মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণজনিত অসুস্থতায় সাভারের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন লোকগানের জনপ্রিয় শিল্পী কাঙালিনী সুফিয়া। গত মঙ্গলবার রাতে তাঁকে সাভারের এনাম মেডেকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানান মেয়ে পুষ্প বেগম। শুরুতে তাঁকে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিউ) রাখা হলেও পরে কেবিনে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। চিকিৎসার খরচ কীভাবে চলবে, তা নিয়ে ভীষণ চিন্তার মধ্যে আছে কাঙালিনী সুফিয়ার পরিবার।
পুষ্প বেগম বলেন, ‘সাভারে নিজ বাড়িতে মঙ্গলবার রাত আটটায় হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়েন মা। ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই মাকে নিয়ে হাসপাতালে যাই। প্রাথমিক পরীক্ষা শেষে চিকিৎসকেরা জানান, মা ব্রেইন স্ট্রোক করেছেন। হার্ট আর কিডনিতেও সমস্যা রয়েছে তাঁর।’
বাউলগানের শিল্পী কাঙালিনী সুফিয়া মাত্র ১৪ বছর বয়সে গ্রামীণ অনুষ্ঠানে গেয়ে শিল্পী হিসেবে পরিচিতি পান। এরপর বাংলাদেশ টেলিভিশনের নিয়মিত শিল্পী হিসেবে তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত হয়। পেয়েছেন ৩০টি জাতীয় ও ১০টি আন্তর্জাতিক পুরস্কার। তাঁর গাওয়া জনপ্রিয়তা পাওয়া গানগুলোর মধ্যে ‘কোনবা পথে নিতাইগঞ্জে যাই’, ‘পরানের বান্ধব রে, বুড়ি হইলাম তোর কারণে’, ‘নারীর কাছে কেউ যায় না’ এবং ‘আমার ভাটি গাঙের নাইয়া’ গানগুলো উল্লেখযোগ্য।
কাঙালিনী সুফিয়ার চিকিৎসা খরচ নিয়ে দুশ্চিন্তার মধ্যে আছেন মেয়ে পুষ্প বেগম। তিনি বলেন, ‘মায়ের অবস্থা কিছুই বুঝতেছি না। বিভিন্ন পরীক্ষা–নিরীক্ষা হচ্ছে। ভালোমতো চিকিৎসা করতে অনেক টাকার দরকার মনে হচ্ছে। জানি না কীভাবে চিকিৎসার টাকা জোগাড় করব। আমরা শুধু দুই বোন, নিজেদের সংসার টেনেটুনে চালাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী মাকে সঞ্চয়পত্র করে দিয়েছিলেন, সেখান থেকে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা তোলা যায়। কিন্তু চিকিৎসায় অনেক বেশি খরচ হচ্ছে। অনেক দিন মা ঠিকমতো গান গাইতে পারছেন না। আর গাইতে না পারলে তো আয়রোজগারও নাই। আপাতত ঋণ করে মাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।’