ঈদে ২১টি নাটকে অভিনয় করেছেন নিলয় আলমগীর। বিনোদনমূলক এই নাটকগুলোর বেশির ভাগ নিয়ে দর্শকদের নানা মন্তব্যের মুখে পড়তে হয়েছে। ঈদের ছুটি শেষে আবারও ফিরেছেন শুটিংয়ে। অভিনীত নাটক ও ব্যক্তিগত বিভিন্ন প্রসঙ্গে কথা বললেন এই অভিনেতা
ঈদের পর শুটিংয়ে ফিরলেন, ঈদের কাজ নিয়ে এখনো কতটা সাড়া পাচ্ছেন?
এখনো ঈদের কাজগুলোই দর্শকেরা দেখছেন। ১৮টি নাটক ইউটিউবে প্রচারিত হয়েছে। এখনো নিয়মিতই মুক্তি পাচ্ছেন। ‘মি. কিপটা’, ‘অস্থির দম্পতি’, ‘জনম জনম’, ‘সাইড ক্যারেক্টর’সহ বেশির ভাগ এন্টারটেইনিং নাটকে অভিনয় করেছি। ক্রিটিক বা সিরিয়াস কাজ করিনি।
অভিনেতা হিসেবে সব ধরনের কাজ না করার সিদ্ধান্ত কি আপনার নাকি চাপিয়ে দেওয়া হয়?
এন্টারটেইনিংয়ের বাইরে কাজ করিনি। কারণ, ওগুলোর ভিউ হয় না। অনেকে বলে ভালো হয়েছে, এই হয়েছে, সেই হয়েছে কিন্তু ভিউ নেই। ১০ জন মানুষ যে কাজ নিয়ে প্রশংসা করেন, সেটা আরও অনেকেই দেখেছেন। অনেক ভিউ হওয়ার কথা। বুঝি না কেন ভিউ হয় না। যে কাজটা সবচেয়ে বেশি ভালো হয়েছে, প্রশংসা করছে, ভিউ কম কেন থাকবে? কাজ ভালো হয় কিন্তু ভিউ কম—এটা একধরনের হিপোক্রেসি কথাবার্তা। ভালো কাজ সারা জীবন মানুষের মনে থাকবে। ভালো কাজ দর্শক দেখে না—এটা ভোগাস কথাবার্তা। ভালো কাজের ভিউ হয় না, সেটা ভালো কাজ হলো কীভাবে?
শুধু বিনোদনমূলক নাটকের বাইরে আপাতত কাজ করতে চাইছেন না?
শিল্পী হিসেবে সব ধরনের কাজই করব। এমনও হতে পারে পরের ঈদে ক্রিটিকসদের জন্য কাজ করলাম। যেগুলো অনেক দিন থাকবে। দর্শক মনে রাখবেন।
অভিনীত কাজগুলো নিয়ে কি আপনি খুশি?
আমি এখন যে নাটকগুলো করছি, সেগুলো নিয়ে বলা হয়, কাজগুলোর প্রভাব দীর্ঘদিন থাকে না। এগুলো ভিউজের বিচারে পপুলার হয়। দর্শক দেখে ভুলে যান। কিন্তু ভিউ হয়। যাহোক আমি আমার কাজগুলো নিয়ে খুশি। এই কাজগুলো স্বল্প সময়ের জন্য দর্শক মনে রাখবেন। এই গল্পগুলো সবাই করতে চায় না, আমি করেছি। এ জন্য বাজে মন্তব্যও দেখেছি।
কী ধরনের মন্তব্য চোখে পড়েছে?
