ড্রামস বাজানোয় মগ্ন শেখ মনিরুল আলম টিপু
ড্রামস বাজানোয় মগ্ন শেখ মনিরুল আলম টিপু

ওয়ারফেজ ব্যান্ডের টিপুর অনন্য অর্জন

৪৩ বছর ধরে ড্রামস বাজিয়ে চলছেন ওয়ারফেজ ব্যান্ডের শেখ মনিরুল আলম টিপু। এর মধ্যে ২৪ বছর ধরে বিশ্বখ্যাত ড্রামস সিম্বল ও প্লেট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান জিলদজিয়ানের সিম্বল ও প্লেট তাঁর সঙ্গী। কিন্তু কোনো দিন ভাবেননি ৪০০ বছরের পুরোনো এই প্রতিষ্ঠান থেকে মিউজিশিয়ান হিসেবে স্বীকৃতি মিলবে। সেটাই ঘটেছে। গতকাল বিশ্বসংগীত দিবসে আনন্দের সেই খবর সবার সঙ্গে ভাগাভাগি করলেন টিপু।

প্রথম আলোকে জানালেন, এমন একটি অর্জন তাঁর জন্য ভীষণ অনুপ্রেরণার।
জানা গেছে, টিপু প্রথম বাংলাদেশি ব্যান্ড মিউজিশিয়ান, যিনি বিশ্বখ্যাত সিম্বল ও প্লেট উৎপাদন প্রতিষ্ঠান জিলদজিয়ানের একজন অফিশিয়াল শিল্পীর স্বীকৃতি পেয়েছেন। জুন মাসের শুরুর দিকে খবরটি প্রথম জানতে পারেন টিপু। তবে তখন বিষয়টি কাউকে জানাতে চাননি।

টিপুর ভাষ্যে, ‘বিশেষ দিন উপলক্ষে খবরটা সবাইকে জানাতে চেয়েছি। ২১ জুন যেহেতু ওয়ার্ল্ড মিউজিক ডে, এই দিনে আবার ওয়ারফেজ ব্যান্ডের প্রথম অ্যালবাম মুক্তি পেয়েছিল—সবকিছু মিলিয়ে মনে হয়েছে, এর চেয়ে সুন্দর উপলক্ষ আর হতে পারে না।’

শেখ মনিরুল আলম টিপু

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ৪০০ বছরের পুরোনো প্রতিষ্ঠান জিলদজিয়ানের সঙ্গে অফিশিয়ালি যুক্ত হতে পারাটা অনেক বেশি আনন্দের বিষয় মনে করছেন টিপু। কারণ হিসেবে তিনি বললেন, ‘এটা ৪০০ বছরের পুরোনো একটা প্রতিষ্ঠান। বিশ্বের সেরা ড্রামস প্লেট ও সিম্বল বানায়, তাদের মধ্যে এটা একদম প্রথম সারির। এর বাইরেও আরও দুয়েকটি প্রতিষ্ঠান আছে। এই প্রতিষ্ঠানের সিম্বল ও প্লেট ভালো ক্ল্যাসিক ড্রামাররা বাজান। আমাদের দেশেও জিলদজিয়ান অনেক ব্যান্ড শিল্পী বাজান। প্রতিষ্ঠানটিও তাঁদের নিজেদের শিল্পী হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, যাঁরা মিউজিকে, মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে ভালোভাবে অবদান রাখছেন, রাখেন।’

৪৩ বছর ধরে ড্রামস বাজিয়ে চলছেন ওয়ারফেজ ব্যান্ডের শেখ মনিরুল আলম টিপু

কথায় কথায় টিপু জানিয়ে রাখলেন, জিলদজিয়ানের সিম্বল ও প্লেট ২৪ বছর ধরে বাজাচ্ছেন তিনি। এটি অন্য প্রতিষ্ঠানের চেয়ে সহজলভ্য নয় যদিও। তবে তার আগে পেইস্টি নামের একটি প্রতিষ্ঠানের সিম্বল ও প্লেট বাজাতেন। কম দামের মধ্যে এটা তাঁর ব্যবহারের উপযোগীও ছিল। তবে কখনো ভাবেননি যে প্রতিষ্ঠানের ড্রামস সিম্বল ও প্লেট বাজিয়েছেন, একদিন সেই প্রতিষ্ঠান থেকে স্বীকৃতি মিলবে। টিপু বললেন, ‘বিষয়টি কখনো এভাবে চিন্তা করিনি। তবে আমার বরাবরই চিন্তা ছিল, ভালো কাজ করব। ভালোভাবে কাজ করতে পারলে একদিন না একদিন কোনো না কোনো স্বীকৃতি আসতেও পারে। জিলদজিয়ানের সঙ্গে যে হবে, এটা তো ভাবাই যায় না। এখন হয়ে গেছে। প্রত্যেক শিল্পীর বা মিউজিশিয়ানের আলটিমেট অর্জন হচ্ছে, ভালো লাগার বিষয় হলো, আমি আমার পছন্দের যে ব্যান্ডে বাজাচ্ছি, তার অফিশিয়াল স্বীকৃতি পাওয়া—যা সত্যিই ভীষণ সম্মানের বিষয়। আমি মনে করি, প্রত্যেক শিল্পীর স্বপ্নও থাকে। আমার জন্য যা ঘটেছে, তা ভীষণ অনুপ্রেরণারও।’

শেখ মনিরুল আলম টিপু

কীভাবে জিলদজিয়ানের স্বীকৃতি মিলেছে, জানতে চাইলে টিপু বললেন এভাবেই, ‘এটা তো গ্লোবাল প্রতিষ্ঠান। প্রতিটি রিজিওনে এর অফিস আছে। জিলদজিয়ান ইন্ডিয়া আমাদের দক্ষিণ এশিয়ার পুরো অঞ্চলের তদারকি করে। আমার কাছে জিলদজিয়ান ইন্ডিয়া থেকে প্রস্তাবটা আসে, তা-ও বছর খানেক আগে। এই সময়ে তাদের সঙ্গে একাধিকবার কথাবার্তা হয়েছে। তারা আমাকে বলেছে, আমরা চাই তুমি জিলদজিয়ান আর্টিস্ট হও, তোমার প্রোফাইল আমাদের কাছে পাঠাও। আমরা এরপর গ্লোবালি পাঠাব। এরপর তারা সবকিছু যাচাই-বাছাই করে আমাকে নির্বাচিত করে। মাসের শুরুর দিকে আমাকে খবরটা জানানো হয়।’