গণসংগীতশিল্পী ফকির আলমগীরের গড়ে তোলা সাংস্কৃতিক সংগঠনের হাল ধরলেন তাঁর স্ত্রী সুরাইয়া আলমগীর। এ বছরের ২৩ জুলাই ফকির আলমগীর মারা যাওয়ার আগপর্যন্ত তিনিই ছিলেন সংগঠনটির সভাপতির দায়িত্বে। শিল্পীর অবর্তমানে সংগঠনটির কার্যক্রম সচল রাখার জন্য সম্প্রতি গঠিত হলো নতুন কমিটি। সব সদস্যের সম্মতিতে সংগঠনটির সভাপতির পদ পেয়েছেন সুরাইয়া আলমগীর। আর এর মধ্য দিয়ে ৪৫ বছর পর শিল্পীগোষ্ঠী পেল নতুন সভাপতি।
নতুন কমিটিতে জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে স্থান পেয়েছেন ফকির আলমগীরপুত্র ফকির মাশুক আলমগীর। এ ছাড়া সাধারণ সম্পাদক হলেন সমর বড়ুয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক হলেন সালাম শামীম। ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর আগামী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য মোট ৩৪ সদস্যের এই কমিটি তৈরি করা হয়।
নতুন নির্বাচিত সভাপতি সুরাইয়া আলমগীর বলেন, ‘এটি তাঁর (ফকির আলমগীর) প্রাণের সংগঠন। দেশের যেকোনো ক্রান্তিকালে ঋষিজ এগিয়ে গেছে। আমি মনে করি, ঋষিজ ফকির আলমগীরের আরেকটি সন্তান। এই সংগঠনকে তিনি লালন-পালন করে এত দূর নিয়ে এসেছেন। তাঁর প্রয়াণে সব সদস্যের সম্মতিক্রমে আমাকে স্থলাভিষিক্ত করা হয়। সবার অনুরোধে আমি দায়িত্বটি নিয়েছি বটে, তবে এটা আমার জন্য দুঃসাহসের মতো।
কারণ, তাঁর মতো গুণী-বিচক্ষণ সংগঠক আমি নই। আমার স্বপ্ন, ফকির আলমগীরের স্বপ্ন বুকে ধারণ করে সংগঠনটিকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। তাতে তাঁর আত্মা শান্তি পাবে।’
এদিকে সংগঠনটির নবনির্বাচিত জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফকির আলমগীরপুত্র ফকির মাশুক আলমগীর বলেন, ‘পারিবারিক সূত্রে মনেপ্রাণে সংগীতের মানুষ হলেও পেশায় আমি একজন অধ্যাপক। তবে বাবার আদর্শ তথা গণসংগীতের স্বার্থে আমি অধ্যাপনার পাশাপাশি নিয়মিত গানে ফিরতেও প্রস্তুত। ঋষিজের পতাকা ওড়াতে চাই সারা বিশ্বে।’
ঋষিজ শিল্পীগোষ্ঠীর নবনির্বাচিত কমিটিতে স্থান পাওয়া ফকির আলমগীর পরিবারের অন্য সদস্যরা হলেন ফকির সিরাজ, হাসান আলমগীর রাহুল, আশেক আলমগীর, ফকির মিজানুর রহমান, ফকির জাহিদ হাসান, তামজিদুর রহমান ও লুৎফুর রহমান শাহীন।
‘ভয় কি মরণে রাখিতে সন্তানে’ চারণকবি মুকুন্দ দাসের এ অভয়বাণীকে কণ্ঠে ধারণ করে ১৯৭৬ সালের ২২ নভেম্বর যাত্রা শুরু করে সাংস্কৃতিক সংগঠন ঋষিজ। এ সংগঠনের দলীয় সংগীতের শেষ চারটি চরণ এমন, ‘তমসার ক্ষণে নেব ঋষিজের নাম/ উৎসব দিনে নেব ঋষিজের নাম/ উজ্জ্বল সূর্যের আলোকিত বন্যায়/ মুক্তির সুরে ঋষিজের গান’ ঋষিজের এই গানের মতোই তাদের পথচলা।