আজ সংগীতশিল্পী সিঁথি সাহার জন্মদিন। নতুন স্বাভাবিকে ঘরে বসে গাইছেন তিনি। বের হচ্ছে নতুন গানও। জন্মদিন ও কাজ নিয়ে কথা হলো ‘প্রথম আলো’র সঙ্গে।
জন্মদিন কীভাবে কাটছে?
কোনো আয়োজন নেই। বাসায়ই সময় কাটছে। মাঝেমধ্যে বন্ধুবান্ধব, পরিচিতজনদের কাছে থেকে শুভেচ্ছা পাচ্ছি—এইটুকুই। কারণ, অনেক বছর হলো জন্মদিনে কোনো আয়োজন করি না। ছোটবেলায় বিশেষ করে স্কুলজীবনে মা–বাবা আমার জন্মদিনটা খুব জাঁকজমকভাবে উদ্যাপন করতেন। বড় হওয়ার পর ওইভাবে আর জন্মদিন উদ্যাপন করি না। করতে ভালোও লাগে না। তবে এই জন্মদিনের প্রথম প্রহরে অন্য রকম একটি সারপ্রাইজ পেয়েছি।
কী সারপ্রাইজ?
বৃহস্পতিবার রাতে চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ডের অনুষ্ঠান ছিল। ওই অনুষ্ঠানে আমি ও চঞ্চল চৌধুরী একসঙ্গে পারফর্ম করেছি। রাত ১২টার পর অনুষ্ঠান শেষে আমাকে অবাক করে দিয়ে জন্মদিনের কেক কাটে চ্যানেল আই। কারণ, আয়োজন সম্পর্কে আমি জানতাম না। আমি খুবই অবাক হয়েছি। বুঝতেই পারিনি, তাঁরা আমাকে নিয়ে এমন একটি আয়োজন করবেন। অনুষ্ঠানে ফাহমিদা নবী, সামিনা চৌধুরী, হাবিব ওয়াহিদসহ অনেকেই ছিলেন। ওই অনুষ্ঠানেই তাহসান, কনা, ইমরানসহ অনেকেই আমাকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। একটা উত্সবের মতো ছিল মুহূর্তটি। এত এত গুণী মানুষের সামনে চ্যানেল আই আমাকে যে সম্মান জানিয়েছে, তা কখনো ভুলব না। এটি আমার জন্য অনেক বড় আশীর্বাদ।
‘চ্যানেল আই মিউজিক অ্যাওয়ার্ড’ অনুষ্ঠানে আপনি ও চঞ্চল চৌধুরী গান করলেন। একজন অভিনেতার সঙ্গে গাওয়ার অভিজ্ঞতা কেমন?
চঞ্চল চৌধুরী যেমন একজন ভালো অভিনেতা, তেমনি ভালো গানও করেন। আগেই তাঁর গাওয়া বেশ কয়েকটি গান শুনেছি। এই অনুষ্ঠানকে ঘিরে তাঁর সঙ্গে গান করার সুযোগ হলো। ‘তন্দ্রা হারা’ ও ‘তুমি যে আমার কবিতা’ গান দুটি কাভার করেছি আমরা। মঞ্চে একসঙ্গে গাইলাম। তাঁর সঙ্গে প্রথমবারের মতো গান গাওয়া বেশ উপভোগ করেছি।
এখন পর্যন্ত জন্মদিনের সেরা উপহার কী?
