নাটকে এখন নিয়মিত নন জাহিদ হাসান। গল্পও খুব একটা পছন্দসই নয়, তাই এমন সিদ্ধান্ত। খুব বেছে বেছে হঠাৎ হঠাৎ তাঁর অভিনয়ের খবরটা আসে। তবে এখন টেলিভিশন নাটকের চেয়ে ওটিটিতে বেশি আগ্রহ এই অভিনয়শিল্পীর।
কারণ হিসেবে জানালেন, বেশ যত্ন ও আন্তরিকতা নিয়ে ওটিটির কাজগুলো হয়। সময় নিয়ে এসব কাজ করার কারণে, মানের ক্ষেত্রেও খুব একটা আপস করে না পরিচালক ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান। শিগগিরই ওটিটির দুই পরিচালকের তিনটি নতুন কাজ শুরু করছেন। এর মধ্যে দুটি ওয়েব সিরিজ ও একটি ওয়েব ফিল্ম। এরই মধ্যে দুই পরিচালকের সঙ্গে আলাপ–আলোচনা চূড়ান্ত হয়েছে।
জাহিদ হাসান ওটিটিতে সর্বশেষ অভিনয় করেন ‘মাফিয়া’তে। এরপর তাঁকে আর নতুন কোনো ওটিটি মাধ্যমের কাজে দেখা যায়নি। আগামী মাস থেকে কাজ শুরু হবে বলে জানালেন জাহিদ হাসান। রায়হান রাফীর দুটি এবং তানিম নূরের একটি কাজ। জাহিদ হাসান বললেন, ‘এখন তো টিভি নাটক আর করছি না। পরিবেশটাও আমার চাওয়ার মতো নাই। ওটিটিতে তাই মনোযোগী হচ্ছি।’
তিনটি কাজের মধ্যে রায়হান রাফীর ‘পালাবি কোথায়’–এর নাম বললেও বাকি দুটির নাম এখনই বলেননি। জানালেন, সম্ভাব্য নাম বদল হতে পারে। জানা গেছে, দুই পরিচালক রায়হান রাফী ও তানিম নূরের সঙ্গে প্রথমবার কাজ হতে যাচ্ছে। জাহিদ জানালেন, দুই পরিচালকের সঙ্গে এর আগে কাজের আলাপ হয়েছিল।
জাহিদ হাসান বললেন, ‘“সুড়ঙ্গ” ছবির সময়ও রাফীর সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। কিন্তু কাজটা করা হয়ে ওঠেনি। ওর সঙ্গে কথা বলে মনে হয়েছিল, আমাকে পছন্দ করে। কিন্তু আমার অনেক কিছুই যখন পছন্দ না হয়, তখন সেখান থেকে ফিরে আসি। তবে কথাবার্তায় এটা মনে হয়েছে, হি ইজ নাইস বয়। আমাদের দেশের একটা ছেলে যখন ভালো করে, প্রশংসিত হয়, আমার প্রস্তাব দেওয়া ওই চরিত্রটা আমার ভালো নাই–বা লাগতে পারে, কিন্তু ওর কাজ তো ভালো। এই ভালোটাই আমরা অনেক ক্ষেত্রে বলি না। তানিম নূরের সঙ্গেও দুটো কাজ হওয়ার কথা ছিল। এরপর বাজেট নিয়ে কি–যেন–কি হলো, তারপর আর এগোয়নি। তবে দুজনেই দারুণ মেধাবী, ওদের মধ্যে সম্মানবোধটাও অনেক বেশি। মানুষকে যে অনেক সম্মান দেয়—এটাই বেশি ভালো লাগে। ভালো কাজের ব্যাপারে ওদের অনেক চেষ্টা আছে। তবে আমার কাছে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে, সম্মানটা অনেক বেশি দেয়—আর এটাই আমার কাছে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’
নব্বইয়ের দশকে নাটকে অভিনয় করে জনপ্রিয়তা পান। পরে চলচ্চিত্রে নাম লিখিয়েও আলোচনায় আসেন। বলা যায়, দুই মাধ্যমেই সমান জনপ্রিয় এই অভিনেতা। তবে শুরুর পথচলাটা সহজ ছিল না। এই অভিনেতাকে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে, অদম্য সাহস সঞ্চয় করে অভিনয়ের পথে হাঁটতে হয়েছে। একের পর এক বাধা পেরিয়ে আজ তিনি ভক্তদের কাছে হয়ে উঠছেন অভিনেতা জাহিদ হাসান।
‘কোনো অর্জনই সহজ নয়’ জানিয়ে জাহিদ হাসান বলেন, অভিনয়ের শুরুতে ধৈর্য না ধরলে পথ পেরোনো সহজ হতো না। তিনি জানান, অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা তৈরি হওয়ার পরে অনেক ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে একটু একটু করে নিজেকে তৈরি করতে হয়েছে। সিরাজগঞ্জ থেকে অভিনয়ের প্রেমে পড়েন। মঞ্চে অভিনয় শিখতে ঢাকায় আসেন। ঢাকায় এসে পরিচিত অনেকের সহায়তা পাননি। কখনো মেসে থেকেছেন। খেয়ে না খেয়ে কষ্টে দিন পার করেছেন। এমন সময়ও গেছে, ভালো জামাকাপড় পরতে পারেননি। এগুলো তাঁকে এগিয়ে চলার প্রেরণা দিয়েছে। অচেনা পথে হেঁটে সফল হয়েছেন। জীবনকে নিজের মতো করে সাজিয়েছেন।’