অসচ্ছল শিল্পীদের জন্য তহবিল গড়বে বাংলা সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র আনন্দধারা আর্টস। এ জন্য ফেসবুক লাইভে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করতে যাচ্ছে তারা। সেই অনুষ্ঠানে গাইবে বাংলার নামকরা শিল্পীরা। এ অনুষ্ঠান থেকে গড়া তহবিলের অর্থ সহযোগিতা হিসেবে দেওয়া হবে করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পীদের।
আসছে শুক্রবার লন্ডন সময় বিকেল ৫টা ও বাংলাদেশ সময় রাত ১০টায় শুরু হবে আনন্দধারা আর্টস-এর এই ফেসবুক লাইভ অনুষ্ঠান। এ অনুষ্ঠান থেকে সংগৃহীত অর্থ রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন পরিষদের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হবে দুস্থ শিল্পীদের কাছে। প্রতি সপ্তাহে দুদিন এভাবে ফেসবুকে লাইভ অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা করেছে সংগঠনটি। আনন্দধারা আর্টসের পরিচালক ও লন্ডন প্রবাসী শিল্পী ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, বাংলাদেশের অনেক শিল্পী আছেন, যারা চক্ষুলজ্জায় অন্যের কাছে হাত পাততে পারবেন না। কিন্তু আর্থিক কষ্ট তাদের পরিবারকে ঠেলে দেবে চরম দৈন্যের দিকে। মনে হলো অনলাইনে শিল্পীরা নানা রকম কার্যক্রম করছেন। ফেসবুক ব্যবহার করে যদি দুস্থ শিল্পীদের জন্য কিছু করা যায় খারাপ হয় না।
আনন্দধারা আর্টসের এ কার্যক্রমে যুক্ত হয়েছে রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মেলন পরিষদ। এ ছাড়া পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় শিল্পী রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা, চন্দনা মজুমদার, মিতা হক, বুলবুল ইসলাম, লাইসা আহমদ লিসার মতো নামি শিল্পীরা।
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে সাউদার্ন ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে কর্মরত আছেন ইমতিয়াজ আহমেদ। তিনি বলেন, লন্ডন শহরে একজন ডাক্তার হিসেবে অনেকদিন হলো চোখের সামনে করোনাভাইরাসে একের পর এক মানুষের মৃত্যু দেখছি। অনলাইনে আনন্দধারার গানের ক্লাসে শিশু ও তাদের বাবা-মায়ের অসহায় মুখগুলোও চোখে পড়ছে। জীবনের কোনো স্থিরতা নেই এই মুহূর্তে। এ দেশের ব্যবস্থাপনা অনেক ভালো। যারা কাজে যেতে পারছেন না, বাড়িতে বসে কাজ করার সুযোগ আছে। যারা খাবারের দোকানে কাজ করেন, তারা যাতে মাস শেষে বেতনের কিছুটা অর্থ পায় সেই ব্যবস্থাও করা হয়েছে। শিল্পী ও কলাকুশলীদের জন্য ব্রিটিশ সরকার কিছু আর্থিক সাহায্যের ব্যবস্থাও করেছে। কিন্তু আমার নিজের দেশ এখনো সে রকম কোনো ব্যবস্থা করে উঠতে পারেনি। বিশেষ করে আমার নিজের দেশের অনেক শিল্পীই আছেন, যারা চক্ষুলজ্জায় অন্যের কাছে হাত পাততে পারবেন না। ভাবলাম তাদের জন্য কী করা যায়! সেই ভাবনা থেকেই এই অনলাইন লাইভ অনুষ্ঠানের কথা পরিকল্পনা।
যুক্তরাজ্যে দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত তরুণ প্রজন্মকে বাংলা গানের মাধ্যমে বাংলার সংগীত ও সংস্কৃতির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে কাজ শুরু করেছিল আনন্দধারা আর্টস। তাদের মূল লক্ষ্য মূলধারার রবীন্দ্রসংগীত সংরক্ষণ ও শিক্ষা দেওয়া। ২০০২ সালে আনন্দধারা আর্টস প্রতিষ্ঠা করেন রবীন্দ্রসংগীত শিল্পী ইমতিয়াজ আহমেদ ও পারভিন কাদেরী। ২০১০ সালে যাত্রা শুরু করে আনন্দধারা মিউজিক স্কুল। ব্রিটিশ বাংলাদেশি থেকে শুরু করে পশ্চিমাদের কাছে বাংলা গানকে জনপ্রিয় করতে বিশেষ অবদান রাখছে আনন্দধারা আর্টস। নিয়মিত সেখানে নানা রকম অনুষ্ঠানের আয়োজন করে প্রতিষ্ঠানটি।
আনন্দধারার প্রতিষ্ঠাতাদের দুজনই প্রবাসী। ইমতিয়াজ আহমেদ অনকোলোজি চিকিৎসক ও পারভিন কাদেরী অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ।