ঝড়ের রাত। বিজলি চমকাচ্ছে। আলো-আঁধারে বিজলির আলোয় দেখা যায় সাজিয়ে রাখা ছুরির সেট। ঘড়ির কাঁটা দুলছে। বাতাসে শব্দ তুলে দুলছে উইন্ড চাইম। এর মধ্যে দেখা গেল কুচকুচে কালো এক বিড়ালের চাহনি! বিজলি চমকানোর শব্দে ঘুম ভাঙে রফিক সাহেবের। তড়িঘড়ি করে জানালা লাগাতে যান তিনি। সব ঘর চেক করে রান্নাঘরে গিয়ে তিনি যা দেখেন, তার জন্য মোটেও প্রস্তুত ছিলেন না!
একনজরেসিরিজ: ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’পর্ব: ‘খাসির পায়া’জনরা: হররপরিচালক: কাজী আসাদগল্প: শরীফুল হাসানঅভিনয়: মোশাররফ করিম, রোবেনা জুঁই, জাহাঙ্গীর আলম, ফাহিম।
এদিকে রফিক সাহেবের স্ত্রী ও ছেলে পরদিনই ঘুরতে যান কক্সবাজার। রফিক সাহেব আটকে যান অফিসের কাজে। একা বাসায় থাকতে এমনিতেও ভয় পান তিনি। বন্ধুদের কাউকে ফোন দিয়েও পান না ওনার বাসায় এসে থাকার জন্য। তাই অফিস শেষে সময় কাটাতে পার্কে হাঁটতে যান তিনি। পার্কে তাঁর সঙ্গে দেখা হয় এক ছোট্ট ছেলের।
অদ্ভুত আবদার করে বসে সে। এমন আবদার শুনলে কেউই পাত্তা দেবে না। রফিক সাহেবও দেননি। আর এই পাত্তা না দেওয়াই কাল হয়ে দাঁড়ায় তাঁর জন্য। কী ঘটে রফিক সাহেবের ভাগ্যে? জানতে হলে দেখে নিন ‘খাসির পায়া’।
এই সিরিজের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছেন মোশাররফ করিম। রফিক সাহেবের চরিত্রে তিনি দারুণ অভিনয় করেছেন। ভয় পাওয়ার দৃশ্যগুলোয় তাঁর অভিব্যক্তির প্রকাশ ছিল দুর্দান্ত।
মোশাররফ করিমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অভিনয় করেছেন ছোট্ট ফাহিম। মাত্র একটা সংলাপ দিয়েই সে যেভাবে অভিনয় করেছে, তা সত্যিই অনবদ্য। তাঁর চাহনি গল্প শেষ হওয়ার পরও তাড়া করে বেড়ায়।
প্রথম পর্বে নির্মাতা ভয় পাওয়াতে চাননি, চেয়েছেন একটা গল্প বলতে। কিন্তু ‘খাসির পায়া’য় নির্মাতা শুরু থেকেই ভয় দেখাতে চেয়েছেন, গল্প নিয়ে মাথা ঘামাননি।
চরকি অরজিনাল সিরিজ ‘আধুনিক বাংলা হোটেল’-এর দ্বিতীয় মেনু, অর্থাৎ গল্প ‘খাসির পায়া’। ৭ নভেম্বর মুক্তি পেয়েছে এটি। প্রথম পর্ব ‘বোয়াল মাছের ঝোল’-এর সঙ্গে ‘খাসির পায়া’র কোনো মিল নেই। এটি একটি স্বতন্ত্র গল্প। পুরো সিরিজ তৈরি হয়েছে শরীফুল হাসানের গল্প অবলম্বনে।
দানিয়েল ড্যানির চিত্রগ্রহণ আর গল্প বলার ভঙ্গিতে ‘বোয়াল মাছের ঝোল’ মুগ্ধ করেছিল দর্শককে। গ্রামীণ পটভূমি অসাধারণভাবে ফুটিয়ে তুলেছিলেন নির্মাতা কাজী আসাদ। তবে ‘খাসির পায়া’র স্বাদ একটু কম। শহুরে গল্পের পর্বটির চিত্রগ্রহণ আলাদা করে নজর কাড়েনি।
সাউন্ড আর ভিএফএক্স দিয়ে সামাল দেওয়ার একটা চেষ্টা করেছেন নির্মাতা। তবে প্রথম দিকে যে ভয় ছড়িয়ে দিতে পেরেছিলেন, শেষ পর্যন্ত সেটা ধরে রাখতে পারেননি।
প্রথম পর্বে নির্মাতা ভয় পাওয়াতে চাননি, চেয়েছেন একটা গল্প বলতে। কিন্তু ‘খাসির পায়া’য় নির্মাতা শুরু থেকেই ভয় দেখাতে চেয়েছেন, গল্প নিয়ে মাথা ঘামাননি। যাঁরা ভয় পাবেন, তাঁরা পর্বটি উপভোগ করবেন, কিন্তু যাঁদের ভয় ধরাতে পারবে না, তাঁদের জন্য সেভাবে উপভোগ্য না–ও হতে পারে।
ভূতের গল্পের ক্ষেত্রে ‘তারপর কী হয়’ শোনার যে আগ্রহ থাকে, নির্মাতা সেটা ধরে রাখতে পেরেছেন শেষ পর্যন্ত। তাই ‘খাসির পায়া’য় ভয়ের স্বাদ কিছুটা কম হলেও মোটের ওপর ‘খেতে’ খারাপ হয়নি।