বাবা হারালেন কণ্ঠশিল্পী ঐশী। মুক্তির উৎসব ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী মেলা উপলক্ষে লক্ষ্মীপুর স্টেডিয়ামে গান গাইতে গিয়েছিলেন তিনি, সঙ্গে ছিলেন তাঁর মা। লক্ষ্মীপুরের মেয়ে ঐশী অনুষ্ঠান শেষে ঢাকায় ফিরবেন, তখনই ঢাকার মহাখালীর বাসা থেকে তাঁর ভাই খবর পাঠান, তাঁদের বাবা আবদুল মান্নানের হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। দ্রুত তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঐশীর বাবা আবদুল মান্নানের মৃত্যুর খবর প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেন আরেক শিল্পী রেশমী মির্জা। প্রথম আলোকে তিনি জানান, শনিবার দিবাগত রাত ১২টায় ঐশীর বাবা মারা যান। তিনি বাসায় হার্ট অ্যাটাক করেছিলেন। পরে দুই ছেলে তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, আজ রোববার ফজরের নামাজের পর মহাখালীর আরজতপাড়া জামে মসজিদে ঐশীর বাবার প্রথম নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর তাঁর মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় জন্মস্থান নোয়াখালীর মাইজদীতে। নোয়াখালী সরকারি কলেজ মাঠে বাদ জোহর দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। পরে মাইজদীর সাতানি পুকুর পাড়সংলগ্ন সফর আলী মাস্টার বাড়ি সড়কের নিজ বাড়িতে তাঁকে দাফন করার কথা রয়েছে। গায়িকা ঐশীর বাবা গত দেড় মাসের মধ্যে দুবার হার্ট অ্যাটাক করেন। তাঁর হার্টে রিং বসানো হয়েছিল।
এক দশক আগে ‘হৃদয় মিক্স থ্রি’ অ্যালবামের জন্য শিল্পী বাছাই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে একটি মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান। ওই প্রতিযোগিতায় অংশ নেন ঐশী। নানা ধাপ পেরিয়ে সেরা পাঁচে জায়গা করে নেন তিনি। পরে এই আয়োজনের সেরা প্রতিযোগীদের নিয়ে অ্যালবাম ‘দখিন হাওয়া’য় একটি গানে কণ্ঠ দেন তিনি। সেই থেকে শুরু। ২০১৫ সালে ‘ঐশী এক্সপ্রেস’ অ্যালবাম প্রকাশের মধ্য দিয়ে সংগীতাঙ্গনে আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করেন ফাতিমা তুয যাহরা ঐশী। তাঁর মা নাসিমা আক্তারও গান করতেন। বাবা আবদুল মান্নানও ছিলেন গানপাগল। তাঁদের চাওয়া ছিল, মেয়ে ঐশী যেন সংগীতশিল্পী হন।
বাবার চাকরির সুবাদে ঐশীর ছোটবেলা কেটেছে রংপুরে। ২০০০ সালে রংপুর শিশু একাডেমিতে তাঁর গান শেখা শুরু। এরপর ২০০৩ সালে নোয়াখালীতে চলে যান। সেখানে মুহাম্মদ শরীফ ও পরবর্তী সময়ে হাফিজ উদ্দীন বাহারের কাছে দীর্ঘদিন উচ্চাঙ্গ ও নজরুলসংগীতে তালিম নিয়েছেন তিনি। বর্তমানে ঐশী ঢাকার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজে ইন্টার্ন করছেন।