‘সবার কাছে আমার একটাই চাওয়া, আপনারা আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন। তাঁর যেন বেহেশত নসিব হয়। আর তাঁকে নিয়ে কারও মনে কোনো ক্ষোভ থাকলে মাফ করে দেবেন।’ বললেন আইয়ুব বাচ্চুর ছেলে আহনাফ তাজোয়ার। আজ শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম শহরের পূর্ব মাদারবাড়িতে আইয়ুব বাচ্চুর নানার বাড়িতে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। আহনাফ তাজোয়ার আরও বলেন, ‘আমার বাবা হয়তো আপনাদের জন্য সর্বোচ্চটা দিতে পারেননি। কিন্তু তিনি আপনাদের অফুরন্ত ভালোবাসা দিয়েছেন। তিনি অনেক করেছেন। আপনাদের কাছে শেষ কথা, আপনারা আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।’
এর আগে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আইয়ুব বাচ্চুর মেয়ে ফাইরুজ সাফরাকে সাংবাদিকেরা বিভিন্ন প্রশ্ন করেন। তিনি বলেছেন, ‘কিছু বলার মতো অবস্থা আমার নেই। প্লিজ, আমাদের একটু সহযোগিতা করুন। আমরা অবশ্যই কথা বলব।’
ব্যান্ডসংগীতের কিংবদন্তি আইয়ুব বাচ্চুর মরদেহ আজ শনিবার সকালে আকাশপথে ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে যাওয়া হয়। সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আইয়ুব বাচ্চুর মরদেহ নিয়ে যাওয়া ইউএস বাংলার উড়োজাহাজটি অবতরণ করে। বিমানবন্দরে আইয়ুব বাচ্চুর মরদেহ গ্রহণ করেন চট্টগ্রামের মেয়র আ জ ম নাসির উদ্দীন। আইয়ুব বাচ্চুর মরদেহের সঙ্গে ঢাকা থেকে গেছেন তাঁর স্ত্রী, ছেলেমেয়ে আর স্বজনেরা।
গতকাল শুক্রবার রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে আইয়ুব বাচ্চুর ছেলে আহনাফ তাজোয়ার কানাডা থেকে আর মেয়ে ফাইরুজ সাফরা রাত দেড়টায় অস্ট্রেলিয়া থেকে দেশে ফিরেছেন। এরপর বিমানবন্দর থেকে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে। যোখানে শব হিমঘরে আইয়ুব বাচ্চুর মরদেহ রাখা হয়। এ সময় তাঁদের সঙ্গে আরও ছিলেন আইয়ুব বাচ্চুর স্ত্রী ফেরদৌস আক্তার। বাবার মরদেহ দেখে ছেলেমেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এলআরবির ব্যবস্থাপক শামীম চট্টগ্রাম থেকে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, বিমানবন্দর থেকে আইয়ুব বাচ্চুর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় চট্টগ্রাম শহরের পূর্ব মাদারবাড়িতে। সেখানে নানার বাড়িতে বড় হয়েছেন আইয়ুব বাচ্চু। আজ বাদ আসর এখানে জমিয়াতুল ফালাহ জামে মসজিদ মাঠে তাঁর চতুর্থ জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। মসজিদের মাঠে এই শিল্পীর মরদেহ রাখা হয়েছে। দুপুর থেকে এখানে তাঁর প্রতি সর্বস্তরের মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করছেন। সন্ধ্যায় তাঁকে চৈতন্য গলি কবরস্থানে মায়ের কবরের পাশে দাফন করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার সকালে না-ফেরার দেশে চলে যান আইয়ুব বাচ্চু। গতকাল শুক্রবার বাদ জুমা জাতীয় ঈদগাহে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে মরদেহ নেওয়া হয় তাঁর গানের স্টুডিও মগবাজারে ‘এবি কিচেনে’। সেখানে তাঁর দ্বিতীয় জানাজা হয়। এরপর মরদেহ নেওয়া হয় চ্যানেল আই কার্যালয়ে। সেখানে তৃতীয় জানাজা হয়। এর আগে সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে তাঁর মরদেহ রাখা হয় সর্বসাধারণের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য।