ছবি বা ভিডিও অতিরিক্ত ঘষামাজা একদম পছন্দ করেন না টাইটানিক অভিনেত্রী কেট উইন্সলেট। প্রয়োজনে সামান্য এডিট করা যাবে, তবে খুব জরুরি না হলে তিনি স্বাভাবিক ছবি প্রকাশেই আগ্রহী। নায়িকা হয়েছেন বলে অতিরিক্ত এডিট করা ছবি প্রকাশ করতে হবে, এ ধারণার ঘোর বিরোধী তিনি। সম্প্রতি এসব নিয়ে আবারও সোচ্চার হয়ে উঠেছেন কেট।
এইচবিও দেখাচ্ছে কেট অভিনীত টিভি সিরিজ ‘মিয়ার অব ইস্টটাউন।’ সেখানে একজন গোয়েন্দার চরিত্রে দেখা গেছে তাঁকে। সেখানে একটি খুনের তদন্ত করতে গিয়ে বেশ বিপদে পড়ে যান তিনি। সম্প্রতি দ্য নিউইয়র্ক টাইমস–এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে এ সিরিজে দেখানো একটি যৌন দৃশ্য নিয়ে কথা বলেন এ অভিনেত্রী। সহশিল্পী গাই পিয়ার্সের সঙ্গে ওই দৃশ্যে কেটের পেট কিঞ্চিৎ ভারী দেখা গেছে। পরিচালক ক্রেইগ জোবেল প্রস্তাব দেন, দৃশ্যটা একটু এডিট করে দেওয়া যাক? রেগে কেট বলেছিলেন, ‘বেশি হয়ে যাচ্ছে না?’ এমনকি সিরিজটির বিজ্ঞাপনের জন্য পোস্টার করার সময়ও তিনি ছবি তুলতে রাজি হচ্ছিলেন না, কেবল ওই বেশি বেশি সম্পাদনার কারণে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ওরা আমাকে কেবল মনে করিয়ে দিতে চায় যে আমি বুড়িয়ে যাচ্ছি। আমিও বলেছি, জানি আমার চোখের চারপাশের চামড়া কুঁচকে গেছে। সেসব দেখা যায় তো যাক।’ সিরিজের চরিত্র প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি সেখানে একজন মধ্যবয়সী নারীর চরিত্রে অভিনয় করেছি। অক্টোবরে আমার বয়সও ৪৬ হবে। এ কারণেই দর্শক সিরিজটি দেখবে, তারা সত্যিকারের একজন মাঝবয়সী নারীকে সেই চরিত্রে অভিনয় করতে দেখবে, যেখানে তেমন একটা ঘষামাজা করতে হবে না। চরিত্রটি কর্মঠ, সচল যা তার শরীর ও অতীত জীবনের সঙ্গে মানানসই।’
সামাজিক যোগাযোমমাধ্যম ঘষামাজা করা ছবির ভাগাড়! এ প্রসঙ্গে অস্কারজয়ী এই অভিনেত্রী বলেন, ‘সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ছবিগুলো আমাকে উদ্বিগ্ন করে তোলে, কারণ সব কটি মুখই সুন্দর। যে মুখটা বদলে যাচ্ছে, সেটাও সুন্দর। কেবল ফিল্টারিং করা ছবি দেখতে দেখতে আমরা বদলে যাওয়া মুখগুলো ভালোবাসতে ভুলে যাচ্ছি। কারণ, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সবাই নিজের ফটোশপে সম্পাদনা করা ছবি পোস্ট করছেন।’
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ডুবে থাকা প্রজন্মের জন্য আক্ষেপও করেছেন কেট। তিনি বলেছেন, ‘আমি সাধারণত বলি, এই প্রজন্মের জন্য আমার কষ্ট হয়। কারণ, এসব কাণ্ড থামছে না, এতটুকু বদলাচ্ছে বলেও মনে হচ্ছে না। এসব আমাকে কষ্ট দিচ্ছে। কারণ, আমার আশা ছিল তারা বাস্তব জীবনে থেকে বর্তমানটাকে মিস করবে না, অধরা আদর্শের কাছে পৌঁছাতে পারবে।’
এটাই প্রথম নয়। নারীকে যৌন আবেদনময়ী ও ঝকমকে করে উপস্থাপনের বিপক্ষে আগেও সোচ্চার হয়েছিলেন কেট। ২০১৫ সালে কসমেটিক কোম্পানি লরিয়েলের সঙ্গে ছবি সম্পাদনা নিয়ে রীতিমতো ঝগড়াই বেধে গিয়েছিল তাঁর। আরেক কসমেটিক কোম্পানি লঙ্কুমের বিজ্ঞাপনের সময় ‘বাড়তি এডিটিং করা হবে না’ এই শর্তে চুক্তিপত্রে একটি ধারাও যোগ করতে হয়েছিল। সূত্র: গ্লামার ম্যাগাজিন