মিস্টার বিন সেজে হোটেল-রেস্টুরেন্টে নাইট শো করেন

ছোটবেলা থেকেই মেধাবী, স্বল্পভাষী, অন্তর্মুখী মানুষটার মন পড়ে থাকত অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ড্রামাটিক সোসাইটিতে। এভাবেই তিনি হয়ে উঠলেন বিশ্বের সর্বকালের সেরা কমেডিয়ানদের একজন। যে মিস্টার বিনের উদ্ভট, বোকা বোকা কর্মকাণ্ড দেখে দর্শক হেসে লুটোপুটি খান, বলছি সেই রোয়ান অ্যাটকিনসনের কথা।

রোয়ান অ্যাটকিনসন

তাঁকে দেখেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কঠিন। তিনি প্রথমে যুক্তরাজ্যের নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে লেখাপড়া করেছেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন দ্য কুইনস কলেজ থেকে একই বিষয়ে পিএইচডি করেছেন। অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে দিয়েছে সম্মানসূচক ফেলো। ছোটবেলা থেকেই মেধাবী, স্বল্পভাষী, অন্তর্মুখী মানুষটার মন পড়ে থাকত অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি ড্রামাটিক সোসাইটিতে। এভাবেই তিনি হয়ে উঠলেন বিশ্বের সর্বকালের সেরা কমেডিয়ানদের একজন। যে মিস্টার বিনের উদ্ভট, বোকা বোকা কর্মকাণ্ড দেখে দর্শক হেসে লুটোপুটি খান, বলছি সেই রোয়ান অ্যাটকিনসনের কথা। সম্প্রতি বিবিসিতে প্রকাশিত এক সাক্ষাৎকারে মানুষটি কথা বলেছেন খ্যাতির বিড়ম্বনা নিয়ে।

মি. বিন ওরফে রোয়ান অ্যাটকিনসন

রোয়ান অ্যাটকিনসন বলেন, ‘সবচেয়ে অদ্ভুত লাগে যখন কেউ আমাকে চিনেছে, কিন্তু বিশ্বাস করতে পারছে না যে আমি তার সামনেই। কেমন অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে থাকে। আমার কী যে অস্বস্তি লাগে। আমি অগ্রাহ্য করার চেষ্টা করি। একবার হয়েছে কী, আমি একটা পানশালায় গেছি; একটা লোক এসে বলল, “আপনি যে একদম মিস্টার বিনের মতো দেখতে।”

সবচেয়ে অদ্ভুত লাগে যখন কেউ আমাকে চিনেছে, কিন্তু বিশ্বাস করতে পারছে না যে আমি তার সামনেই। কেমন অদ্ভুতভাবে তাকিয়ে থাকে। আমার কী যে অস্বস্তি লাগে।

আমি নার্ভাস হাসি হেসে বললাম, আমিই সেই লোক। আমি যতই তাকে বোঝানোর চেষ্টা করি, সে ততই অবিশ্বাস করে! পরে আমাকে বুদ্ধি দিল যে আমি মিস্টার বিন সেজে বিভিন্ন হোটেল-রেস্টুরেন্টে নাইট শো করতে পারি। সরাসরি বলেন, “মিস্টার বিন সেজে হোটেল-রেস্টুরেন্টে নাইট শো করেন, ভালো টাকাপয়সা কামাতে পারবেন।” এমন ঘটনা প্রায়ই ঘটে আমার।’

রোয়ান অ্যাটকিনসন

বাদামি স্যুট আর লাল টাই পরা হ্যাংলা-পাতলা মানুষটির কথা বলায় জড়তা ছিল, তোতলাতেন। তাই সংকোচে জনসমক্ষে কথা বলতে চাইতেন না। বেশি কথা বলা তাঁর পছন্দ নয়। তাই বিশ্বের দর্শকদের সঙ্গে তিনি কথা বলেছেন শরীরী ভাষায়। ৬৫ বছর বয়সী এই সফল অভিনেতা জানান, আশির দশক থেকেই বিশ্ব তাঁকে চিনতে শুরু করল। দ্য ব্ল্যাক অ্যাডার, নট দ্য নাইন ও’ক্লক নিউজ, দ্য সিক্রেট পুলিশম্যানস বল, নেভার সে নেভার অ্যাগেইন, ফোর ওয়েডিংস অ্যান্ড আ ফিউনেরাল, জনি ইংলিশখ্যাত এই তারকা বলেন, ‘আমি অভিনয় ভালোবাসতাম। তবে তারকাখ্যাতি কখনো চাইনি। কিন্তু মিস্টার বিনের পর আমি হারিয়ে গেলাম। যেখানেই যাই, লোকে আমাকে মিস্টার বিন বলে। কিন্তু ওই চরিত্র তো আমি নই। আমি তাই বাইরে বেরোতাম কম। আর এমন সব জায়গায় ঘুরতে যেতাম, যেখানে লোকে আমাকে চিনবে না।’

আমি অভিনয় ভালোবাসতাম। তবে তারকাখ্যাতি কখনো চাইনি। কিন্তু মিস্টার বিনের পর আমি হারিয়ে গেলাম। যেখানেই যাই, লোকে আমাকে মিস্টার বিন বলে। কিন্তু ওই চরিত্র তো আমি নই। আমি তাই বাইরে বেরোতাম কম। আর এমন সব জায়গায় ঘুরতে যেতাম, যেখানে লোকে আমাকে চিনবে না
মিস্টার বিন, অভিনেতা

১৯৫৫ সালের ৬ জানুয়ারি ইংল্যান্ডের ডুরহাম বিভাগের কনসেটে জন্মগ্রহণ করেন মি. বিন। তাঁর পুরো নাম রোয়ান সেবাস্টিয়ান অ্যাটকিনসন হলেও ডাক নাম রো। তাঁর বাবার নাম এরিক অ্যাটকিনসন ও মায়ের নাম এলা মে। তাঁর বাবা এরিক অ্যাটকিনসন একজন কৃষক এবং একটি কোম্পানির পরিচালক ছিলেন। তিন ভাইয়ের মধ্যে সবার ছোট মি. বিন।