‘আমি একটা পাগল মানুষের সংসার করি, পাগল ডিরেক্টরের কাজ করেছি। সেটার শাস্তি ভোগ করছি। আমাদের সিনেমার শুটিং হয়ে গেছে, ডাবিং হয়ে গেছে। রিলিজও পেয়ে গেছে, বুসানেও চলে গেছে। এখন হঠাৎ করে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর স্বপ্নে একটা সিন আসছে। সেই সিনটা করতেছি’, সম্প্রতি নিজের ভেরিভায়েড ফেসবুক পেজে পোস্ট করার এক ভিডিওতে বলছিলেন অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা। এ কথা এখন হয়তো কারও জানার বাকি নেই, প্রথমবার সিনেমায় অভিনয় করেছেন নির্মাতা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। নিজের নির্মাণে ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’ ছবিতে স্ত্রী, অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশার সঙ্গেই পর্দা ভাগ করে নিয়েছেন তিনি। শুধু তাঁরা নন, এই ছবিতে আছেন তাঁদের একমাত্র কন্যা ইলহামও। সব মিলিয়ে দারুণ আবেগ, আগ্রহের একটি চলচ্চিত্র ‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’।
অভিনয় করছেন মোস্তফা সরয়ার ফারুকী—‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’ বা ‘অটোবায়োগ্রাফি’ নিয়ে আগ্রহের জন্য একটি তথ্যই যথেষ্ট। ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকির ‘মিনিস্ট্রি অব লাভ’ প্রজেক্টের অরিজিন্যাল ফিল্মটির ঘোষণার পর থেকে দর্শক অপেক্ষায় ছিলেন অভিনেতা ফারুকীকে দেখার জন্য। দেখে মুগ্ধও হয়েছেন দর্শক। বুধবার রাতে আরেকটি চমক ছিল দর্শকের জন্য। সিনেমার খুদে শিল্পীকে পাওয়া গেল ছবির একটি গানে। যেটার শিরোনাম ‘জোছনার ফুল’। গানটি প্রকাশিত হয়েছে অন্তর্জালে। গানটিকে বলা হচ্ছে, সন্তানের প্রতি মায়ের চিঠি। পর্দায় যেটাকে উপস্থাপন করেছেন তিশা ও ইলহাম।
গানটি নিয়ে তিশার ভাষ্য এমন, ‘এই গানের প্রতিটি লাইনই আমার অনুভূতির কথা বলেছে। এটা নিয়ে আলাদা করে বর্ণনা দেওয়ার বা বলার কিছু নেই। এই গানের কথাগুলো একটা চিঠি। জোছনার ফুল ইলহামের জন্য লেখা আমার চিঠি। বৃহৎ অর্থে এটা সব কন্যার জন্যই তার মায়ের চিঠি।’
অন্যদিকে গানটি শুনে এবং স্ত্রী-কন্যাকে পর্দায় দেখে আপ্লুত নির্মাতা ফারুকী। তিনি বললেন, ‘আমি জানি না আমার অনুভূতি গুছিয়ে লিখতে পারব কি না। কিন্তু এই গান আমাদের জন্য আজীবন একটা বিশেষ কিছু হয়ে থাকবে। আমাদের ইলহামের প্রথম কোনো প্রফেশনাল কাজে অ্যাপিয়ারেন্স এই মিউজিক ভিডিওতে।’
‘মেঘ থেকে কালি নিয়ে লিখছি তোকে/ প্রশ্নের পাহাড়ে দাঁড়িয়ে থেকে/ অকারণ দাপটে উত্তর চুপ/ কত চাপা হাহাকার কত বিদ্রূপ’—এমন কথায় সাজানো গানটি লিখেছেন ও গেয়েছেন ‘চিরকুট’ ব্যান্ডের প্রধান শারমিন সুলতানা সুমি। যৌথভাবে সুর করেছেন সুমি ও পাভেল আরিন। সংগীতায়োজনে পাভেল আরিন।
‘সামথিং লাইক অ্যান অটোবায়োগ্রাফি’ নির্মিত হয়েছে চরকির বিশেষ আয়োজন ‘মিনিস্ট্রি অব লাভ’–এর অংশ হিসেবে। এতে ১২ জন নির্মাতা ভালোবাসার গল্প নিয়ে ১২টি সিনেমা বানাচ্ছেন। পুরো প্রজেক্টের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন ফারুকী। আর তিনি নিজেও দুটি সিনেমা বানিয়েছেন। একটি এই ‘অটোবায়োগ্রাফি’, অন্যটির নাম ‘মনোগামী’।
গেল মাসে ‘অটোবায়োগ্রাফি’র প্রিমিয়ার হয় বুসান চলচ্চিত্র উৎসবে। ৮ অক্টোবর বাংলাদেশ সময় বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে বুসান সিনেমা সেন্টারের সিনেমা থেকে ‘অটোবায়োগ্রাফি’র প্রথম শো প্রদর্শিত হয়। বিশ্বের নানা প্রান্ত থেকে আগত সিনেমা নির্মাতা, প্রযোজক, অভিনয়শিল্পী, কলাকুশলীসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন প্রদর্শনীতে। ৯ ও ১১ অক্টোবর লোটেতে প্রদর্শিত হবে ‘অটোবায়োগ্রাফি’র দ্বিতীয় ও তৃতীয় শো। এশিয়ার অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ এ উৎসবের ২৮তম আসরের প্রতিযোগিতা বিভাগ ‘জিসোক’-এ নির্বাচিত হয়েছিল সিনেমাটি।