বরেণ্য গীতিকার, সুরকার, সংগীত পরিচালক ও বাদ্যযন্ত্রশিল্পী আলাউদ্দীন আলীর শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁর রক্তচাপ কমে যাচ্ছে, জ্ঞানের মাত্রা কমে যাচ্ছে, ফুসফুসের অবস্থা একবারেই নাজুক। তিনি এখন আর তেমন সাড়া দিচ্ছেন না। পাশাপাশি রক্তে সংক্রমণও অনেক বেড়ে গেছে। এ পরিস্থিতিতে যেকোনো দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। আজ শনিবার বেলা তিনটায় এমনটাই জানালেন মহাখালীর ইউনিভার্সেল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী। আলাউদ্দীন আলী এখন এই হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে আটটায় তাঁকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। আজ দুপুরে সাতজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের সমন্বয়ে একটি মেডিকেল বোর্ড আলাউদ্দীন আলীর চিকিৎসা পর্যালোচনা করেছে।
এর আগে ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী জানান, লাইফ সাপোর্ট দেওয়ার পর ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় পার হলেও আলাউদ্দীন আলীর শারীরিক অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি। তাঁর জ্বরের মাত্রা বেড়েছে। রক্তে শ্বেতকণিকার মাত্রা অনেক বেড়ে গেছে।
এদিকে গতকাল সকাল সাতটার পর থেকে আলাউদ্দীন আলীর রক্তে কার্বন ডাই–অক্সাইডের মাত্রা বাড়তে থাকে। পাশাপাশি রক্তচাপ ও জ্ঞানের মাত্রা একেবারেই কমে যায়। একই সময়ে হঠাৎ তাঁর হৃৎস্পন্দন বন্ধ হয়ে যায়। এই অবস্থাকে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বলা হয়। দ্রুত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়ার ১৫ মিনিট পর তাঁর হৃৎস্পন্দন ফিরে আসে।
আলাউদ্দীন আলী ফুসফুসের প্রদাহ ও রক্তে সংক্রমণ সমস্যায় ভুগছেন। তাঁর স্ত্রী ফারজানা মিমি জানান, গত মঙ্গলবার রাতে আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুলের মৃত্যুসংবাদ পাওয়ার পর আলাউদ্দীন আলী বাসায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। তখন তাঁর খুব শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারছিলেন না। পাশাপাশি তাঁর উচ্চ মাত্রায় জ্বর ছিল। সবকিছু মিলিয়ে অবস্থা জটিল আকার ধারণ করে। তাঁকে বাসায় রাখা নিরাপদ মনে করেননি, তাই দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আর হাসপাতালে আনার পর দেখা যায়, আলাউদ্দীন আলীর হার্টের রেট অনেক বেশি।
হাসপাতালে আনার পর আলাউদ্দীন আলীকে চিকিৎসকেরা প্রয়োজনীয় পরীক্ষা শেষে রাত সাড়ে ১১টায় দ্রুত আইসিইউতে ভর্তি করেন।
আলাউদ্দীন আলী বাংলা গান, বিশেষ করে বাংলা চলচ্চিত্রে শ্রোতাপ্রিয় অসংখ্য গান তৈরি করেছেন। তিনি একই সঙ্গে সুরকার, সংগীত পরিচালক, বেহালাবাদক ও গীতিকার। গান লিখে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও পেয়েছেন। গুণী এই মানুষটির জন্ম ১৯৫২ সালের ২৪ ডিসেম্বর মুন্সিগঞ্জের বিক্রমপুরের টঙ্গিবাড়ী থানার বাঁশবাড়ী গ্রামে। তাঁর বাবা ওস্তাদ জাদব আলী। মায়ের নাম জোহরা খাতুন।