৩ ডিসেম্বর আমার নতুন জন্ম হয়েছে

পুরস্কার ঘোষণার দিন পরপর তিনজন বন্ধু আমাকে খবরটি দেন। কিন্তু প্রজ্ঞাপন না দেখা পর্যন্ত আমি নিশ্চিত ছিলাম না। তাঁদের একজন প্রজ্ঞাপনটি পাঠালে বিশ্বাস হয়। নিজের নামটি দেখে খুশিতে কিছুক্ষণের জন্য চুপ হয়ে যাই। আনন্দে সবকিছু যেন স্থির হয়ে গেল। পরে পরিবারের সবার সামনে গিয়ে চিত্কার দিয়েছিলাম। স্বপ্নেও ভাবিনি এখনই জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাব।

এখন কাজ করার বয়স। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অনেক বড় ব্যাপার। এই বয়সে এমন পুরস্কারের স্বপ্ন দেখা উচিত মনে করিনি। তাই কাজ করে যাচ্ছিলাম। এখন দেখছি, না চাইতেই যেন স্বপ্ন এসে ধরা দিয়েছে।

গানের কথা ছবির পরিচালক মাসুদ পথিকের। সুর ও সংগীত করেছেন ইমন চৌধুরী। ২০১৭ সালে ইমন চৌধুরী আমাকে গানের ডেমো দিয়েছিলেন। প্রথমবার শুনেই ভালো লাগে। গানের কথা যেমন, তেমনই সুর সুন্দর। সবকিছু মিলে দারুণ এক মায়া গানটির মধ্যে। গানে শুধু কণ্ঠ দিলেই হয় না, গানের কথায় সুন্দর করে সুর বসিয়ে সংগীতায়োজন করাও বড় ব্যাপার; যা এই গানে সম্ভব হয়েছে। তাই আমি মনে করি, এই পুরস্কারের কৃতিত্ব গীতিকার ও সুরকারের বেশি।

আমার মা ও বাবা বেশি খুশি হয়েছেন। খবরটি শোনার পরে তাঁদের চোখে ছিল আনন্দাশ্রু। সঙ্গে সঙ্গে বাবা মিষ্টি আনতে পাঠান। এরপর আমি নিজ হাতে সেই মিষ্টি বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়েছি। ওই দিন বাড়তি আনন্দ নিয়ে গানের অনুশীলন করেছি। একটি শোতেও অংশ নিয়েছিলাম। দিনটি খুবই ভালো গেছে।

এবারের জন্মদিনটা একটু বিশেষ ছিল। কারণ, ৮ ডিসেম্বরের আগে ৩ ডিসেম্বর জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পাওয়ার সুসংবাদ পেয়েছি। কখন যে জন্মদিন চলে এল, টেরই পাইনি। আমার কাছে মনে হয়েছে, ৩ ডিসেম্বর আমার নতুন জন্ম হয়েছে।

যেকোনো পুরস্কারই দায়িত্ববোধ বাড়িয়ে দেয়। এই পুরস্কার রাষ্ট্রীয়। এর সম্মান আরও বেশি, তাই দায়িত্বও বেশি। কাজের প্রতি মনোযোগ, আন্তরিকতা বেড়েছে। প্রতিটি কাজেরই যেন গুণগত মান ঠিক থাকে, সেদিকটা ভাবছি।

আমি গত ২২ অক্টোবর থেকে কাজ শুরু করেছি। এখন খুব একটা স্টেজ শো করা যাচ্ছে না। গত দুই মাসে সাত থেকে আটটি শো করেছি। তার মধ্যে একটি ছিল বগুড়ায়। বাকিগুলো সব ঢাকায়। বেশির ভাগ ছিল ইনডোর শো। পাশাপাশি মুক্তি সিনেমার টাইটেল গান করলাম। কিছু একক ফোক ঘরানার ও আধুনিক গান করেছি।