‘বাবা, কেউ আমাকে ফলো করছে, তুমি আমার সঙ্গে কথা বলতে থাকো’

বাবা ও মেয়ের সম্পর্ক ঘিরে পরিচালক শিহাব শাহীন একটি নতুন ওয়েব ফিল্ম নির্মাণ করবেন—‘বাবা, সাম ওয়ান ফলোয়িং মি’। সিনেমাটিতে বাবার চরিত্রে অভিনয় করবেন আফজাল হোসেন আর মেয়ে তাসনিয়া ফারিণ। দেশ ও দেশের বাইরে দুই ধাপে শুটিং হবে ছবিটির। আগামী ১৭ আগস্ট থেকে অস্ট্রেলিয়ায় প্রথম ধাপের শুটিং শুরুর কথা।
ছবির গল্প সম্পর্কে পরিচালক বলেন, তাঁর নিজের মেয়ের সত্য একটি ঘটনার ছায়া অবলম্বনে তৈরি হবে এটি। তিনি বলেন, ‘আমার মেয়ে অস্ট্রেলিয়ায় সিডনি ইউনিভার্সিটিতে লেখাপড়া করে। পাশাপাশি চাকরিও করে।

মেয়ে শাদিদ শিহাব সফেনের সেলফিতে শিহাব শাহীন
ফেসবুক

হঠাৎ একদিন রাতে মেয়ে আমাকে ফোন দিয়েছে। তখন আমি ঘুমাচ্ছিলাম। মেয়ে কাজ থেকে ফিরছিল। ফোন করে সে আমাকে বলল, “বাবা, কেউ একজন আমাকে ফলো করছে, তুমি আমার সঙ্গে কথা বলতে থাকো।” আমি কথা বলতে থাকলাম। ওই রাতে এত দূরের দেশে মেয়ের জন্য কার কাছে সাহায্য চাইব, বুঝতে পারছিলাম না আমি।  খুব চিন্তিত হয়ে পড়েছিলাম। সেই ঘটনাকে ধরে গল্পটি লেখার চেষ্টা করেছি। তাতে আরেকটু ফিকশনাইজড করে, আরও চরিত্র, ঘটনা এনে গল্পটাকে একটু নাটকীয়তা করার চেষ্টা করেছি।’

এই পরিচালকের কথা, ছেলে-মেয়ে দেশের বাইরে থাকলে দেশে বাবাদের কেমন লাগে, সেই ব্যাপার গল্পে তুলে ধরার চেষ্টা আছে। ছবিতে বাবা জাফর চরিত্রে অভিনয় করবেন আফজাল হোসেন। তাঁর সঙ্গে প্রথম কাজ হবে শিহাব শাহীনের।

আফজাল হোসেন

শিহাব শাহীন বলেন, ‘আমার অনেক দিনের ইচ্ছা, আফজাল ভাইকে নিয়ে কাজ করা। সেই স্বপ্ন পূরণ হতে চলেছে। একসময় ফরীদি ভাই আমার কাজ পছন্দ করতেন। বিভিন্ন জায়গায় দেখা হলে বা ফোনে আমার কাজ নিয়ে কথা বলতেন, প্রশংসা করতেন, ভুলত্রুটি থাকলে ধরিয়ে দিতেন। কিন্তু তাঁর সঙ্গে আমার কাজ হয়নি। তিনি মারা যাওয়ার পর সেটি বুঝতে পেরেছি। আফসোস হয়েছে, তাঁর সঙ্গে যদি অন্তত একটি কাজও থাকত। এ জন্য আফজাল ভাইকে আর হাতছাড়া করতে চাই না। তাঁর মতো এত বড় মাপের অভিনেতার সঙ্গে কাজ করতে চাই। তাঁর সঙ্গে অন্তত একটা স্মৃতি থাকবে।’

পরিচালক বলেন, ‘এই চরিত্রে আফজাল ভাইকে দারুণভাবে মানায়। তাঁকে চিত্রনাট্য দেওয়া হয়েছে। তিনি সেটি পড়ে পছন্দ করেছেন। মোটামুটি কথাবার্তা চূড়ান্ত। তিনি কাজটি করবেন। তিনি আগামী ৮ সেপ্টেম্বর দেশের বাইরে যাবেন, তার আগে তাঁর অংশের শুটিং শেষ করা হবে।’

তাসনিয়া ফারিণ

কাজটি করার ব্যাপারে আফজাল হোসেন বলেন, ‘গল্পটি আমাকে পাঠিয়েছেন পরিচালক। আমি পড়েছি। চরিত্রটি মজার আছে। আমার করার ইচ্ছা আছে এটি। আমি কাজটি করতে চাই। তিনি পরিচালক হিসেবে ভালো। শিল্পীদের সব সময়ই একজন ভালো পরিচালকের সঙ্গে কাজ করার একটা আগ্রহ থাকে। অভিনয়টা অনেক গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে একজন ভালো পরিচালকের কাজের মধ্য দিয়ে। তিনি অত্যন্ত সংবেদনশীল হয়ে কাজ করেন। তিনি ভালো বানান। আমারও তাঁর কাজে আগ্রহ আছে। এখন দেখা যাক কী হয়। এতটুকুই।’

আফজাল হোসেনের মেয়ে বিজয়া চরিত্রটি করবেন তাসনিয়া ফারিণ। গল্পে বিজয়া অস্ট্রেলিয়ায় লেখাপড়া ও চাকরি করেন। এর আগে ‘লেডিস অ্যান্ড জেন্টেলমেন’ ওয়েব সিরিজে আফজাল হোসেনের সঙ্গে অভিনয় করেছেন তিনি।

আফজাল  হোসেন সম্পর্কে  ফারিণ বলেন, ‘এর আগে “লেডিস অ্যান্ড জেন্টেলমেন” সিরিজে আমার বসের চরিত্রে কাজ করেছেন। তাঁর সঙ্গে কাজ করতে গেলে অনেক কিছু শেখা যায়। আর্ট কালচার থেকে শুরু করে নানা বিষয়ে তাঁর কত যে জানাশোনা। সেটে থাকলে যতক্ষণই কথা বলেন, ততক্ষণই ভালো লাগে তাঁর কথা শুনতে। নানা ধরনের অভিজ্ঞতা হয় তাঁর কাছাকাছি থাকলে। সেটে থাকলে তাঁকে একটা বড় ছায়া মনে হয়।’


তবে এই কাজে কিছুটা চ্যালেঞ্জও আছে বলে মনে করেন ফারিণ, ‘বাবার সঙ্গে মেয়ের ওভার দ্য ফোনে কথা বলার অনেক দৃশ্য আছে। সেই দৃশ্যগুলো করতে কিছু চ্যালেঞ্জ আছে। কারণ, সহশিল্পীর সঙ্গে মুখোমুখি দৃশ্য করতে যতটা সহজ হয়, দূর থেকে সহশিল্পীর সঙ্গে সংলাপ দেওয়ার সময় উপযুক্তভাবে নিজের এক্সপ্রেশন বা অভিনয়টা অতটা সহজ নয়। এখানে সেটি একটা ব্যাপার আছে।’

আগামী ১৫ আগস্ট শুটিংয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় যাচ্ছেন ফারিণ। ১৭ আগস্ট থেকে শুটিং শুরু হবে। চলবে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত। ৩০ আগস্ট দেশে ফিরে বাকি অংশের কাজ হবে। এতে আরও অভিনয় করবেন খায়রুল বাসার।