সেই কবে প্রকাশিত হয়েছিল ডি এইচ লরেন্সের “লেডি চ্যাটার্লি’স লাভার”। এরপর পেরিয়ে গেছে নয় দশকের বেশি। খোলামেলাভাবে যৌনতার বিবরণের জন্য প্রকাশের পর থেকেই আলোচনায় উপন্যাসটি। দুনিয়াজুড়ে অনেক দেশেই দীর্ঘদিন ধরে নিষিদ্ধ ছিল বইটি। আলোচিত উপন্যাসটি অবলম্বনে নির্মিত হয়েছে বেশ কয়েকটি সিনেমা ও টিভি সিরিজ। ১৯২৮ সালে প্রকাশের পর এখনো উপন্যাসটি নিয়ে আগ্রহে ভাটা পড়েনি। “লেডি চ্যাটার্লি’স লাভার” অবলম্বনে নির্মিত একই নামের নতুন সিনেমা মুক্তি পেয়েছে নেটফ্লিক্সে।
“লেডি চ্যাটার্লি’স লাভার” অবলম্বনে প্রথম সিনেমা মুক্তি পায় ১৯৫৫ সালে, ফ্রান্সে। এরপর ফরাসি ভাষায় আরও সিনেমা হয়েছে, বিবিসি করেছে টিভি সিরিজ। এমনকি ভারতেও কন্নড় ও মালয়ালম ভাষায় সেই সত্তরের দশকেই সিনেমা তৈরি হয়েছে “লেডি চ্যাটার্লি’স লাভার”-এর প্রেরণায়।
আলোচিত উপন্যাসটি অবলম্বনে নতুন সিনেমা “লেডি চ্যাটার্লি’স লাভার” নেটফ্লিক্সে মুক্তি পেয়েছে ২ ডিসেম্বর। এর আগে গত ২৫ নভেম্বর মুক্তি পায় সীমিতসংখ্যক সিনেমা হলে। সিনেমাটি পরিচালনা করেছেন ফরাসি নির্মাতা ল ডে ক্লেমোটো-নয়া।
সিনেমাটিতে লেডি চ্যাটার্লি ও অলিভার মেলোর্সের চরিত্রে অভিনয় করেছেন এমা করিন ও জ্যাক ও’ কনেল। মুক্তির পর সমালোচকের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছে সিনেমাটি। বিশেষ করে লেডি চ্যাটার্লির চরিত্রে এমা করিনের পারফরম্যান্সের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সমালোচকেরা।
বছর কয়েক আগে এমা করিন নেটফ্লিক্সের সিরিজ ‘দ্য ক্রাউন’-এ প্রিন্সেস ডায়ানার চরিত্রে অভিনয় করে রাতারাতি পরিচিতি পেয়েছিলেন। এ সিনেমাও হতে যাচ্ছে তাঁর ক্যারিয়ারের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
চলতি বছরের শুরুর দিকে উত্তর ওয়েলসেই সিনেমাটির পুরো শুটিং হয়। বছরের শেষ ভাগে এসে মুক্তি পেল। সিনেমাটি আলোচিত হচ্ছে রাখঢাক না রেখেই অন্তরঙ্গ দৃশ্য দেখানোর জন্য। পরিচালক বলছেন, এটি তাঁর জন্যও ছিল বড় এক চ্যালেঞ্জ, ‘পর্দায় ঘনিষ্ঠ দৃশ্য তুলে ধরা মোটেও সহজ কিছু নয়। এটি ছিল আমার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।’ এই ফারসি নির্মাতা কথা বলেন উপন্যাস প্রকাশের এত দিন পর সিনেমা নির্মাণের প্রাসঙ্গিকতা নিয়েও।
তিনি বলেন, ‘সিনেমাটি সমাজের শ্রেণি বিভাজন, যৌনতা, শারীরিক সম্পর্কের আনন্দ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করে। আমার মনে হয়, বিষয়গুলো এখনো সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।’
পরিচালক আরও জানান, শুটিংয়ের আগে তাঁরা দুই সপ্তাহ অনুশীলন করেছেন। এ ছাড়া অন্তরঙ্গ দৃশ্যগুলো ঠিকঠিকভাবে চিত্রায়ণের জন্য ‘ইনটেমেসি কো-অর্ডিনেটর’ বা অন্তরঙ্গ দৃশ্য সমন্বয়ক নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল।
সিনেমাটি মুক্তির পর দর্শক, সমালোচকদের প্রশংসা পেয়ে আপ্লুত এমা করিন। এক সাক্ষাৎকারে এই ব্রিটিশ অভিনেত্রী বলেন, সিনেমাটিতে অভিনয় তাঁর জীবনে ঘটা সবচেয়ে আনন্দদায়ক ঘটনা।
সিনেমাটিতে একটি দৃশ্য আছে, যেখানে প্রধান দুই পাত্রপাত্রী নগ্ন হয়ে বৃষ্টিতে নাচে। চিত্রনাট্য পড়েই দৃশ্যটিতে অভিনয়ের সম্মতি দেন করিন।
নগ্ন দৃশ্যে অভিনয় প্রসঙ্গে এমা করিন বলেন, ‘ওয়েলসের গ্রামীণ পরিবেশে সম্পূর্ণ নগ্ন হতে আপনাকে ঠিক “অভিনয়” করতে হয় না। আপনি শুধু অনুভব করবেন এবং এটা অসাধারণ! কেবল অভিনয়ের খাতিরে করলে হবে না। আপনাকে সিনেমার চরিত্র হয়ে উঠতে হবে। চরিত্রটি যেভাবে ভাবছে, সেভাবেই ভাবতে হবে।’
এমা করিনের মতো অন্তরঙ্গে দৃশ্যে অভিনয় করেছেন জ্যাক ও’ কনেলও। তিনি জানান, অন্তরঙ্গ দৃশ্য সমন্বয়কের সহায়তায় তাঁরও ঘনিষ্ঠ দৃশ্যগুলোতে অভিনয় করতে সমস্যা হয়নি।