আগামী ঈদে মুক্তি পাচ্ছে রায়হান রাফির নতুন চলচ্চিত্র ‘সুড়ঙ্গ’। এর আগে সোমবার ১ মিনিট ২২ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ক্লিপ প্রকাশ করা হয়েছে। ফেসবুকে ভিডিও শেয়ার করে রাফি লিখেছেন, ‘“পরাণ”–এর পর এবার ঈদের উপহার “সুড়ঙ্গ”। ছবিটি সম্পর্কে সবাইকে ধারণা দিতেই এটি প্রকাশ করা।’ এটির পরিচালক বলছেন, ‘মুক্তির আগে পূর্বাভাস।’ চরকি ও আলফা আই স্টুডিওজের এই সিনেমা দিয়েই বড় পর্দায় আসছেন আফরান নিশো।
এর আগে টিজারে শুধু সুড়ঙ্গে সীমাবদ্ধ থাকলেও এবার ১ মিনিট ২২ সেকেন্ডের ভিডিওতে চরিত্রটি ছড়িয়েছে নানা দিকে। যাতে দেখা গেছে কখনো ইলেকট্রিশিয়ান, কখনো জেলখানার কয়েদি, কখনো আবার রোমান্টিক দৃশ্যে। এতে দেখা মিলেছে তমা মির্জারও, আটপৌরে নারীর চরিত্রে। সংলাপহীন এই পূর্বাভাসের শেষটা হয় আফরান নিশোর ভয়ংকর হাসি আর নিশ্বাসের শব্দে। এটির আবহসংগীতও বেশ শ্বাসরুদ্ধকর।
প্রথমবার বড় পর্দায় আফরান নিশো আসছেন, নিশোর সঙ্গে জুটি বেঁধেছেন তমা মির্জা। সংগত কারণে সিনেমাটির ঘোষণার পর থেকেই এ নিয়ে দর্শকের মাতামাতি ছিল। ঈদে মুক্তি পাচ্ছে এই ছবি। পরিচালক রাফি জানিয়েছেন এই সপ্তাহের মধ্যে সেন্সরে জমা দেবেন। সব মিলিয়ে ঈদে মুক্তি দেওয়ার জন্য পুরোপুরি প্রস্তুত তাঁরা। কোনো জটিলতা আর নেই।
তিনি বলেন, ‘ছবিটি প্রসঙ্গে এটুকু বলতে চাই, “পরাণ” বানিয়ে আমি যে ভালোবাসা পেয়েছি দর্শকদের, তারই প্রতিদান হিসেবে “সুড়ঙ্গ” নির্মাণ করেছি। “পরাণ”–এর পর এই ছবিটাই আমি বানিয়েছি। সবার প্রচুর সাড়া পাচ্ছি। ছবিটা ভারতেও মুক্তি দেওয়া যায় কি না, সেটাও ভাবছি।’
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে হয়েছিল ‘সুড়ঙ্গ’–এর মহরত অনুষ্ঠান। মার্চের প্রথম সপ্তাহে শুরু হওয়া সিনেমার শুটিং চলেছে কয়েক কিস্তিতে। শুটিং হয়েছে সুনামগঞ্জ ও চট্টগ্রামের দুর্গম এলাকায়। ফলে পুরো টিমকে প্রচুর শ্রম দিতে হয়েছে।
সেসব অভিজ্ঞতা জানিয়ে রাফি বললেন, ‘এটা আমার সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ছবি। আরও অনেক আগে, “পরাণ”–এর আগেই ছবিটা বানাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বাজেট, আয়োজন নানা কারণে সম্ভব হয়নি। অবশেষে কাজটি করলাম। পুরো ইউনিট অসামান্য পরিশ্রম করেছে। আসলে যখন কোনো কাজে সংশ্লিষ্ট সবাই সৎ থেকে কাজ করে, তখন সেটি মানুষের মন জয় করেই।’
এর আগে শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে অভিনেতা নিশো প্রথম আলোকে বলেন, ‘অবশ্যই অন্য রকম একটা অনুভূতি কাজ করছে। এটা আমার প্রথম সিনেমা। সুনামগঞ্জের দুর্গম এলাকায় আমরা সবাই মিলে প্রায় ১০ দিন শুট করেছি। সবার থাকা-খাওয়ার খুব কষ্ট ছিল। আমাদের সবার অনেক পরিশ্রম হলেও ভিজ্যুয়ালি বা পারফরম্যান্সে দর্শক উপভোগ্য, রুচিশীল, মার্জিত কিছু দেখতে পাবেন।’ চরিত্রটি কতটা চ্যালেঞ্জিং, এ প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘পরিচালক রাফির সঙ্গে এটাই আমার প্রথম কাজ। আমি সব সময় চেষ্টা করি, পরিচালকের সঙ্গে আরাম করে কাজ করতে। এ জন্য আমরা অনেক আলোচনা করে জেনেবুঝে কাজটা করেছি।’
নিশো বলেন, ‘এখনো দুই পর্যায়ের শুটিং বাকি আছে। যে পরিশ্রম করছি, সেটা দর্শক আমাদের কাজে দেখতে পাবেন।’ অভিনেত্রী তমা মির্জা বলেন, ‘অনেক বছর পর এ রকম কষ্ট করে শুটিং করেছি। শুধু আমি নই, পুরো টিম শুটিংটা করতে গিয়ে অনেক কষ্ট করেছে। তারপরও শান্তির জায়গা একটাই যে আমরা যতটুকু শুট করেছি, তাতে কোনো কম্প্রোমাইজ করিনি। যা–ই হোক না কেন, দিন শেষে কাজটা যে ভালো হচ্ছে, এটাই আমাদের পাওয়া।’ নিশোর সঙ্গে কাজ করে কেমন লেগেছে, জানতে চাইলে তমা মির্জা বলেন, ‘এই সিনেমায় আমার চরিত্রটা একটু ট্রিকি। পরিচালক রাফির সঙ্গে আমার আগে বেশ কিছু কাজ হয়েছে। তিনি খুবই হেল্পফুল। নিশো ভাইয়ের সঙ্গে এটা আমার প্রথম কাজ। তিনি আমাকে অনেক সহযোগিতা করেছেন, তিনি আমার কাজটাকে আরও সহজ করে দিয়েছেন।’ ‘সুড়ঙ্গ’ সিনেমার চিত্রনাট্য লিখেছেন নাজিম উদ দৌলা।