দুনিয়া কাঁপানো ব্রিটিশ ব্যান্ড বিটলসকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে যাচ্ছেন ‘দ্য লর্ড অব দ্য রিংস’ ছবির নির্মাতা পিটার জ্যাকসন। এক বিবৃতিতে এই নির্মাতা জানান, শিগগিরই তিনি বিটলস ব্যান্ডের শেষ অ্যালবাম ‘লেট ইট বি’র রেকর্ডিংয়ের সময়কার কিছু ঘটনা নিয়ে সিনেমা বানাবেন। তবে সেটা তথ্যচিত্র হবে, নাকি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র, তা স্পষ্ট করেননি এই নির্মাতা।
১৯৬৯ সালে বিটলস ব্যান্ড তাদের শেষ অ্যালবাম লেট ইট বি রেকর্ড করে। পিটার জ্যাকসন জানান, সেই সময়কার উত্তেজনাপূর্ণ রেকর্ডিং মুহূর্তগুলো তিনি তাঁর ছবিতে তুলে ধরবেন। ছবিটি নির্মাণের জন্য পিটার সাহায্য নেবেন সেই সময় ধারণ করা বিটলস সদস্যদের ৫৫ ঘণ্টার অপ্রকাশিত ফুটেজ। এই ফুটেজ ধারণের এক বছর পরই ভেঙে যায় ইতিহাসের সর্বকালের সেরা এই বয়ব্যান্ড। পিটার বলেন, ‘নতুন চলচ্চিত্রটি বিটলস ভক্তদের টাইম মেশিনে করে ফিরিয়ে নিয়ে যাবে ১৯৬৯ সালে। ভক্তরা প্রিয় দল ও এর সদস্যদের এমনভাবে পর্দায় দেখবেন, যেভাবে দেখার স্বপ্ন দেখে এসেছেন তাঁরা।’
বলা হয়ে থাকে, লেট ইট বি অ্যালবামের গানগুলো ধারণের সময় বিটলস ব্যান্ড প্রচণ্ড অস্থিরতা আর দ্বিধার মধ্য দিয়ে যাচ্ছিল। ভাঙনের দ্বারপ্রান্তে ছিল দলটি। সেই সময়কে দলের সদস্য জর্জ হ্যারিসন ‘সবচেয়ে বাজে অধ্যায়’ বলে আখ্যা দিয়েছেন, আর জন লেনন বলেছেন ‘নরকে কাটানো দিন’। কিন্তু নির্মাতা পিটার জ্যাকসন সেই অস্থিরতা আর সংকটকে তাঁর ছবিতে একেবারেই দেখাতে চান না। তাঁর ভাষায়, বাস্তবতা নাকি অতটা কঠিন ছিল না। পিটার বলেন, ‘অবশ্যই কিছুটা সংকট তো ছিলই সে সময় বিটলসে। কিন্তু রেকর্ডিং সেশনে জন লেনন, পল ম্যাককার্টনি, জর্জ হ্যারিসন, রিংগো স্টাররা যেভাবে গান বানাতেন, বাজাতেন, গাইতেন সেই সৃষ্টির উন্মাদনা, উচ্ছ্বাসের মুহূর্ত সংকট-অস্থিরতার চেয়েও বেশি প্রাণবন্ত আর আনন্দের ছিল। আমি সেটাই দেখাব এবার।’
অজানা কিছু তথ্য
বিটলস ব্যান্ড চেয়েছিল দ্য লর্ড অব দ্য রিংস-এর সিনেমা স্বত্ব কিনতে। দলের সদস্যদের ইচ্ছা ছিল তাঁরা এই ট্রিলজি অবলম্বনে বানানো ছবিতে অভিনয় করবেন। কিন্তু লেখক জে আর আর টলকিন সে সময় বিটলসের সেই প্রস্তাবে রাজি হননি। ফিরিয়ে দেন বিটলস ব্যান্ডকে।
বেশ কয়েক দশক পরে গিয়ে সেই লর্ড অব দ্য রিংস-এর সিনেমা স্বত্ব পেয়ে যান পিটার জ্যাকসন। এই ট্রিলজিকে বড় পর্দায় এনে বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলে দেন তিনি, গড়েন ইতিহাস।
বিটলসের স্বপ্নের গল্প নিয়ে সিনেমা বানানো সেই পিটার জ্যাকসনই এবার দলটিকে নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণ করবেন। ছবিতে বিটলসের শেষ দিকের রেকর্ডিং সেশনে কাটানো দিনগুলোকে দেখানো হবে।
পিটার জ্যাকসনের সবচেয়ে প্রিয় ব্যান্ড বিটলস। বিভিন্ন সময় পিটার জানিয়েছেন, খুব একটা গান শোনেন না তিনি। একমাত্র বিটলস শুনেই বড় হয়েছেন তিনি। যেকোনো সময়, যেকোনো পরিস্থিতে বিটলসের গান শুনতে পারেন পিটার।