গরমে সংলাপ ভুলে যাচ্ছি...

ঈদ ছাড়াও তাঁর নাটক ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে থাকা যেন স্বাভাবিক ঘটনা। ইউটিউবে মুক্তি পাওয়ামাত্র মিলিয়ন ভিউ। বলছি অভিনেত্রী জান্নাতুল হিমির কথা। তাঁর অভিনীত ‘নেটওয়ার্ক প্রবলেম’, ‘সুইটির কাজিন’, ‘গেস্ট ইন সিঙ্গাপুর’ নাটকগুলো এখনো ট্রেন্ডিংয়ে রয়েছে। আলোচিত এই অভিনেত্রীর কাজ ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে লিখেছেন মনজুরুল আলম
হিমি। ছবি: ফেসবুক
হিমি। ছবি: ফেসবুক

প্রায় এক মাসের বিরতি। ঈদে কাজ শেষ করে পাড়ি জমান কানাডায়। এক মাসের সফর শেষে দেশে ফিরেই ক্যামেরার সামনে ব্যস্ত হিমি। কিন্তু আবহাওয়া কিছুটা ভোগাচ্ছে তাঁকে। কানাডার শীত থেকে বাংলাদেশের গরমে মানিয়ে নিতে সমস্যা হচ্ছে। হিমি বলেন, ‘এক মাস শীতে অভ্যস্ত হয়েছি। এখন দেশে তো গরম। দুই দিন হলো শুটিং শুরু করেছি। এদিকে গরম দিন দিন বাড়ছে। তারপরে পুবাইলে শুটিং করছি। গরম তো আছেই, আবার বিদ্যুৎ নেই।’

গরমে সংলাপ ভুলে যাচ্ছি
এত গরম যে শুটিংয়ের জন্য ব্যবহার করা মেকআপ নিয়ে ঝামেলায় এই অভিনেত্রী। কিছুক্ষণ পরপর নাকি মেকআপ গরমে গলে যাচ্ছে। এমন গরমে ভুলে যাচ্ছেন সংলাপ। এই অভিনেত্রী বলেন, ‘রোদের মধ্যে শুটিং করতে হচ্ছে। বাতাসও গরম। এর মধ্যেই মেকআপ ঠিক রেখে কাজ করতে হচ্ছে। নইলে কন্টিনিউটি ব্রেক। পরিচালকও কিছুক্ষণ পরপর বলছেন মেকআপ ঠিক করতে। সব দিকে মনোযোগ দিতে গিয়ে গরমে সংলাপই ভুলে যাচ্ছি। আবার কিছুক্ষণ পরপর ড্রেস পরিবর্তন করতে হয়। সব মিলিয়ে মনে হচ্ছে, কানাডার মাইনাস ডিগ্রিতে মন্দ ছিলাম না।’

বরফের মধ্যে হিমি। ছবি: ফেসবুক

কেন লম্বা বিরতি
প্রায় এক মাস কানাডায় ছিলেন। এত বড় সময় কখনোই দেশের বাইরে থাকা হয়নি এই অভিনেত্রীর। এ জন্য সাত মাস আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়েছেন। পুরো পরিবার নিয়ে গিয়েছিলেন ঘুরতে। হিমি জানান, তাঁর ভাই কানাডায় থাকেন। ভাইয়ের কাছেই সবাই মিলে একসঙ্গে ঈদ করতে যাওয়া। কিন্তু ঈদের দিনও জার্নিতেই চলে গেছে। পরের সময়গুলো ঘুরে কাটিয়েছেন। প্রথমবার কানাডার বরফ ও মাইনাস ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার অভিজ্ঞতা ছিল মজার। তিনি বলেন, ‘কানাডায় বাংলাদেশি–অধ্যুষিত এলাকায় গিয়ে তো অবাক। দেখি সবাই আমাকে চেনেন। কেউ কেউ আমাকে দেখে অবাক হয়েছেন।’

