ষাটের দশক থেকেই গণসংগীত করে আসছিলেন তিনি। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ছিলেন ফকির আলমগীর। গান গাওয়ার পাশাপাশি বংশীবাদক হিসেবে তাঁর খ্যাতি ছিল। বাংলাদেশের সব ঐতিহাসিক আন্দোলনে তিনি তাঁর গান দিয়ে মানুষকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছেন। তিনি শুধু গণসংগীত নয়, গেয়েছেন পপ ও আধুনিক গানও। গানে, সংগ্রামে বর্ণাঢ্য জীবন ফেলে ২০২১ সালের আজকের দিনে মারা গেছেন গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীর। আজ এই গুণী শিল্পীর তৃতীয় প্রয়াণদিবস।
মৃত্যুর পর প্রতিবছর ফকির আলমগীরকে স্মরণ করে তাঁর গড়া ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠী। আজও কথা-গানে ফকির আলমগীরকে স্মরণ ও ফকির আলমগীর স্মৃতিপদক প্রদান অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করেছিল ঋষিজ। তবে শেষ পর্যন্ত অনুষ্ঠানটি স্থগিত করা হয়েছে বলে জানালেন ফকির আলমগীরের ছোট ভাই ফকির সিরাজ। তিনি বলেন, ‘এবার আমরা বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আসাদুজ্জামান নূরকে পদক প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছি। তবে শেষ পর্যন্ত আজকে আমরা অনুষ্ঠানটি করতে পারিনিা। শিগগিরই অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করে আমরা পদক বিতরণ করব। কথা–গানে আমাদের প্রিয় মানুষটিকে স্মরণ করব। আজ পারিবারিক উদ্যোগে ঘরোয়া আয়োজনে তাঁকে স্মরণ করা হয়েছে।’
অন্যায়, অবিচার ও শোষণের বিরুদ্ধে ফকির আলমগীরের কণ্ঠ বরাবরই ছিল সোচ্চার। মানুষ ও মানবতার কথা তিনি ছড়িয়ে দিয়েছেন চারদিকে। তাঁর গাওয়া অসংখ্য গানের মধ্য থেকে কিছু গান জয় করে নিয়েছে শ্রোতাদের মন। ফকির আলমগীরের গাওয়া ‘সান্তাহার জংশনে দেখা’, ‘বনমালী তুমি’, ‘কালো কালো মানুষের দেশে’, ‘মায়ের একধার দুধের দাম’, ‘আহা রে কাল্লু মাতব্বর’, ‘ও জুলেখা’সহ বেশ কিছু গান দারুণ জনপ্রিয়তা পায়। গানের পাশাপাশি নিয়মিত লেখালেখিও করতেন তিনি। তাঁর লেখা মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ও বিজয়ের গান, গণসংগীতের অতীত ও বর্তমান, আমার কথা, যাঁরা আছেন হৃদয়পটেসহ বেশ কয়েকটি বই প্রকাশিত হয়েছে।