রাকিবা ইসলাম, সুবীর নন্দীকে নিয়ে
রাকিবা ইসলাম, সুবীর নন্দীকে নিয়ে

সুবীর স্যার ব্যক্তিজীবনে ভালো মানুষ হওয়ার প্রেরণা

তরুণ সংগীতশিল্পী রাকিবা ইসলাম ঐশী ছাত্রজীবনেই সুবীর নন্দীর সান্নিধ্য পেয়েছিলেন। পরে তাঁর সঙ্গে একটি গান করারও সৌভাগ্য হয়েছিল ঐশীর। সেই স্মৃতি এখনো তাঁর কাছে স্মরণীয়। সংগীতশিল্পী হিসেবে একজন ভালো মানুষ হওয়ার প্রেরণা ঐশী পেয়েছেন সুবীর নন্দীর কাছ থেকেই। শিল্পীর দ্বিতীয় প্রয়াণ দিবসে তাঁকে শ্রদ্ধা জানালেন এই তরুণী।

রাকিবা ইসলাম ঐশী তখন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত উৎসবে দুবার গিয়েছিলেন সুবীর নন্দী। তখন প্রথম খুব কাছ থেকে তাঁকে দেখেছেন ঐশী। পরে সুযোগ হয় তাঁর সঙ্গে একটি সচেতনতামূলক গানে কণ্ঠ দেওয়ার। সেটা যেন তাঁর জীবনের স্মরণীয় ঘটনা হয়ে আছে। সেই সময় সুবীর নন্দী কিছুটা অসুস্থ ছিলেন।

ঐশী জানালেন, সুবীর নন্দীর আচার ও ব্যক্তিত্ব ছিল তাঁর কাছে শিক্ষণীয়। তিনি জানান, যখনই তাঁর কাছে গেছেন, তখনই কিছু না কিছু শিখেছেন। ঐশী বলেন, ‘সুবীর স্যার ছিলেন অসম্ভব ভালো এবং নরম মনের মানুষ। সব সময় গানকে ভালোবেসে মন থেকে গাইতে বলতেন। খুব ইচ্ছা ছিল স্যারের আরও কাছ থেকে শেখার। কথাও ছিল স্যারকে গান শোনানোর। সেই সুযোগ খুব কমই হয়েছে। গুণী একজন মানুষের নিবিড় সাহচর্য থেকে বঞ্চিত হয়েছি।’

রাকিবা ইসলাম

একজন শিল্পী হওয়াটাই শেষ কথা নয়। পাশাপাশি তাঁর ব্যক্তিত্ব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একজন শিল্পীকে ব্যক্তিজীবনে ভালো মানুষ হতে হয়। এই শিক্ষা ঐশী পেয়েছেন প্রিয় শিল্পী সুবীর নন্দীর কাছ থেকে। তিনি বলেন, ‘একজন মানুষ যদি ভালো হন, সেই প্রভাবটা তাঁর কাজের মধ্যে পড়ে। স্যার যেমন গুণী একজন ভালো মানুষ। সেই ছাপ তাঁর সব কাজের মধ্যেও রয়েছে। একজন ভালো শিল্পী হতে গেলে যে একজন ভালো মানুষ হওয়া জরুরি, এ বোধটা আমি তাঁর কাছ থেকে পেয়েছি। তাঁর ব্যক্তিত্ব আমার ব্যক্তিজীবনে বড় অনুপ্রেরণা। এ ছাড়া ভালো বাংলা গানের চর্চা ও উৎসাহ তাঁর কাছ থেকেই পেয়েছি।’

সেরা কণ্ঠ থেকে উঠে আসা শিল্পী রাকিবা ইসলাম ঐশি। ছবি: সংগৃহীত

ঐশী সংগীত নিয়ে পড়াশোনা করছেন। শাস্ত্রীয় সংগীত বিষয় হলেও আধুনিক ও প্রাক্‌শাস্ত্রীয় গান গাইতেই বেশি ভালোবাসেন। সংগীতেই ক্যারিয়ার গড়তে চান সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের মেয়ে ঐশী। শৈশব থেকেই তিনি সুবীর নন্দীর গানের সঙ্গে পরিচিত। ২০১৭ সালে দেশের ৩৫ হাজার প্রতিযোগীকে পেছনে ফেলে ‘ফিজআপ-চ্যানেল আই সেরাকণ্ঠ ২০১৭’ যুগ্মভাবে জয়ী হন তিনি। ঐশী বলেন, ‘সুবীর স্যারের বাসা ছিল হবিগঞ্জ। আমরা পাশাপাশি জেলার মানুষ, শৈশব থেকে এটা ভাবতেই অনেক ভালো লাগত। স্যারকে আগে থেকে না চিনলেও শৈশব থেকে অনেক আপন মনে হতো।’

সুবীর নন্দীর গাওয়া ‘আমার এ দুটি চোখ’, ‘বন্ধু হতে চেয়ে তোমার’, ‘বৃষ্টির কাছ থেকে’, ‘চাঁদে কলঙ্ক আছে যেমন’, ‘দিন যায় কথা থাকে’, ‘একটা ছিল সোনার কন্যা’, ‘ও আমার উড়ালপঙ্খি রে’, ‘হাবলঙ্গের বাজারে’, ‘হাজার মনের কাছে’, ‘কত যে তোমাকে বেসেছি ভালো’সহ বেশ কিছু গান ঐশীর ভীষণ পছন্দের। নিয়মিত তাঁর গান শুনে শিখতে চান ঐশী।