ভালো খারাপ দুই ধরনের প্রশংসাই পেয়েছি। ব্যাড কমেন্টের মধ্যে অনেকেই লিখেন, কাজটি ভালো না। বাজে, সস্তা কাজ বাদ দেন, ভালো কাজ করেন। যাঁরা মন্তব্য করেন, তাঁরাই ভালো কাজ করলে দেখবেন না। এ ধরনের দর্শকদের হিপোক্রেট মনে হয়। তাঁরা মুখে বলবেন এক কথা, কাজ করবেন আরেকটা। তাঁরা থার্ড ক্লাস কাজ বলে গালাগাল করেন, সেই কাজটিই দেখবেন।
আপনার অভিনীত বেশির ভাগ নাটকের অভিনেত্রী জান্নাতুল হিমি, এটি নিয়ে কোনো মন্তব্য শুনতে হয়?
মন্তব্যে অনেকেই গালাগাল করেন কেন একই নায়িকার সঙ্গে বারবার অভিনয় করি, মিডিয়াতে কী আর কোনো নায়িকা নেই—নিয়মিত এসব কথা শুনি।
কেন একই নায়িকার সঙ্গে বারবার পর্দায় দেখা যায়?
এর বেশ কিছু কারণ আছে। প্রথমত, সহশিল্পী হিসেবে হিমি আমার জন্য খুবই ভালো। দর্শক আমাদের জুটিকে পছন্দ করেছেন। আমাদের নাটকের ভিউ হয়। আর অন্য অনেক নায়িকা আছেন, যাঁরা শিডিউল নিয়ে ঝামেলা করেন। অনেকেই ঠিকমতো ডেট দিতে চান না। এ কারণেই হিমির সঙ্গে আমার বেশি কাজ হয়। ডেট নিয়ে ঝামেলা নেই। আমাদের বোঝাপড়া ভালো। আমাদের নাটক দর্শক পছন্দ করেন। এটাই মূল একটা কারণ।
আপনার কাজ দেখে স্ত্রী কী বলেন?
সে আমার কাজের সবচেয়ে বড় ক্রিটিকস। ভালো হলে ভালো বলে, মন্দ হলে মন্দ বলে। চিত্রনাট্য পড়ে। তার মতামত গ্রহণ করি।
আপনি তো একটি প্রোডাকশন হাউস দাঁড় করিয়েছেন, কেমন কাজ হচ্ছে?
ডিরেকশন দেওয়ার ইচ্ছা নেই। শখ থেকেই মাঝেমধ্যে নিলয় প্রোডাকশন হাউস থেকে প্রোডাকশন করি। এই উৎসাহ সালাউদ্দিন লাভলু ভাইয়ের কাছ থেকে পেয়েছি। তখন আমি মাঝেমধ্যেই মনিটরের সামনে বসতাম, শিখতাম। এখান থেকে ডিরেকশন শিখি। লাভলু ভাই একটা দৃশ্যের পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব দেয়। কাজ করে মনে হয় ডিরেকশন দেওয়া যায়। পরে ইউটিউব চ্যানেল করি। এভাবেই শুরু। কিন্তু নির্মাণের তেমন ইচ্ছা নেই। এটা অনেক বড় কাজ।
আবার শুটিংয়ে ব্যস্ত হচ্ছেন। এর মধ্যে অন্য শিল্পীর কোনো নাটক দেখে ভালো লেগেছে?
আবার শুটিং শুরু করেছি। টানা ব্যস্ততা থাকবে। আর এর মধ্যে কয়েকটি নাটক দেখেছি। মুশফিক আর ফারহান অভিনীত ‘দরদ’ নাটকটি খুবই ভালো লেগেছে। ফারহান অসাধারণ অভিনয় করেছে।
দেশের শিল্পীরা সহজেই অন্যদের প্রশংসা করতে চান না...
আমরা সবাই কমবেশি সবার কাজ দেখি। কিন্তু কেউ হয়তো প্রশংসা করতে চান না। কিন্তু অ্যাপ্রিসিয়েশনটা খুবই দরকার। আমরা বলিউডের তারকারা ভালো করলে প্রশংসা করি কিন্তু সহকর্মীরা ভালো করলে চুপ থাকি। অথচ এই অ্যাপ্রিসিয়েশনটাই বেশি দরকার।