- বরেণ্য সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলী আকবর রুপু আর নেই।
- মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর।
- তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
দেশের বরেণ্য সুরকার ও সংগীত পরিচালক আলী আকবর রুপু আর নেই। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৫৭ বছর। তিনি স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন।
আলী আকবর রুপুর স্ত্রী নারগিস আকবর প্রথম আলোকে জানান, আজ আসর নামাজের পর গুলশান আজাদ মসজিদে তাঁর প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিতীয় জানাজা হবে মগবাজারে বিশাল সেন্টারের পেছনে শ্রুতি স্টুডিওতে মাগরিবের নামাজের পর। এরপর আলী আকবর রুপুকে আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হবে।
আলী আকবর রুপুর মেয়ে ফারিয়া নাজ প্রথম আলোকে জানান, তাঁরা বাবা অনেক দিন থেকেই হৃদ্রোগে ভুগছিলেন। তাঁর কিডনির সমস্যা ছিল। মাস সাতেক ধরে তাঁর কিডনির ডায়ালাইসিস করা হয়েছে। ৯ ফেব্রুয়ারি কিডনির ডায়ালাইসিস করার সময় তাঁর স্ট্রোক হয়। পাশাপাশি হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন রুপু।
ফারিয়া নাজ আরও জানান, হাসপাতাল থেকে আলী আকবর রুপুকে ভেন্টিলেশন সাপোর্ট দেওয়ার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা তাতে রাজি হননি।
আলী আকবর রুপুর সুর ও সংগীত পরিচালনায় অসংখ্য গান জনপ্রিয় হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো কুমার বিশ্বজিতের গাওয়া ‘একদিন কান্নার রোল পড়বে আমার বাড়িতে’, ‘যারে ঘর দিলা সংসার দিলা রে’, ‘দস্যু যেমন মুখোশ পরে প্রবেশ করে ঘরে’, ‘দরদিয়া’, ‘এ অনিশ্চয়তা’, ‘এ পশলা বৃষ্টি’। এন্ড্রু কিশোরের গাওয়া ‘পদ্মপাতার পানি নয়’, শাকিলা শর্মার ‘তোমাকে দেখলেই মৌনতা ভুলে যাই’, সাবিনা ইয়াসমিন, কনক চাঁপা ও সামিনা চৌধুরীর ‘সব চাওয়া কাছে পাওয়া’, সাবিনা ইয়াসমীনের ‘প্রতিটি শিশুর মুখ’, নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরীর ‘কবিতার মতো মেয়েটি, গল্পের মতো ছেলেটি’, ‘সামিনা চৌধুরীর ‘জানতে চেয়ো না কোন সে বেদনাতে’, দিনাত জাহান মুন্নীর ‘পুরোনো কাপড়ের মতো আমি আজ অবহেলিত’, মৌটুসীর ‘বারে বারে পোড়া বাঁশি এত রাতে আর ডেকো না’। তিনটি টিভি চ্যানেলের উদ্বোধনী সংগীত তৈরি করেছেন তিনি। গানগুলো হলো একুশে টিভির ‘নব শতকের সম্ভাবনার দিনে’, এনটিভির ‘বাংলাদেশর বিজয়ের আলো জ্বেলে’ আর এটিএন বাংলার ‘দিনরাত এটিএন এশিয়া ইউরোপে’।
জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’তে আলী আকবর রুপু প্রায় ২৫ বছর ধরে বিভিন্ন গানের সুর ও কম্পোজ করেছেন। ১৯৮২ সালের দিকে ‘উচ্চারণ’ ব্যান্ডে কিছুদিন গিটার ও কি-বোর্ড বাজিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে উচ্চারণ ছেড়ে দেন। তারপর ‘উইন্ডস’ নামে একটি ব্যান্ড গঠন করেছিলেন। অবশ্য তাঁর পরিচয় মূলত গীতিকার ও সুরকার হিসেবে। নিজ কণ্ঠে গেয়েছেন হাতে গোনা কয়েকটি গান। দেশের স্বনামধন্য শিল্পীদের প্রায় সবাই তাঁর সুর করা গানে কণ্ঠ দিয়েছেন।