শাফিনকে কবরে শোয়াতে দেখে জ্ঞান হারালেন তাঁর ছেলে

শাফিন আহমেদ ও তাঁর ছেলে আজরাফ আহমেদ
সংগৃহীত

জানাজার আগে বাবা এ দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড তারকা শাফিন আহমেদের মরদেহের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন ছেলে আজরাফ আহমেদ। চাচা হামিন আহমেদের পাশে দাঁড়িয়ে উপস্থিত সবার সামনে কথাও বলেছিলেন। কারও কোনো চাওয়া–পাওয়া থাকলে সেটা যেন তাঁকে বা তাঁদের পরিবারকে জানানো হয়। ছেলে হয়ে বাবার শেষযাত্রার সবকিছু সুন্দরভাবে সামলে নিচ্ছিলেন। কাউকে কিছু বুঝতে দিচ্ছিলেন না, বাবার জন্য কতটা রক্তক্ষরণ হয়েছে তাঁর হৃদয়ে। এভাবে বাবা তাঁদের একা করে দিয়ে যাবেন, ভাবতেও পারেননি। তাই তো বাবাকে কবরে সমাহিত করার সময়টা যেন আর সহ্য করতে পারেননি। জ্ঞান হারান। কবরস্থানে সবাই ঘাবড়ে যান। এরপর দ্রুত ঢাকার গুলশানের একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে তাঁকে।

শাফিন আহমেদ

জানা গেছে, বাবার হঠাৎ মৃত্যু স্বাভাবিকভাবে নিতে পারেননি আজরাফ। কয় দিন ধরে স্বাভাবিক ছিলেন না। কান্নাকাটি করেছেন। আবার স্বাভাবিক থাকার চেষ্টাও করেছেন। কিন্তু আজ যখন বাবাকে চিরদিনের জন্য কবরে সমাহিত করা হচ্ছিল, তা আর মেনে নিতে পারছিলেন না। মাত্রাতিরিক্ত মানসিক আঘাতে জ্ঞান হারান। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে জানা গেছে, হাসপাতালে আজরাফের অবস্থা এখন স্বাভাবিক আছে। সবার কাছে শাফিন আহমেদ ও তাঁর পরিবারের সবার জন্য দোয়া কামনা করা হয়েছে।

শাফিন আহমেদ ও হামিন আহমেদ

গুলশান আজাদ মসজিদে শাফিন আহমেদের মরদেহ আজ মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১২টায় আনা হয়। এরপর বেলা দুইটা পর্যন্ত সেখানে রাখা হয়। জানাজা শেষে সবার শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য কিছু সময় শাফিনের মরদেহ রাখা হয়। পুরো সময়টায় আজরাফ সবকিছু সামলে নিচ্ছিলেন। গাড়ির গ্লাসে বারবার বাবাকে দেখছিলেনও। এরপর বাবাকে বহনকারী গাড়ির পিছু পিছু বনানী কবরস্থানে যান পরিবারের সবাই।

২৫ জুলাই বাংলাদেশ সময় সকালে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার হাসপাতালে মারা যান শাফিন আহমেদ। যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে চার দিনের মাথায় গতকাল সোমবার শাফিনের মরদেহ বহনকারী উড়োজাহাজ ঢাকায় পৌঁছায়। এরপর তাঁর মরদেহ গুলশানে রাখা হয়। দুপুরে গুলশান আজাদ মসজিদে মরদেহ আনা হলে একে একে হাজির হন তাঁর স্বজন ও সহকর্মীরা।

শাফিনের মরদেহ দেখতে আসা স্বজন ও সহকর্মীরা একটা কথাই বলছিলেন, এমন তো কোনো বয়স ছিল না শাফিন আহমেদের। মাত্র ৬৩ বছর। যেভাবে সংগীতাঙ্গনের মেধাবীরা বিদায় নিচ্ছেন, তাতে তো বিরাট শূন্যতা তৈরি হচ্ছে। শাফিনের বড় ভাই ও মাইলস ব্যান্ডের সদস্য হামিন আহমেদ বললেন, ‘নিজের ব্যাপারে একটু বেশি উদাসীন ছিল। মনমর্জিতে চলত। নিজের প্রতি আরেকটু যত্নবান হলেও পারত।’