‘দ্য পারসুট অব হ্যাপিনেস’-এর উইল স্মিথের ছেলে এখন কী করেন

‘দ্য পারসুট অব হ্যাপিনেস’ সিনেমার একটি দৃশ্যে বাবা–ছেলে। ছবি:আইএমডিবি
 ‘দ্য পারসুট অব হ্যাপিনেস’  সিনেমার একটি দৃশ্যে বাবা–ছেলে। ছবি:আইএমডিবি

মা-বাবার বিচ্ছেদ হয়। মা অভাবের সংসার ছেড়ে চলে যান। বাবার সঙ্গে বেড়ে ওঠে কিশোরটি; কিন্তু চরম এক দারিদ্র্য গ্রাস করে। এর মধ্যেই বাবা স্বপ্ন দেখান, দিন পরিবর্তন হবে। খেয়ে না-খেয়ে চলে বাবা-ছেলের সংগ্রাম। সেই সময়ে এত অল্পতে কীভাবে ভালো থাকা যায়, শিখে ফেলে ৮ বছরের শিশু ক্রিস্টোফার। ভক্তরা হয়তো এত সময়ে আঁচ করতে পেরেছেন, বলছিলাম ‘দ্য পারসুট অব হ্যাপিনেস’ সিনেমার কথা। সিনেমাটিতে অসাধারণ অভিনয় করেছিল ক্রিস্টোফার চরিত্রের শিশু জাদেন স্মিথ। ১৯৯৮ সালে জন্ম নেওয়া সেই তরুণ ২৭-এ পা দিচ্ছেন।

শৈশব থেকেই ইচ্ছা ছিল অভিনয়ের। সেই স্বপ্ন পূরণ হয় উইল স্মিথের সঙ্গে অভিনয় করে। ‘ক্যারাটে কিড’খ্যাত এই অভিনেতার ক্যারিয়ার শুরু হয় ২০০৬ সালে। তখন তাঁর বয়স ৮ বছর। পরে ‘দ্য পারসুট অব হ্যাপিনেস’ সিনেমাটি জনপ্রিয়তা পেলে একাধিক সিনেমায় অভিনয়ের ডাক পড়ে। পরে বছর ‘দ্য ডে দ্য আর্থ স্টুড স্টিল’, ২০১০ সালে আলোচিত সিনেমা ‘দ্য ক্যারাটে কিড’ সিনেমা তাঁকে আরও বেশি আলোচিত করে।

‘ক্যারাটে কিড’ সিনেমার একটি দৃশ্যে

জ্যাকি চ্যানের সঙ্গে অভিনয় করে আলোচিত হন। সিনেমার জন্য কিশোর বয়সেই এক মিলিয়ন ডলার পারিশ্রমিক পান। তিন বছর পর ‘আফটার আর্থ’ দিয়ে প্রশংসিত হন। পরে অভিনয় করলেও পাশাপাশি গান নিয়ে ব্যস্ত থাকেন। গান লিখতেও থাকেন। র‍্যাপ গানে আলোচিত হন।

ভক্তরা উইল স্মিথের সঙ্গে ‘দ্য পারসুট অব হ্যাপিনেস’ সিনেমায় দেখে ধরে নিয়েছিলেন, হয়তো উইল স্মিথের ছেলে। তাঁদের দেখতেও এক রকম লাগছিল। জমে ছিল জুটিটি। উইল স্মিথের সঙ্গে এই কিশোরও পেয়েছিলেন একাধিক মনোনয়ন। সিনেমাটি অস্কারেও মনোনয়ন পায়। বাবা-ছেলের এই জুটির সত্যটা হচ্ছে, পর্দার বাইরেও তাঁদের সম্পর্ক বাবা-ছেলে।

স্ট্যাইলিশ জাদেন স্মিথ। ছবি: আইএমডিবি

পরে ‘আফটার আর্থ’ সিনেমায় আবার বাবার সঙ্গে অভিনয় করে প্রশংসিত হলেও সিনেমাটি বক্স অফিসে আগের মতো জায়গা ধরে রাখতে পারেনি। সিনেমাটি ব্যর্থ হলে জাদেনের জন্য আরেক দুয়ার অপেক্ষা করে। সিনেমায় অভিনয় থেকে বিরতি নেন। পরে তিনি ভক্তদের সামনে নতুন করে গান নিয়ে হাজির হন। একের পর এক গান রিলিজ দিতে থাকেন। গান লিখতে থাকেন।

২০১৪ সালে জাদেন স্মিথ গানের অ্যালবামের প্রস্তুতি নেন। তিন বছর ধরে সেটা সম্পূর্ণ করেন। সেই অর্থে গানগুলো জনপ্রিয়তা না পেলেও সিনেমায় পাওয়া জনপ্রিয়তা কারণে তাঁর ডাক পড়ে অনেক লাইভ অনুষ্ঠানে। এখন রক ধারার গান নিয়েও তাঁকে ব্যস্ত দেখা যায়। পরবর্তী সময়ে তিনি ফ্যাশন আইকনে পরিণত হন। তাঁর প্রকাশভঙ্গি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে থাকে। বদলে যায় জাদেনের জীবন।

শিশু চরিত্রে জনপ্রিয়তার পর অল্প সময়েই ভক্ত তৈরি হয়ে যায়। অনেকের কৌতূহল জন্মে, উইল স্মিথের ছেলে কার সঙ্গে ডেটিং করছেন। কে তাঁর প্রেমিকা। জাদেনের সঙ্গে কিশোর বয়স থেকে অনেক মেয়ের নাম জড়িয়ে যায়। সেগুলো গণমাধ্যমে প্রকাশ পায়। তাঁর নামের সঙ্গে জড়িয়ে যায় মডেল, গায়িকা, অভিনেত্রীদের নাম। তাঁদের মধ্যে ওডেসা অ্যাডলন, সুফিয়া রিচি, সাব জাদা, টেলরসহ আরও অনেকের নাম আসে। মূলত খ্যাতির কারণেই ব্যক্তিগত জীবন অগোছালো হয়ে যায়।

বান্ধবীদের নিয়ে প্রায়ই সমালোচনায় থাকেন জাদেন স্মিথ। ছবি: ফেসবুক

তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তাঁকে নিয়ে যেমন সমালোচনা হতো, তেমনি আলোচনা হলেও চ্যারিটি কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন উইল স্মিথের ‘ছেলে’। এ ছাড়া তাঁকে ধরা হয় কিশোর তারকাদের মধ্যে ধনী। বর্তমানে তিনি প্রায় এক কোটি ডলারের মালিক। এই আয় তাঁর অভিনয় ও গানের ক্যারিয়ারের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে আসে। এ ছাড়া তিনি পোশাক ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত।

অভিজাত জীবনযাপনের জন্য আলোচনায় জাদেন আসেন। এমনও শোনা গেছে, জুয়ার টেবিলে এক রাতে এক মিলিয়ন ডলারও খুইয়েছেন। এ ছাড়া হোটেল ভাড়া, পার্টি ও নারীদের পেছনে তাঁর খরচ বেশি। বন্ধু-বান্ধবীদের নিয়ে প্রচুর ঘুরতে যান। পোশাক ও স্টাইলের পেছনেও তাঁর খরচ বছরে মিলিয়ন ডলারের বেশি।

স্ট্যাইলিশ জাদেন স্মিথ। ছবি: আইএমডিবি