পুরস্কার হাতে আনা সাওয়াই। এএফপি
পুরস্কার হাতে আনা সাওয়াই। এএফপি

ইতিহাস গড়া এক জাপানি অভিনেত্রীর গল্প

‘পুরস্কারের জন্য আমার নাম ঘোষণার আগপর্যন্ত আমি কাঁদছিলাম। আজকে আমি একটু এলোমেলো, প্রচণ্ড আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছি।’ এবারের এমি অ্যাওয়ার্ডস যদি অনুসরণ করে থাকেন, তাহলে বক্তার নাম এতক্ষণে বুঝে যাওয়ার কথা। আনা সাওয়াই। এমিতে এবার ইতিহাস গড়েছেন জাপানি এই গায়িকা-অভিনেত্রী। বহুল আলোচিত সিরিজ ‘শোগান’-এ অভিনয়ের জন্য ড্রামা সিরিজ ক্যাটাগরিতে হয়েছেন সেরা অভিনেত্রী। তিনিই প্রথম জাপানি তথা এশীয় অভিনেত্রী, যিনি এ বিভাগে পুরস্কার পেলেন। পুরস্কারটি তিনি পেয়েছেন জেনিফার অ্যানিস্টন, রিজ উইদারস্পুনের মতো তারকাদের পেছনে ফেলে। আনা তাই আবেগতাড়িত হতেই পারেন।

দেশের বাইরের সিরিজ যাঁরা দেখেন, তাঁদের কাছে আনা সাওয়াই নামটা বিশেষ অপরিচিত নয়। ২০২১ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ফাস্ট অ্যান্ড ফিউরিয়াস’-এর নবম কিস্তিতে অভিনয় করে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পান তিনি।

এমির আসরে আনা সাওয়াই। এএফপি

তবে সমালোচকদের নজর কাড়েন পরের বছর, অ্যাপল টিভি প্লাসের ড্রামা সিরিজ ‘পাচিনকো’ দিয়ে। পরে মার্কিন সিরিজ ‘মনার্ক: লিগ্যাসি অব মনস্টারস’ দিয়ে সেই পরিচিতি আরও ছড়িয়ে পড়ে। এভাবেই সুযোগ পান ‘শোগান’-এ, এরপরই গড়লেন ইতিহাস।

আনা সাওয়াইয়ের জন্ম নিউজিল্যান্ডে, ১০ বছর বয়সে পরিবারের সঙ্গে জাপানে ফিরে আসেন। ১১ বছর বয়স থেকে অভিনয়ে নাম লেখান। ২০০৯ সালে মার্শাল আর্ট সিনেমা ‘নিনজা অ্যাসাসিন’ দিয়ে বড় পর্দায় অভিনয়ের শুরু।

‘শোগান’–এর দৃশ্য। হুলু

কিছুদিন আগেই ‘ডব্লিউ’ ম্যাগাজিনকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন আনা। সেখানে ‘শোগান’ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আসলে শুটিংয়ে নিজের কাজ নিয়ে ভাবছিলাম না। সিরিজটির চিত্রনাট্য এমন দুর্দান্ত যে একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম, নিজের পারফরম্যান্স কেমন হচ্ছে, নিশ্চিত ছিলাম না। এমনকি শুটিং যখন শেষ হয়, তখনো নয়।’

অভিনয়ের সঙ্গে গানটাও ভালোই করেন আনা। ২০১৩ সালে জাপানি নারীদের ব্যান্ড ফেকি যাত্রা শুরু করে, ব্যান্ডের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন আনা। এখন অবশ্য ব্যান্ডটিতে তিনি নেই, গান করেন নিজের মর্জিমতো। এ প্রসঙ্গে আনা জানান, মূলত অভিনয়ে মন দিতেই ব্যান্ড ছেড়েছিলেন তিনি। যে লক্ষ্য নিয়ে তখন অভিনয়ে মনোযোগ বাড়িয়েছিলেন, সেটা এখন অনেকটাই সফল।

‘শোগান’-এর সাফল্যের পর থেকে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রকল্পে প্রস্তাব পাচ্ছেন ৩২ বছর বয়সী এই গায়িকা–অভিনেত্রী।