জনপ্রিয় ‘হ্যারি পটার’ সিনেমা সিরিজের ‘আলবাস ডাম্বেলডোর’খ্যাত অভিনেতা মাইকেল গ্যামবন আর নেই। আজ বৃহস্পতিবার চিকিৎসাধীন অবস্থায় এই অভিনেতা মারা গিয়েছেন। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। এই অভিনেতার মৃত্যুর তথ্য প্রথম গণমাধ্যমে জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী অ্যানি মিলার ও ছেলে ফারগুস গ্যামবন। তথ্যসূত্র সিএনএন।
পরে পরিবারের পক্ষ থেকে অভিনেতার একান্ত সহকারী ক্লায়ার ডবস শোকবার্তায় উল্লেখ করেন, ‘আমরা ভেঙে পড়েছি। আমরা দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি যে আমাদের প্রিয় মাইকেল গ্যামবন আর আমাদের মধ্যে নেই। তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন। সেটার চিকিৎসা চলছিল। মারা যাওয়ার সময় তাঁর পাশে তাঁর ভালোবাসার স্ত্রী অ্যানি ও ছেলে ফারগুস ছিলেন। শান্তিপূর্ণভাবেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে।'
গ্যামবনের জন্ম আয়ারল্যান্ডের ডাবলিনে। সেখান থেকে শৈশবে তিনি চলে আসেন লন্ডনে। সেখানে আইরিশ অভিবাসী কমিউনিটির মধ্যে বেড়ে ওঠেন তিনি। থাকতেন কামডেনে। সেখানে তাঁর প্রথম পেশা ছিল শিক্ষানবিশ হিসেবে যন্ত্রপাতি বানানো। সে সময়ই তিনি রয়্যাল একাডেমি অব ড্রামাটিক আর্টে পড়াশোনার জন্য ভর্তি হন। এর মধ্যেই প্রথম তিনি ১৯৬২ সালে ডাবলিনে দ্য গেট থিয়েটার প্রযোজিত নাটক ‘ওথেলো’তে অভিনয় করেন। এখানে অভিনয় করার সময় তিনি আরেক জনপ্রিয় অভিনেতা লরেন্স অলিভারের নজর কাড়েন। এই অভিনেতা তাঁকে ভাড়া করে ন্যাশনাল থিয়েটারে যোগদান করান। পরবর্তী সময়ে তিনি অভিনয় শিখতে থাকেন। এ সময় তাঁর পছন্দের চরিত্র হয়ে দাঁড়ায় উইলিয়াম শেক্সপিয়ারের নাটকের চরিত্রগুলো। ৭০ দশকেই তিনি শেক্সপিয়ারের নাটকগুলোর পছন্দের চরিত্র পেয়ে যান। পরবর্তীকালে নাটক ও সিনেমায় নিয়মিত হন। তিনি চাকরিও করেছেন।
গ্যামবনের অভিনয় ক্যারিয়ার দীর্ঘ ছয় দশকের। এ সময় তিনি টেলিভিশন নাটক, ফিল্ম ও রেডিও অনুষ্ঠানে অভিনয় করেছেন। তিনি ১৯৮০ সালে প্রথম আলোচনায় আসেন ‘দ্য সিঙ্গিং ডিটেকটিভ’ সিরিজ দিয়ে। ‘থিয়েটার নাইট’, ‘আ ড্রাই হোয়াইট সিজন’, ‘দ্য স্টোরি ট্রেলার: গ্রিক মিথ’, ‘ইনসাইডার’, ‘মাইন্ডার’সহ একাধিক সিনেমা–সিরিজ থেকে প্রশংসা পান।
বিশ্বজুড়ে গ্যামবনকে তুমুল জনপ্রিয়তা এনে দেয় ‘আলবাস ডাম্বেলডোর’ চরিত্রটি। ২০০২ সালে ‘হ্যারি পটার’–এর জনপ্রিয় অভিনেতা ‘রিচার্ড হ্যারিস’ মারা যান। সেখানে ডাক পড়ে গ্যামবনের। পরের পর্বগুলোয় গামবন নিয়মিত অভিনয় করেন। তাঁর ক্যারিয়ারে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে ‘হ্যারি পটার’–এর চরিত্র। সিনেমার আটটি সিকুয়েলের মধ্যে ছয়টিতেই তাঁকে দেখা যায় অধ্যাপক আলবাস ডাম্বেলডোরের ভূমিকায়। গামবন তাঁর ক্যারিয়ারে চারবার বাফটা পুরস্কার জয় করেন। এ ছাড়া দুইবার তিনি এমি মনোনয়ন পান। একবার পেয়েছিলেন গোল্ডেন গ্লোব মনোনয়ন। এ ছাড়া একাধিক সম্মাননা তাঁর ঝুলিতে রয়েছে। তাঁর জন্ম ১৯৪০ সালের ১৯ অক্টোবর। তিনি তিন সন্তান স্ত্রী রেখে গেছেন। শেষ তাঁকে ২০১৯ সালে ‘করডেলিয়া’ সিনেমায় দেখা গেছে।