শ্রদ্ধাঞ্জলি

কেন জনসমক্ষে বাজানো ছেড়েছিলেন অন্নপূর্ণা?

অন্নপূর্ণা দেবী
অন্নপূর্ণা দেবী

স্বামীর ওপর অভিমান করে জনসমক্ষে সুরবাহার বাজানো ছেড়েছিলেন অন্নপূর্ণা দেবী। স্বামী কিংবদন্তি সেতারশিল্পী পণ্ডিত রবিশঙ্করের সঙ্গে বিরোধ তৈরি হয়েছিল তাঁর। প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, জীবনে আর কখনোই দর্শকদের সামনে সুরবাহার বাজাবেন না। তখন থেকেই মুম্বাইয়ের বাড়িতে নিঃসঙ্গ জীবনযাপন শুরু করেন তিনি।

অন্নপূর্ণা দেবী ৭৪ বছর পর্যন্ত কোনো রেকর্ডিং করেননি। স্বামীর সঙ্গে বিরোধের পর প্রায় ৫০ বছর বাইরের কোনো লোক তাঁকে বাজাতে দেখেনি। শুধু একবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছিল প্রখ্যাত শিল্পী জর্জ হ্যারিসনের বেলায়। অন্নপূর্ণার দৈনিক রেওয়াজের সময় তাঁর পাশে বসার অনুমতি পেয়েছিলেন হ্যারিসন।

অন্নপূর্ণা দেবী

সংগীতবোদ্ধা ও সমালোচকদের মতে, পণ্ডিত রবিশঙ্কর বা ওস্তাদ আলী আকবর খাঁর চেয়ে প্রতিভাবান ছিলেন অন্নপূর্ণা দেবী। ওস্তাদ আমির খান এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁর ৮০ শতাংশ প্রতিভা পেয়েছেন অন্নপূর্ণা, আলী আকবর খাঁ ৭০ ভাগ, আর ৪০ ভাগ রবিশঙ্কর।’ আলী আকবর নিজেও এ কথার সঙ্গে একমত হয়েছিলেন। এ প্রসঙ্গে বলেছিলেন, ‘রবিশঙ্কর, পান্নালাল ঘোষ আর আমাকে এক পাল্লায় রেখে আরেক পাল্লায় অন্নপূর্ণাকে রাখলে ওঁর পাল্লাই ভারী হবে।’

অন্নপূর্ণার মতে, রবিশঙ্করের সঙ্গে তাঁর দাম্পত্য টানাপোড়েন শুরু হয়েছিল এসব কারণেই। অন্নপূর্ণা বলেছিলেন, ‘শ্রোতাদের সামনে যতবার বাজিয়েছি, সবাই ভীষণ প্রশংসা করেছেন। আমি বুঝতে পারতাম, পণ্ডিতজি এটা ভালোভাবে নিচ্ছেন না। আমার যে মানুষের সামনে বাজানোর খুব গরজ ছিল, তা নয়। সে জন্য একপর্যায়ে জনসমক্ষে বাজানো বন্ধ করে নিজের মতো করে সাধনা চালিয়ে যেতে থাকি।’ ম্যানজ ওয়ার্ল্ড