বয়স হয়েছিল মোটে ৩৬। মেরেকেটে ১৭ বছরের ক্যারিয়ার। তাতেই যা করেছেন, পরের কয়েক প্রজন্ম ধরে তিন হয়ে উঠেছেন অন্যতম প্রেরণার নাম। তিন মেরিলিন মনরো। আজ থেকে ঠিক ৬০ বছর আগে প্রয়াত হন অভিনেত্রী। তবে পৃথিবী ছেড়ে গেলেও পর্দার তিনি ফিরে এসেছেন বারবার। তাঁকে নিয়ে তৈরি হয়েছে অনেকে তথ্যচিত্র, সিনেমা। নানাভাবে তুলে ধরা হয়েছে পঞ্চাশের দশকে ঝড় তোলা অভিনেত্রীর জীবন। ৬০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দেখে নেওয়া জেনে নেওয়া যাক মনরোকে নিয়ে তৈরি হওয়া বিভিন্ন সিনেমা, তথ্যচিত্রের খবর।
মনরো মারা যান ১৯৬২ সালে। ঠিক তার পরের বছর তৈরি হয় তাঁর জীবন নিয়ে তথ্যচিত্র ‘মনরো’। তথ্যচিত্রটিতে পঞ্চাশের দশকের এই ‘সেক্স সিম্বল’-এর জীবন তুলে ধরেছিলেন পরিচালক হ্যারল্ড মেডফোর্ড। তথ্যচিত্রটিতে ধারাবর্ণনা করেছিলেন মার্কিন অভিনেতা রক হাডসন। তথ্যচিত্রটিতে অবশ্য টোয়েন্টিথ সেঞ্চুরি ফক্স থেকে মনরো যেসব সিনেমা করেছিলেন, সেগুলোর কথাই ছিল। তবে এখন পর্যন্ত তথ্যচিত্রটি ডিভিডি বা অন্য কোনোভাবে মুক্তি পায়নি।
মনরোর জীবন নিয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমা ‘গুডবাই, নর্মা জিন’ মুক্তি পায় ১৯৭৬ সালে। ল্যারি বুচনানের ছবিটিতে মনরোর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন মিস্টি রোওয়ে। তবে ছবিটি তেমন গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। মিস্টি রোওয়ে আবারও তরুণী মনরোর চরিত্রে অভিনয় করেন ‘গুডনাইট, সুইট মেরিলিন’ ছবিতে। ল্যারি বুচনানই ছিলেন ১৯৮৯ সালে মুক্তি পাওয়া ছবিটির পরিচালক। ছবিতে পূর্ণবয়স্ক মনরোর চরিত্রে অভিনয় করেন পাওলা লেন।
১৯৯৩ সালে মুক্তি পাওয়া ‘ক্যালেন্ডার গার্ল’ ঠিক মনরোকে নিয়ে নয়; বরং মনরোর স্বপ্নে বিভোর এক তরুণের গল্প। যে মনরোর সঙ্গে দেখা করতে হলিউডে যাত্রা করে। ছবিতে মনরোর উপস্থিতি ছিল অল্প সময়ের, সে চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন স্টেফানি অ্যান্ডারসন। ১৯৯১ সালের মুক্তি পাওয়া টিভি মুভি ‘মেরিলিন অ্যান্ড মি’র বিষয়টা একটু অন্য রকম। ছবিটি মূলত মার্কিন লেখক রবার্ট স্লাটজারের জীবন নিয়ে। যিনি দাবি করেন, মনরোর সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। ছবিতে মনরোর চরিত্রে অভিনয় করেন সুসান গ্রিফিথস। মনরোকে নিয়ে প্রশংসিত টিভি ছবি ‘মেরিলিন: দ্য আনটোল্ড স্টোরি’ মুক্তি পায় ১৯৮০ সালে। যেখানে ক্যাথেরিন হিকসকে দেখা যায় মনরোর চরিত্রে পর্দায় হাজির হতে। ছবিটি চারটি শাখায় এমি মনোনয়ন পায়।
২০১১ সালে মুক্তি পাওয়া ‘মাই উইক উইথ মনরো’ আরেকটি উল্লেখযোগ্য কাজ। সিমন কার্টিস পরিচালিত সিনেমাটি মূলত ১৯৫৭ সালের সিনেমা ‘দ্য প্রিন্স অ্যান্ড দ্য শোগার্ল’ তৈরির গল্প নিয়ে। এখানে মনরোর চরিত্রে অভিনয় করেন প্রখ্যাত মার্কিন অভিনেত্রী মিশেল উইলিয়ামস। সমালোচক প্রশংসা, ব্যবসায়িক সাফল্যের সঙ্গে অস্কারেও মনোনীত হয়।
অভিনেত্রীকে নিয়ে চলতি বছর আলোচিত তথ্যচিত্র মুক্তি পায় নেটফ্লক্সে। এমা কুমার পরচালিত ‘দ্য মিস্ট্রি অব মেরিলিন মনরো: দ্য আনহিয়ার্ড টেপস’ তৈরি হয় মূলত অভিনেত্রীর জীবন ও মৃত্যু নিয়ে। মৃত্যুর কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই বিশ্বব্যাপী প্রায় ২৩ মিলিয়ন ভিউ হয় তথ্যচিত্রটির।
মেরিলিন মনরোকে নিয়ে মুক্তির অপেক্ষায় আছে বহুল প্রতীক্ষিত ছবি ‘ব্লন্ড’। ২৮ সেপ্টেম্বর এটি মুক্তি পাবে নেটফ্লিক্সে। তার আগে প্রদর্শিত হবে চলতি বছরের ভেনিস চলচ্চিত্র উৎসবে। অস্ট্রেলিয়ান পরিচালক অ্যান্ড্রু ডোমিনিক পরিচালিত সিনেমাটিতে মনরোর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আনা ডে আরমাস। পপ কালচারে মেরিলিন মনরোর যে প্রভাব, নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, সামনে অভিনেত্রীকে নিয়ে আরও সিনেমা, তথ্যচিত্র তৈরি হবে।