গত বছরের ২১ অক্টোবর ‘রাস্ট’ ছবির শুটিং সেটে ঘটে যায় অপ্রত্যাশিত এক ঘটনা। যুক্তরাষ্ট্রের নিউ মেক্সিকোতে চলা শুটিংয়ে গোলাগুলির একটি দৃশ্যে ছিলেন অভিনেতা অ্যালেক বল্ডউইন। চিত্রনাট্য অনুযায়ী সবকিছু চলছিল। হঠাৎ ঘটল এক বিপত্তি। বল্ডউইনের হাতে থাকা প্রপসের বন্দুক থেকে বেরিয়ে এল সত্যিকারের বুলেট! সঙ্গে সঙ্গে মারা যান ছবির প্রধান চিত্রগ্রাহক হ্যালিনা হাচিন্স। গুরুতর আহত হন ছবির পরিচালক জোল সুজা। এই ঘটনা নিয়ে স্বভাবতই তোলপাড় হয়েছে পুরো দুনিয়ায়।
শুটিং সেটে শিল্পীর নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে। অনেকেই এ ঘটনায় সরাসরি আঙুল তুলেছেন অভিনেতা বল্ডউইনের দিকে। কিন্তু বারবার অভিনেতা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তিনি সেদিন বন্দুকের ট্রিগারই চাপেননি। তবে পুরো ঘটনা নিয়ে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই যে তদন্ত করেছে, তাতে মিলেছে ভিন্ন কথা। এফবিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবশ্যই সেদিন ট্রিগার চেপেছিলেন বল্ডউইন। গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন গণমাধ্যম এনবিসি।
আগ্নেয়াস্ত্রের ফরেনসিক পরীক্ষা শেষে এফবিআই জানিয়েছে, ট্রিগারে চাপ দেওয়া না হলে কোনোভাবেই গুলি বের হওয়া সম্ভব নয়। তিনি (বল্ডউইন) অবশ্যই ট্রিগারে চাপ দিয়েছিলেন। যে গুলি হালিনা হাচিন্সের বুকে লাগার পর তাঁর মৃত্যু হয়। গত বছরের ডিসেম্বরের মর্মান্তিক ওই ঘটনা নিয়ে প্রথমবারের মতো টিভি সাক্ষাৎকার দিয়েছিলেন বল্ডউইন। এনবিসি নিউজকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে বারবার ট্রিগার চাপার কথা অস্বীকার করেন অভিনেতা। তিনি বলেন, ‘আমি কখনোই ট্রিগার চাপিনি।’
এনবিসি জানিয়েছে, চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহেই ‘রাস্ট’ ছবির শুটিং সেটে দুর্ঘটনার ফরেনসিক তদন্ত শেষ হয়। এরপর প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এফবিআই। অভিনেতা ছাড়াও বল্ডউইন ছিলেন ‘রাস্ট’ ছবির অন্যতম প্রযোজক। দুর্ঘটনার পরই ছবির প্রজেক্টটি বাতিল করা হয়।
৬৪ বছর বয়সী বল্ডউইন খ্যাতিমান মার্কিন অভিনেতা ও প্রযোজক। শৈল্পিক থেকে বাণিজ্যিক ঘরানার ছবিতে সমানতালে অভিনয় করেছেন তিনি। তাঁকে দেখা গেছে উডি অ্যালেন থেকে মার্টিন স্করসেজির সিনেমায়। তাঁর উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে আছে ‘টক রেডিও’, ‘দ্য হান্ট ফর রেড অক্টোবর’, ‘অ্যালিস’, ‘টু রোম উইথ লাভ’, ‘ব্লু জেসমিন’, ‘দ্য অ্যাভিয়েটর’, ‘দ্য ডিপার্টেড’-এর মতো সিনেমায়। এ ছাড়াও বিশ্বজুড়ে জনপ্রিয় ‘মিশন: ইমপসিবল’ সিরিজের কয়েকটি ছবিতেও দেখা গেছে তাঁকে। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে দুটি এমি অ্যাওয়ার্ডস, তিনটি গোল্ডেন গ্লোব অ্যাওয়ার্ড ও সাতটি সেগ অ্যাওয়ার্ডস জিতেছেন বল্ডউইন। এ ছাড়া মনোনয়ন পেয়েছিলেন অস্কারেও।