হয়েছে ব্যান্ডটি, তেমনটা পেশাদার সংগীতে ঘটেনি বলে জানায় তারা। গণজোয়ার কনসার্টে পারফর্ম করার কথা ছিল নেমেসিস, ক্রিপটিক ফেইট, অ্যাভয়েড রাফা, বে অব বেঙ্গল, কাকতাল, কনক্লুশনসহ আরও কয়েকটি ব্যান্ডের।
‘গণজোয়ার’-এর আয়োজন করছে ম্যাভিক্স গ্লোবাল। আয়োজকেরা আগে জানিয়েছিল, শিক্ষার্থীদের বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বৈরশাসকের পতন, আকস্মিক বন্যাসহ নানা ঘটনায় কঠিন সময় পার করছে দেশবাসী। সংগত কারণেই সংগীতের বড় কোনো আয়োজন এত দিন সম্ভব হয়নি। মাঝে যে কয়েকটি কনসার্ট হয়েছে, তা বানভাসি মানুষদের ত্রাণ সংগ্রহ ও পুনর্বাসনের জন্য। আশার কথা হলো, এখন দেশের পরিস্থিতি স্বাভাবিক। মানুষের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। সব মিলিয়ে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন নিয়ে সংগীতপিপাসুদের জন্য তারা এই কনসার্টের আয়োজন করেছে।
রকপ্রেমীদের কাছে ‘গণজোয়ার’ একটি স্মরণীয় আয়োজন হয়ে থাকবে বলেও আশা প্রকাশ করেছিল তারা। কিন্তু জোহাদের কথায় জানা গেল, শেষ পর্যন্ত তা আর সম্ভব হয়নি।
জোহাদ তাঁর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘আজকের কনসার্ট ভালোই হচ্ছিল। ক্রিপটিক ফেইট স্টেজে, হঠাৎ করে ২০-৩০ জনের দল মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে যায়। তারপর কী হলো, আপনারা বুঝতেই পারছেন। কনসার্টটি বাতিল হলে গেল। আমরা নেমেসিস, অ্যাভয়েড রাফা শোতে পারফর্ম করতে পারলাম না।’
এর আগেও একাধিক কনসার্টে এমন ঘটনা ঘটেছে। তাই প্রশ্ন রেখে সেসব ঘটনার কথা উল্লেখ করে জোহাদ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘বিগত বেশ কয়েকটি কনসার্টে এই একটি জিনিসই হচ্ছে। এরা কারা? এরা কি আসলেই গান শুনতে আসে নাকি খুবই পূর্বপরিকল্পনা করে শো পণ্ড করতে কর্মকাণ্ড চালায়?’
আয়োজক ও আগত ব্যক্তিদের প্রসঙ্গ টেনে জোহাদ লিখেছেন, ‘খুব খারাপ লাগছে আয়োজকদের জন্য, তারা যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছিল যেন এ রকম কিছু না ঘটে। খারাপ লাগছে তাদের জন্য, যারা টিকিট কেটে শোটি উপভোগ করছিল।’
সবশেষে জোহাদ বিস্ময় প্রকাশ করে লিখেছেন, ‘এটা কী শুরু হলো? ২৫ বছর ধরে গানবাজনা করছি, জীবনে এ রকম কোনো অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হইনি। আর এই ২০২৪-এ এসে এসব অভিজ্ঞতা হচ্ছে? সবচেয়ে দুঃখজনক আর হতাশার ব্যাপার হচ্ছে যে যারা এগুলো করছে, করে পার পেয়ে যাচ্ছে। কোনো ধরনের প্রতিকার নেই। সামনে কী হবে জানি না, তবে এটা জানি যে খুব তাড়াতাড়ি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে হবে। আজ কনসার্টে হামলা দিচ্ছে, কাল যেকোনো আয়োজনে হামলা দিতে পারে। বাংলাদেশের জনগণ গানপাগল, আমরা একটা খুব ভালো করে জানি, এই দেশে গান কখনো থামবে না।’