‘পেয়ারার সুবাস’–এর পোস্টার থেকে। ছবি : প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সৌজন্যে
‘পেয়ারার সুবাস’–এর পোস্টার থেকে। ছবি : প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সৌজন্যে

চরকিতে ‘পেয়ারার সুবাস’

আট বছর আগে শুটিং শুরু হয়ে চার বছর আগে শেষ হয় ‘পেয়ারার সুবাস’ সিনেমার কাজ। নির্মাণ শুরুর আট বছর পর মুক্তি পেয়েছে নূরুল আলম আতিক পরিচালিত এই সিনেমা।

প্রেক্ষাগৃহের পর এবার ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকিতে মুক্তি পেয়েছে ছবিটি। প্রয়াত অভিনেতা আহমেদ রুবেলের স্মৃতিবিজড়িত ছবিটি আজ রাত ৮টায় থেকে চরকিতে দেখা যাচ্ছে। ৯২ মিনিটের এই সিনেমায় আহমেদ রুবেলের সঙ্গে জয়া আহসান, তারিক আনাম খান, সুষমা সরকার, দিহান, নূর ইমরান মিঠুসহ আরও অনেকে অভিনয় করেছেন।

সিনেমার গল্পে দেখা যাবে, পেয়ারা নামের এক তরুণীকে তার মামা অর্থের লোভে এক বৃদ্ধের সঙ্গে বিয়ে দেয়। বৃদ্ধ দিনের পর দিন পেয়ারার ওপর চড়াও হয়। বৃদ্ধের সংসার থেকে মুক্তির পথ খুঁজতে থাকে পেয়ারা। এর মধ্যে পেয়ারার জীবনে হাশেম নামের এক পুরুষ আসে। এরপর পেয়ারার পরিণতি কী হয়? সেই বৃদ্ধের অত্যাচার থেকে পেয়ারার মুক্তি মেলে? এমন সব প্রশ্নের জট খুলে সিনেমায়।

সিনেমায় পেয়ারা চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান। তাঁর ভাষ্য, ‘আমরা সাধারণেরা সব সময় যে দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে ছবি দেখি বা কাজ দেখি, আতিক আসলে সব সময় নতুনভাবে, নতুন কিছু দেখতে শেখায় বা দেখায়। আমার মনে হয় যে এ ধরনের পটভূমিতে হয়তো বাংলা ছবি আগে হয়নি। আমার চরিত্রসহ এই সিনেমার প্রতিটি চরিত্র বেশ শক্তিশালী। ছবিটি প্রেক্ষাগৃহের পর এবার চরকিতে আসছে, এটা আনন্দের।’
আহমেদ রুবেলের স্মৃতিতে জয়া বলেন, ‘সব আনন্দ ছাপিয়ে আমাদের মধ্যে এখন তীব্র বেদনা হচ্ছে আহমেদ রুবেলের চলে যাওয়া। প্রিমিয়ারের দিনের ঘটনাটা আমাদের সবার মধ্যে ভার হয়ে জমে আছে। অনেক কিছু বলতে চেয়েও বলতে পারি না। শুধু এতটুকু বলতে পারি, শিল্পী তার কাজ দিয়ে সবার মধ্যে থেকে যান, আহমেদ রুবেলও তাঁর কাজ দিয়েই আমাদের মধ্যে থেকে যাবেন।’

সিনেমায় গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে অভিনয় করেছেন তারিক আনাম খান। তিনি বলেন, ‘সিনেমার গল্পটা বাংলাদেশের সামাজিক প্রেক্ষাপটের নানা দিক খুব মেটাফোরিকভাবে দেখানো হয়েছে। দর্শক সিনেমাটা উপভোগ করবে আশা করছি।’

‘পেয়ারার সুবাস’ সিনেমার মূল চরিত্রে অভিনয় করেছেন জয়া আহসান

আলফা আই স্টুডিওজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার শাকিল বলেন, ‘সিনেমা হলে মুক্তি পাওয়া সুড়ঙ্গ আমাদের প্রথম সিনেমা হলেও ‘পেয়ারার সুবাস’-এর কাজ আমরা প্রথমে শুরু করেছিলাম। পছন্দের পরিচালক, প্রিয় শিল্পীরা আর সমসাময়িক প্রেক্ষাপটের গল্প নিয়ে এটি খুব দুর্দান্ত এক সিনেমা।’ চরকির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রেদওয়ান রনি বলেন, ‘আমাদের কাছে খুব বিশেষ একটা সিনেমা ‘পেয়ারার সুবাস’। আহমেদ রুবেল ভাইয়ের চলে যাওয়াটা আমাদের জন্য খুব বড় একটা ধাক্কা। তবে আমরা বিশ্বাস করি, রুবেল ভাই তাঁর কাজ দিয়েই আমাদের মধ্যে চিরদিন থাকবেন। আর এই সিনেমার সঙ্গে দেশের গুণী নির্মাতা ও গুণী অভিনয়শিল্পীরা যুক্ত আছেন। চরকি এই ছবির সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে বেশ আনন্দিত। বাংলা সিনেমাকে বিশ্বদরবারে পৌঁছে দেওয়ার জন্য চরকি সব সময় কাজ করছে।’

পেয়ারার সুবাস’ সিনেমার চিত্রগ্রহণ করেছেন চিত্রগ্রাহক অতীশ সাহা। সম্পানা করেছেন সজল অলক। রংবিন্যাস করেছেন দেবজ্যোতি ঘোষ। সংগীত ও আবহ সংগীত করেছেন রাশেদ শরিফ শোয়েব।

‘পেয়ারার সুবাস’ চলচ্চিত্র আহমেদ রুবেল ও জয়া আহসান

সাউন্ড ডিজাইন করেছেন নাহিদুর রহিম চৌধুরী। শিল্পীদের রূপসজ্জা করেছেন মো. ফারুক। পোশাকের নকশা করেছেন মারিয়া ফারিহ উপমা ও শিল্পনির্দেশনা দিয়েছেন মাহমুদ উল ওয়াদুদ। ২০২৩ সালে মস্কো চলচ্চিত্র উৎসবের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে অফিশিয়াল সিলেকশনে জায়গা পেয়েছিল ‘পেয়ারার সুবাস’। উৎসবে সিনেমার বিশ্ব প্রিমিয়ার হয়েছে।