হিমি। ছবি: ফেসবুক

ভক্তদের পাগলামি
দেশে তো ভক্তদের পাগলামির শেষ নেই। দেখা হলেই ছবি তোলাসহ নানান আবদার থাকে। কিন্তু দুবাই এয়ারপোর্ট এমন ঘটনার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না হিমি। তিনি তখন বিমানবন্দরের ভেতরে। বের হচ্ছিলেন। এমন সময় ওপর থেকে একজন ‘হিমি আপু’ বলে বারবার ডাকতে থাকেন আর অপেক্ষা করতে বলেন। সবাই তখন হিমির দিকে তাকিয়ে। কিছু সময় পর হিমির সামনে সেই লোক ফুল নিয়ে হাজির। হিমি বলেন, ‘আমি তো চমকে গেছি। পরে সে জানায়, আমার নাটকের ভক্ত। নিয়মিত আমার নাটক দেখে। তার ইচ্ছা ছিল আমার সঙ্গে দেখা করার। সে জন্যই ওপর থেকে আমাকে দেখার জন্য বারবার ডাকছিল।’ এমন ঘটনা নাকি কানাডায়ও হয়েছে। ‘বাঙালি এক দোকানে গেছি। সেখানে সবাই ঘিরে ধরেছিল। কিন্তু সিঙ্গাপুরে একবার শুটিংয়ে গিয়ে ভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়েছিল। ভক্তরা পথ আটকে দিয়েছিল। এই ভালোবাসাই কাজ করতে উৎসাহিত করে,’ বলেন হিমি।

‘মামার বাড়ি’ নাটকের একটি দৃশ্যে

গল্প পছন্দে পরিবর্তন
রোমান্টিক আর কমেডি গল্পের জুটি নিলয় আলমগীর ও হিমি। তাঁদের নাটকের যেমন ভিউ রয়েছে, তেমনি তাঁদের নিয়ে সমালোচনাও কম হয় না। সেই জায়গা থেকেই এই জুটি গল্পে পরিবর্তন এনেছেন। পারিবারিক ঘটনা ও সামাজিক বার্তা রয়েছে, এমন গল্পগুলো প্রাধান্য দিচ্ছেন। এই পরিকল্পনা নিলয়ের বলে জানালেন হিমি। তিনি বলেন, ‘নিলয় ভাইয়া পরিচালক মহিন ভাইকেে বলেছিলেন একটু ভিন্ন ঘরানার গল্প ভাবতে। যেখানে পরিবার আছে। একাধিক সিনিয়র অভিনয়শিল্পী আছেন। এ ভাবনা থেকেই ‘মামা বাড়ি’ নামে একটি নাটক করেছিলাম। ভিউ নিয়ে কোনো ভাবনাই ছিল না। পরে দেখা গেল সেই নাটকের দৃশ্য ভাইরাল, কোটি ভিউ। দর্শকেরা এখন ভিন্ন গল্প দেখতে চাইছেন, যে কারণে আমরা পরিবর্তন আনতে চাই। এখন ভিউ নিয়ে ভাবছি না।’

ভালোবাসা দিবসে পোস্ট করা হিমির ছবিটি। ফেসবুক থেকে সংগৃহীত

ফুল দিল কে
গত ভালোবাসা দিবসে ভিন্নভাবে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেন এই অভিনেত্রী। ফুল হাতে রোমান্টিকভাবে তাকিয়ে রয়েছেন। পোস্টে ফ্রান্সের একটি সিনেমার নাম লেখা। যার অর্থ, ‘হ্যাঁ, এটাই আমি চাই।’ এভাবে প্রায়ই ফুল হাতে ছবি পোস্ট করতে দেখা যায় হিমিকে। এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি ফুল ভালোবাসি। এমন নয় যে এই ফুল কেউ দিয়েছে। অনেক সময় শুটিংয়ে ফুলের দৃশ্য থাকলে ছবি তুলে পোস্ট করি। আমাকে ফুল উপহার দেওয়ার মতো এখনো তেমন কেউ নেই।’