সেই ১৯৮২ সালের কথা। সে বছর ২২ অক্টোবর বড় পর্দায় এক অসীম সাহসী যোদ্ধার যাত্রা শুরু হয়েছিল। নাম তাঁর জন র্যাম্বো। তাঁর এক একটা যুদ্ধ, অভিযান দেখতে গিয়ে দর্শক যে কতবার দম ফেলতে ভুলে গেছেন, তার ইয়ত্তা নেই। ১২৭ কোটি টাকা খরচ করে বানানো সেই ছবি বক্স অফিসে তুলে এনেছিল প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা! এরই মধ্যে পেরিয়ে গেছে ৩৭ বছর। ২০ সেপ্টেম্বর তাঁকে শেষবারের মতো দেখা যাবে, ‘র্যাম্বো’ ফ্র্যাঞ্চাইজির পঞ্চম আর শেষ কিস্তি, ‘র্যাম্বো: লাস্ট ব্লাড’ ছবিতে।
‘ফার্স্ট ব্লাড’ দিয়ে যাঁর শুরু হয়েছিল, তিনি জীবনের শেষ যুদ্ধে জয়ী হবেন নাকি পরাজিত হয়েও জয় করবেন দর্শকদের হৃদয়, তা জানার মাঝে ফারাক আর মাত্র ১৩ দিনের। তাই সুপারহিরো ছবিগুলোর আপাতত একটু দম নেওয়ার সময়। বড় পর্দায় শেষবারের মতো আসছেন র্যাম্বো। আসছেন র্যাম্বো রূপে সিলভেস্টার স্ট্যালন।
২০১৬ সালেই যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমকে স্ট্যালন জানিয়েছিলেন, আর না। ২০০৮ সালে ‘র্যাম্বো ৪’ দিয়েই নাকি তিনি সন্তুষ্ট। আর এই সিরিজের সিনেমায় দেখা মিলবে না তাঁকে। স্ট্যালনের ভাষায়, কোনো কিছু দিয়ে সন্তুষ্টি এসে গেলে পরবর্তী সময়ে আর সেই ছবি করতে ইচ্ছা করে না।
ইতিমধ্যে ৭৩ বছরের গ্রীষ্ম আর শীত সয়েছে সিলভেস্টার স্ট্যালনের শরীর। এই বয়সে শরীর আর সায় দিচ্ছে না। তাই তখন তিনি বলেছিলেন, ‘মন চাইলেও শরীর যে সায় দেয় না। সে বলে, বাড়িতেই থাকো! নইলে যোদ্ধারা যেমন শেষ একটা যুদ্ধ লড়তে যায় এবং পরাস্ত হয়, তোমার অবস্থাও তেমনটিই হবে!’ কিন্তু তাই বলে রক্তে, মনে, মস্তিষ্কে যাঁর যুদ্ধের নেশা, তাঁকে কী আর দমানো যায়! তাই শেষবারের মতো শরীরে, মনে পরে নিলেন র্যাম্বোর পোশাক।
ডেকান ক্রনিকল থেকে জানা গেছে, কিছুদিন আগেই মুক্তি পেয়েছে ‘র্যাম্বো: লাস্ট ব্লাড’ ছবির ট্রেলার। এক মিনিটের এই ট্রেলার দেখার সময় ভক্ত আর দর্শকেরা ভুলে গেছেন আর সবকিছু। ডুবে গেছেন র্যাম্বোতে। প্রথমেই ফিরে যাওয়া হয়েছে এই ফ্র্যাঞ্চাইজির প্রথম ছবিতে। যেখানে দেখা যায় তরুণ র্যাম্বোর রক্তমাখা মুখ। তারপর সত্তরোর্ধ্ব র্যাম্বোর অব্যর্থ তির। আগুন, ধারালো চাকু, রেসের ঘোড়া, মৃত্যু আরও কত কী! ট্রেলার শেষ হলে সংবিৎ ফিরে পেয়েছেন দর্শকেরা। ইউটিউবে প্রকাশিত ট্রেলারের নিচে হাজার হাজার মন্তব্য জড়ো হয়েছে। প্রায় সবগুলোর অর্থ একই, মুক্তির অপেক্ষায় আর তর সইছে না ভক্তদের।
ডেকান ক্রনিকল আরও জানিয়েছে, চলচ্চিত্রটির শুটিং হয়েছে বুলগেরিয়ায়। এটি পরিচালনা করেছেন আদ্রিয়ান গুরুনবার্গ। যৌথভাবে চিত্রনাট্য করেছেন স্ট্যালন ও গুরুনবার্গ দুজনই। ২০০৮ সালে চতুর্থ কিস্তি করার পর ১০ বছরের ব্যবধানে মুক্তি পাচ্ছে শেষ কিস্তি। এই কিস্তিতে দেখানো হবে আমেরিকার অভিবাসী সমস্যা ও মেক্সিকোর ড্রাগ ব্যবসা।
সিলভেস্টার স্ট্যালনকে সর্বশেষ দেখা গেছে ‘এসকেপ প্ল্যান: দ্য এক্সট্রাক্টর’ ছবিতে। ছবিটি মুক্তি পেয়েছে ২০১৯ সালের ২৭ জুন।