‘নিশো কেন বর্তমান সময়ের সেরা অভিনেতা, নিশোকে কেন ভার্সেটাইল অভিনেতা বলা হয়, এই সিরিজ তার প্রমাণ’, ‘শিহাব শাহীন ভাই আপনি আসলে পারেন কাকে দিয়ে কী সম্ভব, অসাধারণ নির্মাণ আর গল্প বলার ধরন আগে দেখিনি’, ‘“সিন্ডিকেট” ১০/১০’, ‘এবার ঈদ অনুষ্ঠান মানেই “সিন্ডিকেট”…।’ এমন নানা মন্তব্য দেখা গেল ফেসবুকে। পাঠকেরা এত সময়ে হয়তো বুঝতে পারছেন এই ‘সিন্ডিকেট’ ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম চরকির নতুন ওয়েব সিরিজ নিয়ে কথা বলছি। ঈদ উপলক্ষে ঈদের দিন রাত ৮টায় মুক্তি পেয়েছে। প্রচারের পর থেকেই রাত থেকে দর্শকদের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে জায়গা করে নিয়েছে সিরিজটি।
ফেসবুকের নাটক–সিনেমাসংশ্লিষ্ট গ্রুপগুলোতে অনেক প্রশংসা ঘুরছে ‘সিন্ডিকেট’ ঘিরে। সেসব গ্রুপে শত শত পোস্ট। সিরিজটি প্রচারের পর থেকে শুরু হয় আলোচনা। গতকাল গভীর রাত থেকে শুরু হওয়া এসব আলোচনা থেমে থাকেনি ভোরেও। সকাল শুরু হওয়া সঙ্গে সঙ্গে ‘সিন্ডিকেট’ ঘিরে দর্শকদের আগ্রহ আরও বাড়তে থাকে।
শামীম আহমেদ নামের একজন লিখেছেন, ‘শিহাব শাহীনের ওয়েব সিরিজ “সিন্ডিকেট”। আফরান নিশো এই ঈদে মনে হয় সে নিজেরই প্রতিদ্বন্দ্বী নিজে। আসলে শিহাব শাহীনের সেরা নির্মাণ “সিন্ডিকেট” আর আফরান নিশো, সে তো অলরাউন্ডার। তার কাছ থেকে আরেকটা চরিত্র পেলাম মনে রাখার মতো। নাজিফা তুষি অভিনয় দেখে বিশেষ করে ইমোশনাল হয়ে গেছিলাম প্রায়। সিরিজের অভিনেতা শতাব্দী ওয়াদুদ, তাসনিয়া ফারিণসহ সবাই দারুণ অভিনয় করছে। সবাইকে পুরো মার্ক দেওয়া যায়।’
সিরিজে আফরান নিশো, শতাব্দী ওয়াদুদ, নাজিফা তুষি, তাসনিয়া ফারিণ ছাড়াও রাশেদ মামুন অপু, নাসির উদ্দিন খান অনেকেই অভিনয় করেছেন। ‘সবাই তাঁদের সেরাটা দিয়ে অভিনয় করেছেন’, এমনটাই আলোচনায় লিখছেন ‘সিন্ডিকেট’ভক্তরা। নাহিদ হাসান নামের একজন লিখেছেন, ‘“সিন্ডিকেট” নিয়ে প্রত্যাশা ছিল খুব, কিন্তু এটা প্রত্যাশার থেকেও বেশি কিছু। এই সিরিজের রেশ পুরো ঈদে থাকবে। নিশো, তুষিকে ঠিক জায়গায় ব্যবহার করেছেন পরিচালক শিহাব শাহীন। সবার জন্য মাস্টওয়াচ কাজ এটি, সময় নিলে বসে পড়ুন ৭ পর্বের এই দুর্দান্ত কাজটি দেখতে। এটা গ্যারান্টি দিতে পারি নিশ্চিত ভালো লাগবে।’ আরেকজন পরিচালকের প্রশংসা করে লিখেছেন, ‘শিহাব শাহীন ভাই আপনি আসলে পারেন কাকে দিয়ে কী সম্ভব..“সিন্ডিকেট”–এ নিশোই ছিল পারফেক্ট। অভিনয়ের জন্য নিজের শখের চুল কাটা শতভাগ স্বার্থক।’
শিহাব শাহীন এর আগে চরকির জন্য ‘মরিচীকা’ ওয়েব সিরিজ বানিয়ে প্রশংসা পান। এবার ক্রাইম থ্রিলার, রোমান্টিক ঘরানার মনস্তাত্ত্বিক গল্প বেছে নিয়েছেন। এ ধরনের গল্প দেশে আগে তেমন একটা দেখা যায়নি। সেটা আগেই বলেছিলেন পরিচালক। ওয়েব সিরিজ ‘সিন্ডিকেট’ভক্তরা সেই কথাই বলছেন। জেনিথ নামের একজন লিখেছেন, ‘পুরো সিরিজটা থ্রিলারে ভরা। কোনো সেকেন্ড স্কিপ করে দেখার সুযোগ নেই। নিশোর আদনান চরিত্রটা নিশোর জন্য বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। কিন্তু নিশো যে বরাবরই সেরা, সেটা এই চরিত্রের পারফরম্যান্স দিয়েই বুঝিয়ে দিয়েছে। সিরিজজুড়ে নিশোর অভিনয় ছিল এককথায় দেখার মতো। বিরক্তিকর কিছুই ছিল না। বাকিরাও একেবারে পারফেক্ট ছিলেন। সব মিলিয়ে দারুণ উপভোগ্য ছিল “সিন্ডিকেট”। এটি ১০–এ ৯.৫ পাবে।’ অনেক দর্শক ১০–এ ৯ দিচ্ছেন। আবার কেউ কেউ ১০–এ ৮–ও দিয়েছেন।
‘সিন্ডিকেট’–এর মূল চমক ছিল আফরান নিশোকে ঘিরে। নিশোকে আগে এভাবে তেমন কোনো চরিত্রে দেখা যায়নি। মাথায় ছোট চুল, খোঁচা খোঁচা দাঁড়ি। চোখ দুটি ঘোলাটে। কখনো প্রেমের গল্পের নায়ক, কখনো স্বল্পভাষী রহস্যময়ী হয়ে ধরা দিয়েছেন। ইতিমধ্যে চরিত্রটি আলোচনার জন্ম দিয়েছে। বেশির ভাগ দর্শকের কথা, অ্যাসপারগার সিনড্রোমে রোগী চরিত্রে শতভাগ উতরে গিয়েছেন নিশো। সানজানা নামের একজন লিখেছেন, ‘পুরো সিরিজজুড়ে অনবদ্য সাসপেন্স ও ক্লাইমেক্স ছাপিয়ে চোখ আটকে থাকবে কিন্তু নিশোর অভিনয়ে। আমার মতে, নিজের সেরাটা ঢেলে দিয়েছেন নিশো আদনানের মধ্যে। একটাবারের জন্যও মনে হয়নি আমি বানানো কাহিনি দেখছি। এ যেন দিনেদুপুরে ঘটে যাওয়া কিছু রাস্তার কোণে দাঁড়িয়ে দেখছি।’