হিউ জ্যাকম্যান সেই ব্যক্তি যিনি মার্ভেল সিরিজের সব থেকে দীর্ঘকালীন অভিনেতা হিসেবে নাম তুলেছে গিনেচ বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডে। ২০০০ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত এক্স ম্যান সিরিজের এই উলভারিন ভক্তদের হৃদয়ে স্থায়ীভাবে আসন নিয়েছে। 'লা মিজারেবল' ছবির জন্য অস্কারে মনোনয়ন পাওয়া এই অভিনেতা ২০১৩ সালে জিতে নেন সেরা অভিনেতা হিসেবে গোল্ডেন গ্লোব পুরস্কার। তবে হিউ জ্যাকম্যানের শুধু অভিনয়সত্তা নিয়ে কথা বললে তাঁর অন্যান্য শিল্পসত্তাকে অসম্মান করা হবে।
হিউ জ্যাকম্যান একজন অস্ট্রেলিয়ান আন্তর্জাতিক অভিনেতা, সেই সঙ্গে তিনি একজন গায়ক এবং প্রযোজক। সবকিছু ছাপিয়ে তিনি তারকাদের আকাশের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র। কিন্তু এত বড় তারকা যখন ভক্তদের কফি সার্ভ করেন, সেটি তো একটা খবর বটে। আর এই বারিস্তা (রেস্তোরাঁয় চা/কফি পরিবেশন করেন যিনি) হাসিমুখে কেবল ভক্তদের কফিই পরিবেশন করেননি, তাঁদের আবদার মিটিয়ে অটোগ্রাফও দিয়েছেন।
হিউ জ্যাকম্যান যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন শহরে 'দ্য ম্যানে'র ট্যুরে ব্যস্ত সময় পার করছেন। হঠাৎ কী মনে হল, ভক্তদের বিস্মিত করতে শিকাগোতে থেমে কফি বেচলেন। আলোচনায় থাকতে তারকারা যে কতকিছু করেন, সেই তালিকার শুরু থাকলেও শেষ নেই। আর যে যত বড় তারকা তাঁর আলোচনায় থাকার উপলক্ষ্যও ততটাই ব্যতিক্রম। হিউ জ্যাকম্যান এবং তাঁর বন্ধু ডেভিড স্টেইনগার্ড লাফিং ম্যান কফি কোম্পানির প্রতিষ্ঠাতা। আর লাফিং ম্যানের লোগো যুক্ত কালো গাড়িতে হিউ জ্যাকম্যান ভক্তদের কফি পরিবেশন করলেন।
ছবিতে দেখা যায়, গাড়ির সামনে অটোগ্রাফের খাতা, কফির কাপ আর ক্যামেরা নিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়েছেন ভক্তরা। আর কালো টি শার্ট গায়ে চাপিয়ে চোখে কালো সানগ্লাস লাগিয়ে ভক্তদের গরম কফি আর অটোগ্রাফ দিচ্ছেন হিউ জ্যাকম্যান। শুক্রবারে হিউ জ্যাকম্যান নিজের ইন্সটাগ্রামে সেই ছবি শেয়ার করেছেন। ক্যাপশনে লিখেছেন, 'শিকাগোকে ভালোবাসা। লাফিং ম্যান ক্যাফেকে ভালোবাসার জন্য সবাইকে ধন্যবাদ।'
এর আগেও ২০১৮ সালের মে তে লাফিং ম্যান কফি হেসেছে আরেক কানাডিয়ান অভিনেতা, কমেডিয়ান, প্রযোজক ও চিত্রনাট্যকার রায়ান রেনল্ডকে দেখে। তাঁকেও নাকি বারিস্তার চাকরির জন্য ভাড়া করে আনা হয়েছিলো। সেবারও ইনস্টাগ্রামে সেই ছবি শেয়ার করে হিউ জ্যাকম্যান লিখেছিলেন, 'পৃথিবীকে জানাচ্ছি, লাফিং ম্যান কফির একজন নতুন বারিস্তা দরকার ছিল, আর তিনিই রায়ান রেনল্ড!'
২০০৯ সালে হিউ জ্যাকম্যান ইথিওপিয়ায় গিয়ে একজন কফির চাষীর সাক্ষাৎ পান। তাঁর নাম ছিলো ডুকালে, আর তাঁর স্বপ্ন ছিলো কফি চাষ করে দরিদ্রতাকে জয় করা। তাঁর সেই সহজ, সাধারণ স্বপ্নে উদ্দীপ্ত হন বড় পর্দার উলভারিন। নিউইয়র্কে ফিরে এসে ২০১১ সালে 'লাফিং ম্যান কফি' ফাউন্ডেশন গড়েন। যেখানে পৃথিবীর উন্নয়নশীল দেশের দরিদ্র চাষীরাই কেবল তাঁদের পণ্য বিক্রি করতে পারবেন যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে।
আর এই ফাউন্ডেশনের প্রথম কৃষিপণ্য হল কফি। আর যেই কৃষক সেই কফি বিক্রি করে স্বচ্ছলতা মুখ দেখেছিলেন, স্বপ্ন পূরণ করেছিলেন তাঁর নাম... হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন, তাঁর নাম ডুকালে।