বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরুর দিকে শিক্ষার্থী হত্যা এবং নির্যাতনের প্রতিবাদে একটি গান লিখেছিলেন গায়ক হায়দার হোসেন। গানটি লিখেও সে সময় প্রকাশ করতে পারেননি গুণী এই সংগীতশিল্পী, সুরকার ও গীতিকার। যেদিন গানটি প্রকাশ করতে চেয়েছিলেন, সেদিন ছিল উত্তাল জুলাইয়ের ১৮ তারিখ। দেশজুড়ে বন্ধ হয়ে যায় ইন্টারনেট–সেবা। জারি হয় কারফিউ।
ছাত্র আন্দোলনের উত্তপ্ত সেই সময়ে অপ্রকাশিত থাকলেও সম্প্রতি প্রতিবাদী এই গান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট করেছেন শিল্পী। শিরোনাম ‘আমি লিখতে চাহিনি’।
ক্যাপশনে গায়ক লিখেছেন, ‘গানটি আমি লিখেছিলাম কোটা সংস্কার আন্দোলনের জন্য এবং ১৮ জুলাই আপলোড করার উদ্দেশ্যে; কিন্তু পোস্ট করার আগমুহূর্তে ইন্টারনেট বন্ধ হয়ে যায়। অনেকের অনুরোধে গানটি আবার আপলোড করলাম।’
গানের কথাগুলো এমন—‘আমি বলতে চাহিনি/ তবু বলতে হয়/ আমি লিখতে চাহিনি/ তবু লিখতে হয়/ এতগুলো প্রাণ ঝরে গেল/ বিবেক কেমনে নির্বাক রয়?’—এই গানটি প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গেই লুফে নিয়েছেন ভক্ত-অনুরাগীরা। এখন পর্যন্ত গানের ভিউ ৩.৭ মিলিয়ন। গায়কের প্রশংসায় ভরে উঠেছে মন্তব্যের ঘর।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর আরও একটি নতুন গান প্রকাশ করেছেন এই শিল্পী। গানের শিরোনাম ‘বিজয় উল্লাস’। এই গানেও প্রশংসাবার্তায় ভাসছেন হায়দার হোসেন।
উইনিং ব্যান্ডের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হায়দার হোসেনের লেখা ‘মন কী যে চায় বলো’ গানটি আজও শ্রোতাদের রোমাঞ্চিত করে। তিনি যেমন এই ব্যান্ডের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা, তেমনি দলের নামটাও তাঁর দেওয়া। হায়দার হোসেন বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে একজন প্রকৌশলী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৭৯ সাল থেকে তিনি সংগীত পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত।
সুরকার আলম খানের সঙ্গে গিটার বাজাতেন এবং এরপর পপসম্রাট আজম খানের সঙ্গে কাজ করতেন। একসময় হায়দার হোসেন নিজেই বেশ খ্যাতি পান। তাঁর গাওয়া তুমুল জনপ্রিয় গানের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘৩০ বছর পরেও আমি স্বাধীনতাটাকে খুঁজছি’, ‘আমি ফাঁইসা গেছি’ ইত্যাদি। কিছুদিন আগেই অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন এ গায়ক। হৃদ্যন্ত্রের জটিলতা নিয়ে ঢাকার ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশে ভর্তি ছিলেন তিনি। তিন দিন চিকিৎসা নিয়ে ২৬ জুন বুধবার সকালে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র নিয়ে বাসায় ফিরেছেন তিনি।