২০ নভেম্বর ওয়েব সিরিজ ‘ফ্রেঞ্জি’ এবং ২৯ নভেম্বর চলচ্চিত্র ‘ভয়াল’—দেড় সপ্তাহের ব্যবধানে দুটি কাজ নিয়ে পর্দায় আসছেন অভিনেত্রী আইশা খান।
হুমায়ূন আহমেদের পাঁড় ভক্ত মিলা। ছন্নছাড়া হিমুর প্রতি ভীষণ অনুরাগ। মিলার চাওয়া, তার জীবনেও হিমুর মতো কোনো তরুণ আসুক। বেখেয়াল হিমু যেমন হলুদ পাঞ্জাবি পরে, যার পকেট থাকে না; খালি পায়ে শহর চষে বেড়ায়, কখনো পার্কে ঘুমায়। সেই তরুণও তা–ই করবে। শেষ পর্যন্ত মিলার জীবনে কি হিমু আসে? জানতে দেখতে হবে ‘ফ্রেঞ্জি’; সিরিজটি মুক্তি পাবে ২০ নভেম্বর। বিঞ্জ অরিজিনাল সিরিজটি নির্মাণ করেছেন তরুণ নির্মাতা জাহিদ প্রীতম।
সিরিজে মিলার চরিত্রে প্রাণ দিয়েছেন অভিনেত্রী আইশা খান। মিলা পেশায় বিজ্ঞাপনী সংস্থার কপিরাইটার। বই পড়ার পাশাপাশি বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিতে ভালোবাসে।
চরিত্রটি নিয়ে গতকাল আইশা খান প্রথম আলোকে বলেন, বইয়ের হিমু জ্যোৎস্নাবিলাস করে। মিলা চায়, সেও তার জীবনে আসা ছেলের সঙ্গে জ্যোৎস্নাবিলাস করবে। মিলার সঙ্গে আইশা খানের মিল কতটা? এমন প্রশ্নে এই তরুণ অভিনেত্রী বলেন, দুজনই হুমায়ূন আহমেদের বই পছন্দ করেন। এর বাইরে দুজনের আর কোনো মিল নেই।
এ সময়ের বন্ধুত্বের গল্প নিয়ে নির্মিত ‘ফ্রেঞ্জি’ সিরিজে একদল তরুণের জীবনের সুখ-দুঃখের পাশাপাশি রিলেশনশিপ, সিচুয়েশনশিপকেও পর্দায় তুলে ধরেছেন নির্মাতা। নিখাঁদ বন্ধুত্ব নিয়ে ঢাকায় খুব একটা কাজ দেখা যায় না।
ফলে কাজটা নিয়ে আশাবাদী আইশা খান বলেন, একই ধরনের কনটেন্ট অনেক সময় দর্শকের ভালো লাগে না। মাঝেমধ্যে ফ্রেঞ্জির মতো কনটেন্ট দেখা উচিত। এটা খুব বেশি ভাবাবে না, খুব বেশি রহস্য থাকবে না। মস্তিষ্ক নির্ভার থাকবে। সমসাময়িক ওটিটির কনটেন্টের মধ্যে এটি আলাদা।
ওয়েব সিরিজটি মুক্তির দেড় সপ্তাহের ব্যবধানে মুক্তি পাচ্ছে আইশা খান অভিনীত চলচ্চিত্র ‘ভয়াল’। পরিচালক বিপ্লব হায়দারের এই সিনেমায় এক গ্রামীণ কিশোরীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন শহরে বেড়ে ওঠা আইশা খান। চরিত্রটি নিয়ে তিনি বলেন, ‘গ্রামীণ কিশোরীর চরিত্রে অভিনয় করাটা আমার জন্য কঠিন ছিল। আমি গ্রাম খুব কম দেখেছি।’
গত বছরের ডিসেম্বরে সিলেটের এক খাসিয়াপুঞ্জিতে সিনেমার শুটিং করেছেন আইশা খান। টানা ১৩ দিন। ‘শুটিংয়ের সময় ফোন থেকে যত বেশি দূরে থাকা যায়, তত ভালো। শুটিংয়ের লোকেশনে নেটওয়ার্ক ছিল না; এটা অনেক বেশি সাহায্য করেছে।
পরিচালক যেভাবে চরিত্রকে ফুটিয়ে তুলতে চাচ্ছিলেন, হয়তো সারাক্ষণ ফোন নিয়ে থাকলে সেটা সম্ভব হতো না।’ ভয়াল–এ আইশার বিপরীতে অভিনয় করেছেন ইরফান সাজ্জাদ। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন গোলাম ফরিদা ছন্দা।
‘ফ্রেঞ্জি’ ও ‘ভয়াল’—দুটো কাজ নিয়েই আশাবাদী আইশা। বাকিটা তিনি দর্শকের ওপর ছেড়ে দিতে চান।
নাটকে নিয়মিত
জাহিদ প্রীতমেরই নাটক ‘বুক পকেটের গল্প’ নাটকের ‘মালিহা’ চরিত্রে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন আইশা খান। চরিত্রটি আপনার ক্যারিয়ারে কতটা বাঁকবদল করেছে?
আইশার ভাষ্য, ‘নাটকে গল্প পছন্দ হচ্ছিল না কিংবা আমি যে ধরনের গল্প পছন্দ করি, সে ধরনের গল্পে পরিচালকেরা ভাবছিলেন না। কাজটা মুক্তির পর ভাবনাটা বদলে গেছে। ভালো গল্পে কাজের সুযোগ পাচ্ছি। পাশাপাশি নাটকে নিয়মিত হওয়ার উৎসাহও পেয়েছি।’
‘কাইজার’, ‘মারকিউলিস’–এর মতো ওয়েব সিরিজে কাজ করে পরিচিতি পেয়েছেন আইশা, ‘ওটিটিতে আমাকে নিয়মিত পাওয়া গেছে। তবে বছরে দুটির বেশি কাজ মুক্তি পায়নি। কিন্তু কাজগুলো অনেক আত্মতৃপ্তি নিয়ে করেছি। যতটা সময় আমাকে পর্দায় দেখা যাক না কেন, প্রতিটি কাজেই আত্মতুষ্টি ছিল।’
পরপর দুটি ওয়েব সিরিজ ও চলচ্চিত্র এলেও এই মুহূর্তে নাটকেই বেশি কাজ করছেন আইশা। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমার অভিনয়ে অনেক ভুল আছে। ভুল–ত্রুটিগুলো তাড়াতাড়ি সংশোধন করা উচিত। এ জন্য নিয়মিত চর্চা করা উচিত। শুধু বই পড়লেই হয় না, ব্যবহারিক ক্লাসও জরুরি। আমি যত বেশি নির্মাতা ও শিল্পীর সঙ্গে কাজ করব, তত বেশি শিখতে পারব, জানতে পারব। নতুনভাবে নিজেকে আবিষ্কার করতে পারব। ওই তাগিদ থেকেই নাটকে নিয়মিত হয়েছি।’
আসছে ভালোবাসা দিবসে বেশ কয়েকটি নাটকে কাজ করছেন আইশা খান। ভালোবাসা দিবসে নাটকের বাইরে কিছু করছেন না।