সুলিকে অনেক দিন থেকেই অনলাইনে উত্যক্ত করা হচ্ছিল। তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে করতে একসময় আত্মহত্যার পথ বেছে নেন দক্ষিণ কোরিয়ার এই পপতারকা। তখন সবচেয়ে কাছের বন্ধুর মৃত্যুতে মুষড়ে পড়েন আরেক জনপ্রিয় পপতারকা গু হারা। সুলিকে শুধু বন্ধু নয়, নিজের বোন বলে মনে করতেন। সেদিন ইনস্টাগ্রামে শোকবার্তায় তিনি লিখেছিলেন, ‘আশা করছি, আর কোনো দুশ্চিন্তা ছাড়াই স্বর্গে তুমি শান্তিতে ঘুমাবে।’ কিন্তু তখনো তিনি জানতেন না, মাত্র এক মাস পর তাঁকেও সে পথেই পা বাড়াতে হবে। তাঁর বয়স ২৮। এবার গু হারার মৃত্যুতেও ভক্তরা সামাজিকমাধ্যমে সুলির মৃত্যুর পর লেখা তাঁর সেই বাণী পোস্ট করে শোক প্রকাশ করছেন।
স্থানীয় বার্তা সংস্থা ইয়ানহাপের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে, গতকাল রোববার সিউলের শহরতলিতে নিজ বাসায় তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। গত শনিবার ইনস্টাগ্রামে সর্বশেষ ছবি পোস্ট করেন তিনি। বিছানায় শুয়ে থাকা সেই ছবির ক্যাপশনে তিনি লিখেছেন, ‘গুড নাইট।’
সিউলের গ্যাংনাম পুলিশ বিভাগ জানিয়েছে, গু হারার অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, তিনি আত্মহত্যা করেছেন। এর আগে আরও একবার আত্মহত্যার চেষ্টা করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন তিনি।
দক্ষিণ কোরিয়ার জনপ্রিয় পপ ব্যান্ড ‘কারা’র সদস্য ছিলেন গু হারা ও তাঁর বন্ধু সুলি। গু হারা এই ব্যান্ডে যোগ দেন ২০০৮ সালে। পরে তিনি এই ব্যান্ড থেকে বেরিয়ে এসে একক ক্যারিয়ার গড়ার দিকে মন দেন। তাঁর প্রথম একক অ্যালবাম বের হয় ২০১৫ সালে। কোরিয়ার টপ চার্টে অ্যালবামটি চতুর্থ স্থানে ওঠে আসে। জাপানের একটি এজেন্সির সঙ্গে সম্প্রতি চুক্তি করেন তিনি। এ বছর নভেম্বর মাসের গোড়ার দিকে জাপান থেকে তাঁর গাওয়া ‘মিডনাইট কুইন’ গানটি বের হয়।
গত বছর সেপ্টেম্বর মাসে সাবেক প্রেমিকের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ করেন গু হারা। কারণ, সেই প্রেমিক তাঁর ক্যারিয়ার ধংস করা এবং গোপন ক্যামেরায় ধারণ করা গু হারার ছবি ও ভিডিও প্রকাশের হুমকি দেন। ছেলেটি তাঁকে শারীরিকভাবেও লাঞ্ছিত করেন। শেষ পর্যন্ত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাঁর সেই প্রেমিককে কারাদণ্ড দেন।
বিশ্বের আত্মহত্যার ঘটনায় শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটির সরকারের সাম্প্রতিক এক জরিপ থেকে জানা গেছে, ৪০ বছর বয়সের নিচের নারী–পুরুষের আত্মহত্যার প্রবণতা বেশি।