আয়োজন করে এখন জন্মদিন উদ্যাপন করি না। কিন্তু উপহার আসা বন্ধ হয়নি। প্রতি জন্মদিনেই প্রচুর উপহার পাই। এখন পর্যন্ত জন্মদিনের সেরা উপহার একটি হারমোনিয়াম। বেশ কয়েক বছর আগে এক জন্মদিনে এটি উপহার পেয়েছিলাম। এ ছাড়া ছোটবেলার জন্মদিনে বাবার কাছ থেকে অন্য রকমের উপহার পেতাম। জন্মদিনের সকালে ঘুম থেকে ওঠার আগেই বাবার কাছ থেকে অনেকগুলো গন্ধরাজ ফুল উপহার পেতাম। ওই সময়ের জন্মদিনে তিন ধরনের জামা উপহার পেতাম। সকালে, দুপুরে ও রাতে ভাগ ভাগ করে জামা তিনটি পরতাম। ছোটবেলার জন্মদিনগুলো খুব মনে পড়ে। খুব মিস করি।
এই সময়ে আপনার ব্যস্ততা কেমন?
কম হলেও কিছু কাজ আমি করছি। ঢাকার মধ্যে ইনডোর শো করছি। এ ছাড়া অনলাইনে দেশ ও দেশের বাইরের অনুষ্ঠানে অংশ নিচ্ছি। এর বাইরে সিনেমার প্লেব্যাকে কাজ করছি।
এর মধ্যে কী কী কাজ করলেন?
কলকাতার রাজ বর্মণের সঙ্গে বাংলাদেশের দুটি সিনেমার গান কাভার করলাম। কয়েকটি কাজ হাতে আছে। সপ্তাহখানেকের মধ্যে তাহসান খানের সঙ্গে ‘নাড়া’ নামে একটি সিনেমায় ডুয়েট করব। ডিসেম্বর মাসের শেষে ভারতের সংগীতশিল্পী অনুপ জালোটার সঙ্গে একটি গজল গাওয়ার কথা আছে। আরও আগে করার কথা ছিল, কিন্তু করোনার কারণে পিছিয়েছে।
শাফকাত আমানত আলীর সঙ্গে তিনটি গানের ভিডিও করার কথা ছিল। তার খবর কী?
তিনটি গান আগেই রেকর্ডিং হয়ে গেছে। এখন ভিডিও বাকি। কিন্তু করোনার কারণে বারবার পিছিয়ে গেছে। এবার সিদ্ধান্ত হয়েছে, ডিসেম্বর মাসের শেষের দিকে যেভাবেই হোক একটি গানের ভিডিও তৈরি করা হবে।
একটি টেলিভিশনে অনলাইনে দেশ-বিদেশের শিল্পীদের সঙ্গে ‘সিঁথির অতিথি’ নামে একটি অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন। কেমন উপভোগ করেন অনুষ্ঠানটি?
দারুণ উপভোগ করি। কারণ, এই অনুষ্ঠানের মাধ্যমে উদিত নারায়ণ, কবিতা কৃষ্ণ মূর্তি, শাফকাত আমানত আলী, সাধনা সারগামের মতো শিল্পীদের সঙ্গে কথা বলার, গল্প করার সুযোগ হয়েছে। জীবনেও ভাবিনি এমন একটি অনুষ্ঠানে আমি উপস্থাপনা করব, আর তাঁরা সেই অনুষ্ঠানে অতিথি হয়ে আসবেন। কখনো কল্পনা করিনি তাঁদের কাছে পৌঁছাতে পারব। অনুষ্ঠানটি করার মাধ্যমে এখন মাঝেমধ্যে ফোনে ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই সব তারকার সঙ্গে আমার কথা হয়, গল্প হয়। এটি আমার জন্য অনেক বড় অর্জন।
নতুন স্বাভাবিকে বাসায় কীভাবে সময় কাটে?
বাইরে কাজ এখন কম। তারপরও বাসায় বসে অনলাইনে কিছু কিছু কাজ করি। নিজের একটি ইউটিউব চ্যানেল খুলেছি। চ্যানেলটির জন্য নিজেই ছোট ছোট কনটেন্ট তৈরি করি। এ ছাড়া আমি রান্না করতে পছন্দ করি। ফাঁকে ফাঁকে শরীরচর্চাও চালিয়ে যাচ্ছি।