‘আহারে জীবন’ গানটি মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ডুব সিনেমায় গেয়েছিল ব্যান্ড চিরকুট। কথা, সুর ও গায়কির অনন্যতায় গানটি শ্রোতাদের মনে জায়গা করে নেয়। সম্প্রতি সে রকম একজনের কথা জানতে পেরে ভীষণ আনন্দিত চিরকুট।
চিরকুটের ওই গান ভীষণ পছন্দ করেছেন ভারতের শিল্পী মৌসুমী ভৌমিক। শুধু তা-ই নয়, সম্প্রতি গানটি গেয়ে ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করেন তিনি। হঠাৎ করেই সেটি গোচরে আসে সুমীর। মৌসুমী ভৌমিককে নিজেদের গান গাইতে দেখে কেঁপে উঠেছিলেন সুমী। প্রথম আলোকে গতকাল শনিবার সেই ঘটনার প্রতিক্রিয়া জানান তিনি।
সুমী বলেন, ‘একসময় যার সৃষ্টির গভীরতায়, মোহে, প্রেমে অন্ধের মতো আচ্ছন্ন হয়ে থাকতাম, এখনো যার প্রতি মুগ্ধতা এতটুকু কমেনি, সেই মৌসুমী ভৌমিক পরম মমতায় গাইলেন আমাদের গান ‘আহারে জীবন’। সৃষ্টিকর্তার কী অপার কারসাজি! ঘটনার আকস্মিকতায় বোকার মতো বসে আছি। কারণ, মৌসুমী ভৌমিক আমার কাছে কালোত্তীর্ণ এক মহান শিল্পী। তিনি এই পৃথিবীর এক মহাসম্পদ, যিনি একটা জীবন কাটিয়েছেন মানুষের কথা বলে।’
মৌসুমী ভৌমিকের কণ্ঠে চিরকুটের এই গান পেয়েছে এক ভিন্ন মাত্রা। সেই গানের ভিডিওটি পেয়ে ভীষণ আনন্দিত সুমী। শিল্পীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে সুমী বলেন, ‘পরম শ্রদ্ধেয় ও প্রিয় মৌসুমী ভৌমিক, আপনি আমাদের অন্তরের অন্তস্তল থেকে কৃতজ্ঞতা গ্রহণ করুন। আপনার প্রাণে পৌঁছাতে পেরে চিরকুট ধন্য। যদি কোনো দিন দেখা হয়, মাথায় হাত বুলিয়ে আমাদের আদর করে দেবেন, প্লিজ।’
সুমীর এমন আবদারে ফেসবুকে মন্তব্য করে মৌসুমী ভৌমিক লেখেন, ‘আমি একটু ভয়ে ভয়ে ছিলাম, তোমরা কী মনে করো! এখন তোমাদের চিঠি পেয়ে আশ্বস্ত হলাম। গানটা গাইতে আমার এত আরাম হচ্ছিল। মনে হচ্ছিল, এটা আমারই গান বুঝি। আমরা এখানে খুব টালমাটাল সময় পার করছি, আমার সঙ্গে লাবণী (আনখ সমুদ্দুর) ছিল, সে তো আমার সন্তানের বয়সী। আমাদের দুজনেরই দরকার ছিল এই গানটা গাইবার। আমি গাইলাম তাই, আর ও ছবি তুলল। দেখা তো আমাদের হবেই। তখন আমরা পরস্পরকে জড়িয়ে ধরতে পারব। আপাতত দূর থেকেই ভালোবাসলাম।’
এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে সুমী বলেন, ‘বছরের পর বছর ধরে মৌসুমী ভৌমিকের কত গান, কত কথা যে আমার/ আমাদের, আর আজ প্রথম আমাদের একটা গান আপনার হলো। এ যে কত বড় আনন্দের ব্যাপার! তাই এটা এখন থেকে আপনারই গান। যখন খুশি ইচ্ছেমতো গাইবেন, প্লিজ। পৃথিবীজুড়ে অসময়টা দ্রুত কাটুক, প্রাণপণ প্রার্থনা করি। এই যে রোজ রোজ এত ব্যর্থতা, তা ছাপিয়েও আমাদের বাঁচতে হবে, গাইতে হবে, অনুপ্রেরণা জোগাতে হবে একে অপরকে। এই যেমন আপনার এই চিঠি আমাকে আরও একবার আপনার কাছে ঋণী করে দিল। এ আবেগ ভাষায় বোঝানো সম্ভব না। আপনি অনেক অনেক ভালো থাকবেন!