সংগীতশিল্পী হাসান আবিদুর রেজা জুয়েল ও আইয়ুব বাচ্চুর ছিল ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক। জুয়েলের প্রথম অ্যালবাম প্রকাশের সঙ্গে আছে আইয়ুব বাচ্চুর যোগও। বাংলাভিশনের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘আমার আমি’তে এ প্রসঙ্গে কথা বলেছিলেন জুয়েল নিজেই। সেই অনুষ্ঠানে জুয়েলের সঙ্গে হাজির ছিলেন আইয়ুব বাচ্চুও।
জুয়েল বলেন, ‘আমি ঢাকার বাইরে বরিশাল থাকতাম। কখনো ভাবিনি আমার গান রেকর্ড হবে, অ্যালবাম বের হবে। ১৯৮৬ সাল থেকে আমি যখন ঢাকায় থাকতে শুরু করি, আমার বন্ধু আবৃত্তিকার শিমুল মোস্তফা প্রথম বলে, “তোর একটা অ্যালবাম বের করা উচিত।” আমি বললাম, আমাকে আর কে ডাকবে! তখন ও বলল, একজন ভদ্রলোক আছেন, আজিজুর রহমান কচি, তাঁর কাছে তোকে নিয়ে যাব। উনি তোর গান শুনলেই রাজি হবেন।’
অ্যালবাম বের করবেন এমন ধারণা না থাকলেও গান নিয়ে স্বপ্ন দেখতেন জুয়েল। তিনি যখন কলেজে পড়েন, তখন তপন চৌধুরীর একটা অ্যালবাম বের হয়, যেটির সংগীত পরিচালক ছিলেন আইয়ুব বাচ্চু। কলেজ থেকে ফেরার পর জুয়েল অ্যালবামটি জোরে জোরে ছাড়তেন, আর বিরহকাতর হয়ে যেতেন।
আমি তো তখন আর নাই। তারকাদের সম্পর্কে আমাদের যে ধারণা, তাঁকে দেখে তা ভেঙে গেল। তিনি খুবই সাধারণ। একসঙ্গে খেতে বসে তিনি আমাকে সহজ করে দিলেনহাসান আবিদুর রেজা জুয়েল
পরের ঘটনা জানা যাক জুয়েলের ভাষ্যেই, ‘তখন স্বপ্ন দেখতাম, যদি কোনো দিন আমার অ্যালবাম হয়, তাহলে এক ভদ্রলোকের কাছে যাব, সেটা আইয়ুব বাচ্চু। ঢাকায় যখন শিমুল অ্যালবামের কথা বলল, তখন বললাম, অ্যালবাম করলে একজনের কাছেই যেতে হবে, সেটা আইয়ুব বাচ্চু।’
পরে এক বন্ধুর সূত্রে এক দুপুরে আইয়ুব বাচ্চুর বাসায় হাজির হলেন জুয়েল। এরপর কী হয়? সাক্ষাৎকারে সংগীতশিল্পী বলেছিলেন, ‘বাচ্চু ভাই একটা গিটার তুলে বললেন, গাও।’
জুয়েলের এ কথা শুনে পাশে বসা আইয়ুব বাচ্চু বলেন, ‘গাওয়ার আগে ওকে বলেছিলাম, তুমি কি খেয়েছ?’ জুয়েল না বলায় তাঁকে নিয়ে খেতে যান বাচ্চু। একসঙ্গে দুজন ভাত খেয়ে এরপর গান শুরু করেন।
যাঁকে আদর্শ মানেন, প্রথম সাক্ষাৎকারেই তাঁর সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজ, কেমন অনুভূতি হয়েছিল? জুয়েল বলেছিলেন, ‘আমি তো তখন আর নাই। তারকাদের সম্পর্কে আমাদের যে ধারণা, তাঁকে দেখে তা ভেঙে গেল। তিনি খুবই সাধারণ। একসঙ্গে খেতে বসে তিনি আমাকে সহজ করে দিলেন।’
এরপর আইয়ুব বাচ্চুর সুর করা তপন চৌধুরীর গাওয়া ‘আমার গল্প শোনাই’ গানটি গেয়ে শোনান জুয়েল।
গানটি শুনে অবাক হয়ে যান আইয়ুব বাচ্চু। ‘আমার আমি’ অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘আমি শুনে তো অবাক। কারণ, গান তোলা খুব কঠিন ছিল। ও মুখটা গাওয়ার বলি, থাম। আর শোনার দরকার নাই।’
এভাবেই প্রথম অ্যালবাম রেকর্ডের দরজা খুলে যায় জুয়েলের।