২০০৯ সালে অস্কার জিতেছিল ‘স্লামডগ মিলিয়নিয়ার’ ছবির ‘জয় হো’ গানটি। গানটির সংগীত পরিচালক হিসেবে সেবার অস্কার হাতে তুলেছিলেন সংগীত পরিচালক এ আর রাহমান। ১৪ বছর পর দ্বিতীয় ভারতীয় গান ‘নাটু নাটু’, যা ‘সেরা মৌলিক গান’ বিভাগে অস্কার পেল।
এ কথা বললে ভুল হবে না, আজ সোমবার সকালে (বাংলাদেশ সময়) নিশ্চয়ই বহু ভারতীয় অপেক্ষা করে বসেছিলেন টেলিভিশনের সামনে, মুঠোফোন হাতে নিয়ে। গোল্ডেন গ্লোবস অ্যাওয়ার্ডস-এর মঞ্চে বাজিমাত করার পর প্রত্যাশার পরিমাণ বেড়ে গিয়েছিল আগে থেকে। রাজামৌলির ‘আরআরআর’-এ হিট গান ‘নাটু নাটু’ কি পাবে অস্কার? সমালোচকদের বড় অংশ ধরেই নিয়েছিলেন শেষ পর্যন্ত নাটুর ঝুড়িতে লেগেও যেতে পারে। অপেক্ষার মধুর অবসান—রিয়ানা, লেডি গাগাদের হারিয়ে ‘নাটু নাটু’ জিতেছে পুরস্কার। সেরা গানের জন্য অস্কার উঠেছে দুই শিল্পীর হাতে, এমএম কিরাবানি ও চন্দ্রবোস।
আবারও অস্কারের ইতিহাসে ভারতীয় নাম। এক লহমায় বদলে গেল চিত্র, বলিউড বনাম দক্ষিণী সিনেমার তরজা ভুলে গোটা ভারতীয় বিনোদন দুনিয়ায় তো আনন্দের জোয়ার। খোদ সে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও শুভেচ্ছা জানালেন। মোদি টুইটারে লেখেন, ‘ব্যতিক্রমী! “নাটু নাটু”র জনপ্রিয়তা বিশ্বব্যাপী। এটি এমন একটি গান, যা সামনের অনেক বছর মনে থাকবে। অভিনন্দন সংশ্লিষ্ট সবাইকে, মর্যাদাপূর্ণ সম্মানের জন্য। ভারত উচ্ছ্বসিত ও গর্বিত।’
এম এম কিরাবানি বেশ পরিচিত। গুগলে সার্চ করলেও বিস্তর তথ্য মেলে। কিন্তু সে অর্থে জনপ্রিয় নন চন্দ্রবোস, খুব বেশি তথ্যও পাওয়া যায় না। আর সেই কারণেই তাঁর সম্পর্কে খোঁজ নিচ্ছেন ভারতের বহু মানুষ। ভারতীয় গণমাধ্যম হিন্দুস্থান টাইমস সূত্রে পাওয়া গেল বেশ কিছু তথ্য।
মূলত গায়ক হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার শুরু করেন চন্দ্রবোস। তেলেগু ছবিতেই কাজ করেছেন তিনি। ১৯৯৫ সালে ‘তাজমহল’ ছবি দিয়ে ক্যারিয়ার শুরু। তখন থেকেই নিয়মিত। কাজ করা হয়েছে প্রায় ৮৫০টি ছবিতে। যদিও তারকাখ্যাতি কোনোকালে হয়নি, তবে এবার সরাসরি আন্তর্জাতিক স্তরে তাঁর পরিচিতি ছড়িয়ে পড়েছে। তিনি অস্কারের আগে গোল্ডেন গ্লোবও পেয়েছেন।
নেহাত মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। বাবা ছিলেন স্কুলশিক্ষক। স্কুলশিক্ষা শেষ করার পর ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে যান। হায়দরাবাদের জওহরলাল নেহরু টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি থেকে তিনি ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন।
কিন্তু অনেক আগে থেকেই গানবাজনার প্রতি আগ্রহ ছিল তাঁর। ফলে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ করে তিনি ঢুকে পড়েন বিনোদনের জগতেই। তাঁর সেই সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না, তা আবারও প্রমাণিত হলো অস্কারের মঞ্চে।
পিটিআই শেয়ার করা এক টুইটার ভিডিওতে দেখা যায়, ঘরে বসে অস্কার অনুষ্ঠান দেখছিলেন গীতিকার চন্দ্রবোসের স্ত্রী সুচিত্রা চন্দ্রবোস। অস্কারের মঞ্চে চন্দ্রবোস ও টিম আরআরআর ওঠে, তখন সোফা থেকে দাঁড়িয়ে যান তিনি। হাততালি দিতে থাকেন, চোখ ভিজে যায় কান্নায়।