অস্কারজয়ী সুরকার, সংগীতশিল্পী এ আর রাহমানের বিরুদ্ধে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ‘কারার ঐ লৌহ-কবাট’ গানে সুর বিকৃতির অভিযোগ তুলেছে নজরুল পরিবার। গানটি প্রকাশের পর নজরুল পরিবারের সঙ্গে নজরুলসংগীতের শিল্পী, গবেষকেরাও সোচ্চার হয়েছেন। কেউ কেউ বলছেন, গানটি সরিয়ে নিয়ে এ আর রাহমানকে ক্ষমা চাইতে হবে।
বিষয়টি নিয়ে গত শুক্রবার সকালে এক লাইভে কথা বলেছেন ভারতীয় সংগীতশিল্পী কবীর সুমন। তিনি বলেছেন, এ আর রাহমানকে ক্ষমা চাইতে হবে না; একটা জাতির সংগ্রামের সঙ্গে গানটা জড়িয়ে আছে—এই ইতিহাস তাঁকে কেউ জানাক।
কাজী নজরুল ইসলামের পুত্রবধূ কল্যাণী কাজীর অনুমতি নিয়ে রাজা কৃষ্ণ মেনন পরিচালিত ‘পিপ্পা’ ছবিতে গানটি ব্যবহৃত হয়েছে। গান প্রকাশের পর নজরুল পরিবার বলছে, গানে নতুন করে সুরারোপের অনুমতি দেয়নি তারা।
কবীর সুমন বলছেন, ‘এ আর রাহমানকে যাঁরা গানের লিরিক দিলেন, টাকা নিশ্চয়ই পেয়েছেন। উনি (এ আর রাহমান) হিন্দির পাশাপাশি অসমিয়া ভাষাতেও সুর করেছেন, বাংলা তো তাঁর কাছে নস্যি। গানের মানে তাঁকে কেউ বলেননি? কিংবা উনিও জানতে চাননি?’ প্রশ্ন তুলেছেন কবীর সুমন।
এটি মূলত কবিতা, ইংরেজ শাসনের বিরোধিতার কবিতাটি রচনা করেন কাজী নজরুল ইসলাম। পরে এতে সুর দেন তিনি। ‘কারার ঐ লৌহ-কবাট’ গানটি ভাঙার গান বইয়ে প্রকাশিত হয় ১৯২৪ সালে। প্রকাশের পরপর ১৯২৪ সালের ১১ নভেম্বর ব্রিটিশ সরকার ভাঙার গান নিষিদ্ধ করে। পরবর্তীকালে স্বাধীন ভারতে ‘ভাঙার গান’ কবিতাটি আবার প্রকাশিত হয়।
গানটির ইতিহাস এ আর রাহমানকে জানানোর অনুরোধ করেন কবীর সুমন, এর দায়ভারটা বাংলাদেশিদের ওপরই তুলে দিলেন তিনি। কবীর সুমন বলেন, ‘যে দেশ কাজী নজরুল ইসলামকে জাতীয় কবির মর্যাদা দিয়েছে, তারা ওনার সঙ্গে অ্যাপয়েনমেন্ট করুক। ওনাকে বলুক, গানটার সুর এইভাবে এসেছে। আমি প্রাণপণে চাইব, বাংলাদেশ থেকে একটা পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
এ আর রাহমানের সংগীতায়োজনে ‘কারার ঐ লৌহ-কবাট’ গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন একাধিক ভারতীয় বাঙালি গায়ক। তাঁদের মধ্যে আছেন তীর্থ ভট্টাচার্য, রাহুল দত্ত, পীযূষ দাস, শালিনী মুখোপাধ্যায় প্রমুখ।